ডিজিটাল স্ক্যানের পর ২৩০০ বছর পূর্বে মমি করা এক কিশোরের বিস্তারিত জানতে পেরেছেন গবেষকরা। কায়রো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক দলের বিশ্বাস, এই কিশোর ধনী এবং মিশরের বাইরের ছিলেন। রেডিওলজির প্রফেসর সাহার সালিমের নেতৃত্বে বিজ্ঞানীদের একটি দল ওই মমিটি নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছিলেন। এই কিশোরের পরিবার ধনী এবং সমাজের উচ্চ স্তরের মানুষ ছিলেন বলে মনে করেন তারা। কারণ, তার মমিতে ৪৯টি দামি এমুলেটস পাওয়া গেছে। সালিম জানিয়েছেন, এর অনেকগুলো সোনা দিয়ে তৈরি। এগুলোর উদ্দেশ্য ছিল মরদেহটিকে রক্ষা করা এবং পরকালে জীবনীশক্তি বৃদ্ধি করা।
গার্ডিয়ানের রিপোর্টে বলা হয়েছে, ওই মমিটিকে ‘গোল্ডেন বয়’ নাম দিয়েছে গবেষক দলটি। ১৯১৬ সালে প্রথম মমিটি আবিষ্কৃত হয়। মিশরের দক্ষিণাঞ্চলীয় নাগ এল-হাসে নামক স্থানে প্রাচীন এক সমাধিক্ষেত্রে মমিটি পাওয়া যায়। খ্রিস্টের জন্মের ৩৩২ বছর আগে থেকে এই সমাধিক্ষেত্রটি ব্যবহৃত হচ্ছে।
১০৭ বছর আগে পাওয়া গেলেও এতদিন এই মমিটি অপরীক্ষিত ছিল। রাখা হয়েছিল কায়রো জাদুঘরের বেজমেন্টে।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, মমিটির জিহ্বা ছিল সোনার তৈরি এবং হৃদয়টিও বানানো হয়েছিল সোনা দিয়ে। মমির বাক্সটি না খুলেই এই পরীক্ষা চালাতে হয়েছিল তাদের। এ জন্য সালিম ও তার দল সিটি স্ক্যান প্রযুক্তি ব্যবহার করেন। গবেষণায় অনুমান করা হয়েছে যে, ছেলেটির বয়স ১৪ থেকে ১৫ বছর হবে। তার কঙ্কালের হাড়ের ফিউশন এবং তার মুখে আক্কেল দাঁতের অনুপস্থিতির উপর ভিত্তি করে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, কিশোরটি মিশরীয় নাও হতে পারে। মিশরীয় নন এমন মানুষদের মমি খুব বেশি পাওয়া যায়নি। গবেষণার বিষয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে কায়রোর আমেরিকান ইউনিভার্সিটির ইজিপ্টোলজির প্রধান অধ্যাপক সালিমা ইকরাম বলেছেন, এই কিশোরের খৎনা হয়নি। মিশরীয় হলে ১৩ বছরের মধ্যেই এটি হওয়ার কথা ছিল। এ থেকেই ধারণা করা হচ্ছে, কিশোরটি মিশরের বাইরের কোনো অঞ্চলের।
ইকরাম আরও বলেন, অনেক জাতিই সে সময় মিশরীয়দের মতো করে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া শুরু করেছিল। পারস্যের মানুষও এভাবে মমি করতো। ফলে এই কিশোর যেকোনো জায়গা থেকেই আসতে পারে। তিনি এশিয়া মাইনর থেকে নুবিয়ান, গ্রীক, পার্সিয়ান হতে পারে। আমরা শুধু নিশ্চিত করে বলতে পারি যে, সে ইহুদী ছিল না।