শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া উপজেলায় ১৩টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পুরাতন ভবনের নিলামের কাজ আওয়ামী লীগ নেতারা ভাগ-বাটোয়ারা করে নিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে সরকারের লাখ লাখ টাকা রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে।
তবে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বলছেন, আমরা নিয়ম মেনেই সবকিছু করেছি, পরে কী হয়েছে তা জানি না। বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন নড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।
নড়িয়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শাহ মো. ইকবাল মুনসুর ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নড়িয়া উপজেলার ২০নং পাচক, দিনারা হাট, বাজনপাড়া নিখিল, যোগপট্টা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ ১৩টি বিদ্যালয়ের পরিত্যক্ত ভবন (পাকা/আধাপাকা/টিনের ঘর) নিলাম বিক্রয়ের দরপত্র আহবান করা হয়।
শর্তসাপেক্ষে যে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান তাতে অংশগ্রহণ করতে পারবে। বুধবার নড়িয়া উপজেলা হলরুমে সকালে নিলাম অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে ৪৩ জন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করে। তাদের নামমাত্র দেখিয়ে অংশগ্রহণকারী প্রত্যেককে ৫ হাজার টাকা করে জোরপূর্বক বিটমানি দিয়ে বিদায় করে দেওয়া হয়।
তাদের বিদায় করে দিয়ে নড়িয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম চুন্নু, নড়িয়া পৌরসভা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিলন বন্দুকসি, সাত্তার আরিফ, আলমগীর হোসেন, ইউনুস শেখ, মোকলেস শেখসহ মোট ৬ জন সেগুলো ভাগ-বাটোয়ারা করে নেন।
১৩টি স্কুল ভবনের মধ্যে সিরাজুল ইসলাম চুন্নু ৩টি, মিলন বন্দুকসি ৪টিসহ আওয়ামী লীগের ৬ নেতা ভাগ-বাটোয়ারা করে নিয়ে যান। এতে অংশগ্রহণকারী সাধারণ ঠিকদারদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ঠিকাদার বলেন, আমরা কাজ পাওয়ার জন্য নিলামে অংশগ্রহণ করেছিলাম। নড়িয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম চুন্নু, নড়িয়া পৌরসভা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিলন বন্দুকসিসহ আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতাদের কারণে আমরা সেখান থেকে চলে আসি। তবে আমাদের ৫ হাজার টাকা করে জোরপূর্বক বিট মানি দেওয়া হয়েছে।
নড়িয়া পৌরসভা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিলন বন্ধুকসি বলেন, সবার সঙ্গে আলোচনা করেই কাজগুলো বণ্টন করা হয়েছে।
নড়িয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক চুন্নু বলেন, যারা অংশগ্রহণ করেছেন তাদের সবাইকে ৫ হাজার টাকা করে বিট মানি দেওয়া হয়েছে। এর বেশি কিছু না। আর সব নিয়মমতো কাজ হয়েছে।
নড়িয়া উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিলাম কমিটির আহবায়ক ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সদস্য সচিব- উনারা বলতে পারবেন; আমি কিছু বলতে পারব না।
নড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ রাশেদুজ্জামান বলেন, নিলামের নিয়ম মেনেই উপজেলা হল রুমে নিলামের কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। তারপরও অভিযোগ পেলে বিষয়টি খতিয়ে দেখব।