Friday, March 24, 2023
spot_img
Homeধর্মহালাল উপার্জনের পথ বন্ধ হয়ে যায় যেভাবে

হালাল উপার্জনের পথ বন্ধ হয়ে যায় যেভাবে

জীবন চলার পথে রিজিকের অপরিহার্যতা অনস্বীকার্য। রিজিক ছাড়া জীবন অচল। সে জন্য আল্লাহ তাআলা বান্দাকে সৃষ্টি করে ছেড়ে দেননি। সব প্রাণীর স্বাভাবিক চাহিদা অনুযায়ী তাদের খাদ্য ও জীবিকার ব্যবস্থা করা আল্লাহ তাআলা নিজের দায়িত্বে রেখেছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘জমিনে বিচরণকারী যত প্রাণী আছে, সবার রিজিকের দায়িত্ব আল্লাহর ওপর (আল্লাহ স্বীয় অনুগ্রহে তাদের রিজিক নিজের দায়িত্বে রেখেছেন)। এবং তিনি জানেন তাদের অবস্থানস্থল ও তাদের সমর্পণস্থল (যেথায় তারা সমর্পিত হয়) সব কিছু সুস্পষ্ট কিতাবে বিদ্যমান আছে।’ (সুরা : হুদ, আয়াত : ৬)

রিজিক অন্বেষণের মাধ্যম হিসেবে, বান্দার কর্তব্য হারাম পথে ছেড়ে বৈধ ও নৈতিক পন্থায় রিজিক অন্বেষণ করা। বৈধ-অবৈধ, কোনো ধরনের বাচবিচার না করে সম্পদের জন্য লালায়িত না থাকা। কারণ কোনো মানুষ নির্ধারিত রিজিক ভোগ করার আগে মৃত্যু আসবে না। জাবির বিন আবদুল্লাহ (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, হে লোকসকল, তোমরা আল্লাহকে ভয় কোরো এবং উত্তম পন্থায় জীবিকা অন্বেষণ কোরো। কেননা কোনো ব্যক্তিই তার জন্য নির্ধারিত রিজিক পূর্ণরূপে না পাওয়া পর্যন্ত মরবে না, যদিও তার রিজিক প্রাপ্তিতে কিছু বিলম্ব হয়। …(ইবনে মাজাহ, হাদিস : ২১৪৪)

আর কেউ যদি বৈধ পথ ছেড়ে অবৈধ পথে রিজিক অন্বেষণে লিপ্ত হয়, তাহলে আল্লাহ তাআলা তার জন্য হালাল রিজিকের দরজা বন্ধ করে দেন। তার ভাগ্যে তখন আর হালাল জিনিস জোটে না। এবং সে এই হারাম উপার্জানে সন্তুষ্ট থাকে।

একবার আলী (রা.) কুফা নগরীর মসজিদে প্রবেশ করেন। তখন তিনি মসজিদের দরজায় দাঁড়িয়ে থাকা এক বালককে তার বাহন দেখাশোনার দায়িত্ব দেন। আর তিনি মসজিদে নামাজ আদায় করেন। নামাজ আদায়ের পর তিনি ওই বালককে প্রতিদানস্বরূপ দুই দিরহাম দেওয়ার ইচ্ছা করেন। কেননা, সে এতক্ষণ যাবৎ তার বাহন দেখাশোনার দায়িত্ব পালন করেছে। তিনি মসজিদ থেকে বের হয়ে দেখলেন, বালকটি সেই বাহনের লাগাম নিয়ে পালিয়ে গেছে। আর বাহনটি একাই দাঁড়িয়ে আছে। অতঃপর তিনি সেই বাহনে চড়ে চলে গেলেন। এরপর তিনি তাঁর গোলামকে দুই দিরহাম দিয়ে বললেন বাজার থেকে একটি লাগাম নিয়ে আসার জন্য। গোলাম বাজারে গিয়ে দেখলেন, ওই চোর (বালক) দুই দিরহামে সেই লাগাম বিক্রি করছে। গোলাম সেই লাগাম নিয়ে আলী (রা.)-এর দরবারে হাজির হলেন। এটা দেখে আলী (রা.) (বিস্মিত হয়ে) বলেন, ‘আমি তাকে বৈধ পন্থায় দুই দিরহাম দিতে চেয়েছি; কিন্তু সে হারাম পন্থায় তা অর্জন করল। বান্দা ধৈর্য না ধরার কারণে নিজেই বৈধ রিজিক থেকে বঞ্চিত হয়।’ (আল-মুসতাতরাফ, ৮১)

এ জন্য বান্দার কর্তব্য হচ্ছে, হারাম পন্থা বর্জন করে হালাল পথ গ্রহণ করা। আপনার ভাগ্যে যে রিজিক লেখা আছে তা অবশ্যই আপনার কাছে আসবে। তাই আপনি যদি হারাম পথ ছেড়ে দেন, তাহলে পুনরায় আল্লাহ তাআলা হালাল দরজা খুলে দেবেন। শুধু প্রয়োজন একটু ইচ্ছা, একটু সংকল্প।

আল্লাহ তাআলা আমাদের হালালভাবে রিজিক অন্বেষণ করার তাওফিক দান করুন।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments