Saturday, April 20, 2024
spot_img
Homeআন্তর্জাতিকহত্যাযজ্ঞ চালানোর আহ্বান নিয়ে হরিদ্বারে হিন্দু-মুসলিম উত্তেজনা

হত্যাযজ্ঞ চালানোর আহ্বান নিয়ে হরিদ্বারে হিন্দু-মুসলিম উত্তেজনা

ভারতের হরিদ্বারে হিন্দু-মুসলিমদের মধ্যে উত্তেজনা অব্যাহত রয়েছে। কিন্তু বেশকিছু ভিডিও নিয়ে সেই উত্তেজনা আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। ওইসব ভিডিওতে হিন্দু নেতারা মুসলিমদের বিরুদ্ধে গণহত্যার আহ্বান জানাচ্ছেন। এ ঘটনায় মুসলিমদের মধ্যে ক্ষোভ তীব্র হয়ে উঠেছে। তারা এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন। করা হয়েছে মামলা। এর প্রেক্ষিতে শুক্রবার ভারতীয় পুলিশ বলেছে, গত সপ্তাহে উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্য উত্তরাখ-ের হরিদ্বারে সৃষ্ট ঘটনার ঘৃণাপ্রসূত বক্তব্যের বিষয়ে তদন্ত করছে। ওই বক্তব্যে মুসলিমদের বিরুদ্ধে গণহত্যা চালাতে এবং অস্ত্রের ব্যবহার করার আহ্বান জানানো হয়।এ খবর দিয়েছে অনলাইন আল জাজিরা।

জমায়েতের ভিতর থেকে একজনকে বলতে শোনা যায়, মুসলিমদেরকে হত্যা করে জেলে যাওয়া নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়া উচিত নয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে একজন নারীকে এমন বক্তব্য দিতে শোনা যায়। তিনি বলেন, যদি আমাদের ভিতর থেকে মাত্র একশত মানুষ সেনায় পরিণত হন এবং তাদের ২০ লাখকে হত্যা করেন, তাহলে আমরাই বিজয়ী হবো। যদি আপনারা এই মানসিকতার পক্ষে অবস্থান করেন, তাহলে আপনি সনাতন ধর্ম রক্ষায় সক্ষম হবেন।

উল্লেখ্য, ওই জমায়েতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ভারতীয় জনতা পার্টি বিজেপির কমপক্ষে একজন সদস্য উপস্থিত ছিলেন। এই দলটির বিরুদ্ধে মুসলিম এবং অন্য সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে নিপীড়ন উৎসাহিত করার অভিযোগ আছে। তবে এসব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে বিজেপি।
ওই ভিডিওর জবাব দিয়েছেন সুপরিচিত মুসলিম এমপি আসাদুদ্দিন ওয়াইসি। তিনি এ নিয়ে টুইটে বলেছেন, ভিডিওর ওই জ্বালাময়ী বক্তব্য সুস্পষ্টত গণহত্যাকে উসকে দেয়। তবে এ ইস্যুতে মোদির সরকার কোনো মন্তব্য করেনি।

উল্লেখ্য, ওই ভিডিওতে ওই নারীকে আরো বলতে শোনা যায়, ভারতীয়দের উচিত নাথুরাম গডসের জন্য প্রার্থনা করা। ১৯৪৮ সালে ভারতের স্বাধীনতার আইকন মহাত্মা গান্ধীকে হত্যা করেছিল হিন্দুত্ববাদী কট্টরপন্থি এই নাথুরাম গডসে।

ওই ভিডিওতে আরো একজন প্রতিনিধিকে দেখা যায়। তিনি হলেন প্রবোধ আনন্দ গিরি। তিনি একটি হিন্দু গ্রুপের প্রধান। বিজেপির সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে মাঝে মাঝেই ছবিতে তাকে দেখা যায়। তিনি ‘জাতিনিধনের’ আহ্বান জানান এবং যারা মরতে এবং মারতে প্রস্তুত তাদেরকে প্রস্তুত হওয়ার আহ্বান জানান। তাকে বলতে শোনা যায়, মিয়ানমারের মতো পুলিশ, রাজনীতিক, সেনাবাহিনী এবং ভারতের সব হিন্দুকে হাতে অস্ত্র তুলে নিতে হবে এবং এই জাতিনিধন করতে হবে। এর বাইরে আর কোনো বিকল্প নেই।

তৃতীয় একজন বক্তাকে বলতে শোনা যায়, তিনি নরেন্দ্র মোদির পূর্বসূরি অর্থাৎ প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের মনমোহন সিংকে হত্যার আশা করেন। মনমোহন সিং ছিলেন ভারতের ইতিহাসে প্রথম কোনো শিখ প্রধানমন্ত্রী। আরেকজন বলেন, তার রাজ্যের হোটেলগুলোকে বলে দিয়েছেন বড়দিন উদযাপন করতে দেয়া না হয় যেন। তার এ বক্তব্যকে উল্লাসের সঙ্গে গ্রহণ করেন দর্শকরা।

উত্তরাখ-ের পুলিশ প্রধান অশোক কুমার বলেছেন, তিনি এমন কোনো ঘটনা বরদাস্ত করবেন না। ভারতীয় আইনের একটি ধারার অধীনে এ বিষয়ে মামলা নিবন্ধিত হয়েছে। এই আইনের অধীনে ধর্মীয় ক্ষেত্রে বিভিন্ন গ্রুপের মধ্যে শত্রুতাকে নিষেধ করা হয়েছে। এ অপরাধে কেউ অভিযুক্ত হলে তাকে তিন বছর পর্যন্ত জেল দেয়ার বিধান আছে। অশোক কুমার বলেন, আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ গঠন হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই মামলা নেয়া হয়েছে। এতে মাত্র একজন ব্যক্তির নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তিনি মুসলিম থেকে ধর্মান্তরিত হয়ে হিন্দু হয়েছেন। অন্যদের নাম উল্লেখ করা হয়নি।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments