হজ প্রতিটি মুসলমানের পরম কাঙ্ক্ষিত ইবাদত। সামর্থ্যবানদের জন্য হজ পালন আবশ্যক। হজে শুধু মুমিনের আখেরাতের উপকারিতাই লাভ হয় না; বরং তাতে রয়েছে দুনিয়ারও বড় অর্জন। দুনিয়া-আখেরাতে হজের কয়েকটি বিশেষ উপকারিতা তুলে ধরা হলো-
এক. হজ মুমিনকে নিষ্পাপ করে দেয়
হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, আবু হুরায়রা রা: বলেন, রাসূল সা: বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর জন্য হজ করেছে, যার মধ্যে সে অশ্লীল কথা বলেনি বা অশ্লীল কার্য করেনি, সে হজ থেকে ফিরবে সেদিনের মতো (নিষ্পাপ অবস্থায়) যেদিন তার মা তাকে প্রসব করেছিলেন।’ (বুখারি, হাদিস : ১৫২১)
দুই. হজের প্রতিদান কেবলই জান্নাত
হজরত আবু হুরায়রা রা: থেকে বর্ণিত, রাসূল সা: বলেছেন, ‘এক ওমরাহ অপর ওমরাহ পর্যন্ত সময়ের (সগিরা গুনাহের) কাফফারাস্বরূপ। আর জান্নাতই হলো হজে মাবরুর বা কবুল হজের একমাত্র প্রতিদান।’ (বুখারি, হাদিস : ১৭৭৩)
তিন. হজ-ওমরাহ পালনকারীর দোয়া কবুল হয়
হজরত জাবির রা: বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সা: বলেছেন, ‘হজ ও ওমরাহকারীরা আল্লাহর প্রতিনিধি দল। তারা দোয়া করলে তাদের দোয়া কবুল করা হয় এবং তারা কিছু চাইলে তাদের তা দেওয়া হয়।’ (মুসনাদে বাযযার, হাদিস : ১১৫৩)
চার. হাজির সাথে তালবিয়া পাঠ করে সব বস্তু
হজরত সাহল ইবনু সা’দ রা: বলেন, রাসুলুল্লাহ সা: বলেছেন, ‘যখন কোনো মুসলিম তালবিয়া পাঠ করে, তখন তার ডানে ও বাঁয়ে পাথর, বৃক্ষরাজি, মাটি সব কিছুই তার সাথে তালবিয়া পাঠ করে; এমনকি পৃথিবীর এ প্রান্ত থেকে ওই প্রান্ত পর্যন্ত (তালবিয়া পাঠকারীদের দ্বারা) পূর্ণ হয়ে যায়। ’ (তিরমিজি, হাদিস : ৮২৮)
পাঁচ. হজ খরচের সাওয়াব সাত শ’ গুণ
হজরত বুরাইদা রা: থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সা: ইরশাদ করেছেন, ‘হজের জন্য খরচ করা আল্লাহর রাস্তায় খরচ করার মতোই, যার সওয়াব সাত শ’ গুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়।’ (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ২৩০০০)
ছয়. হজ দরিদ্রতা দূর করে
হজরত আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ রা: বলেন, রাসূল সা: বলেছেন, ‘তোমরা হজ ও ওমরাহর মধ্যে ধারাবাহিকতা বজায় রাখো (অর্থাৎ সাথে সাথে করো)। কেননা এ দুটি মুমিনের দরিদ্রতা ও গোনাহগুলো দূর করে দেয়, যেমন (কামারের আগুনের) হাপর লোহা, স্বর্ণ ও রৌপ্যের ময়লা দূর করে দেয়। আর কবুল হজের প্রতিদান জান্নাত ছাড়া কিছুই নয়।’ (তিরমিজি, হাদিস : ৮১০)
সাত. হাজিরা আল্লাহর মেহমান
হজরত আবু হুরায়রা রা: বলেন, হজরত রাসূল সা: বলেছেন, ‘আল্লাহর মেহমান হলো তিনটি দল—আল্লাহর রাস্তায় যুদ্ধকারী, হজকারী ও ওমরাহকারী। ’ (নাসায়ি, হাদিস : ২৬২৫)
আট. অন্যতম শ্রেষ্ঠ আমল হজ
হজরত আবু হুরায়রা রা: থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূল সা:-কে জিজ্ঞাসা করা হলো, কোন আমলটি সর্বোত্তম? তিনি বললেন, ‘শ্রেষ্ঠ আমল হলো আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের ওপর ঈমান আনা। বলা হলো, তারপর কী? তিনি বললেন, আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করা। জিজ্ঞাসা করা হলো, তারপর কী? তিনি বললেন, কবুল হজ।’ (বুখারি, হাদিস : ১৫১৯)