নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। আজ সোমবার রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে তিনি তার মেডিকেল বোর্ডের সুপারিশক্রমে কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বাসায় ফিরে আসেন।
আজ বিকেল ৪টায় খালেদা জিয়া তার গুলশানের বাসভবন ফিরোজা থেকে হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা হন। সন্ধ্যায় সোয়া সাতটায় পরীক্ষা শেষে তিনি আবার বাসায় চলে আসেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ভাইস চেয়ারম্যান এজেডএম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, চেয়ারপারসন বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, সাবেক এমপি মশিউর রহমান, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্যসচিব আমিনুল হক, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, সিনিয়র সহসভাপতি মামুন হাসান, সাধারণ সম্পাদক মোনায়েম মুন্না, এস এম জাহাঙ্গীর প্রমুখ।
খালেদা জিয়ার পরীক্ষা-নিরীক্ষার বিষয়ে বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম জানান, বেশ কয়েকদিন ধরে ম্যাডামের (খালেদা জিয়া) পায়ে পানি জমেছিল। এ ছাড়া অনেকদিন হয়েছে স্বাস্থ্য পরীক্ষা হচ্ছিল না। তাই মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাকে হাসপাতালে এনে বেশ কিছু পরীক্ষা করা হয়।
তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে যেসব রিপোর্ট পাওয়া গেছে তা সন্তোষজনক। আরও কিছু রিপোর্ট পরে পাওয়া যাবে। এসব রিপোর্ট পর্যালোচনা করে মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকরা পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেন।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এভারকেয়ার হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে একটি মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধায়নে চিকিৎসা নিচ্ছেন। সর্বশেষ গত ১১ জুন এভারকেয়ার হাসপাতালে খালেদা জিয়ার হৃদ্পিণ্ডের ব্লক অপসারণ করে একটি ‘স্টেন্ট’ বসানো হয়েছিল। ২০১৮ সালের ফেরুয়ারি মাসে দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়ের করা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাজা হলে কারাগারে যেতে হয় সাবেক প্রধানন্ত্রী খালেদা জিয়াকে। পরে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলাতেও তার সাজার রায় আসে।
দেশে করোনাভাইরাস মহামারি শুরুর পর খালেদা জিয়ার পরিবারের আবেদনে ২০২০ সালে ২৫ মার্চ তাকে নির্বাহী আদেশে সাময়িক মুক্তি দেয় সরকার। শর্ত দেওয়া হয়, তাকে দেশেই থাকতে হবে। কারাগার থেকে বেরিয়ে খালেদা জিয়া গুলশানের বাসা ফিরোজায় ওঠেন, এখনো তিনি সেখানেই থাকছেন।
২০২১ সালে এপ্রিলে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর অসুস্থতার কারণে খালেদা জিয়া ছয় দফায় ঢাকার বসুন্ধরায় এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিতে হয়েছে। ৭৮ বছর বয়সী খালেদা জিয়া বহু বছর ধরে হৃদ্পিণ্ডের রক্তনালীতে ব্লক, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন।
গত বছর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর খালেদা জিয়ার ‘পরিপাকতন্ত্রে’ রক্তক্ষরণ এবং লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হওয়ার কথাও জানান চিকিৎসকরা। নানা জটিলতার উন্নত চিকিৎসার দাবি করে তাকে বিদেশে পাঠানোর জন্য কয়েক দফা আবেদন করেছিলেন তার পরিবার। কিন্তু সাময়িক মুক্তির শর্তে বিষয়টি উল্লেখ করে প্রতিবারই তা নাকচ করেছে সরকার।