Friday, September 22, 2023
spot_img
Homeনির্বাচিত কলামস্বাগত ২০২৩, নতুন উদ্যমে চলার বছর হোক

স্বাগত ২০২৩, নতুন উদ্যমে চলার বছর হোক

আজ ২০২৩ সালের প্রথম দিন। অসীমের পানে মহাকালের যে যাত্রা, সেখানে সূচিত হলো আরেকটি মাইলফলক। এই যে মহাকালের যাত্রা, সেখানে একেকটি বছর আসে নতুন উদ্দীপনা ও প্রেরণা নিয়ে। আমরা মুছে ফেলি গত হয়ে যাওয়া বছরের গ্লানি, উৎসাহ খুঁজে পাই সুখকর ঘটনাগুলো থেকে; তারপর এগিয়ে যাই অগ্রগতির দিকে।

কেমন কেটেছে আমাদের বিদায়ি বছরটি? ২০২২ সাল ছিল রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক, শিক্ষাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে একটি ঘটনাবহুল বছর। ব্যক্তি, জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে নানা চ্যালেঞ্জ ও উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে এগিয়ে গেছে বছরটি। আমাদের জাতীয় জীবনে ২০২২ সালে একাধিক বড় অর্জন রয়েছে। নানা ষড়যন্ত্র পেরিয়ে দেশীয় অর্থায়নে নির্মিত হয়েছে স্বপ্নের পদ্মা সেতু। বাংলাদেশের সক্ষমতার প্রকাশ এই সেতু। কর্ণফুলী টানেলের উদ্বোধনও হয়েছে বিদায়ি বছরে। আরেকটি স্বপ্ন পূরণ হয়েছে বছরের শেষদিকে এসে-দেশের প্রথম মেট্রোরেলের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

করোনার আঘাত পেরিয়ে ২০২২ সালে বিশ্বজুড়ে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে এলেও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ গোটা বিশ্বকে এক সংকটের মধ্যে ফেলেছে। এর প্রভাবে জ্বালানি সংকট ও নজিরবিহীন ডলার সংকটে পড়ে দেশ। মূল্যস্ফীতি ঘটেছে ব্যাপকভাবে। বছরের মাঝামাঝি সময়ে গ্যাস-বিদ্যুতের সংকট প্রকট হয়ে ওঠে। বিপাকে পড়ে শিল্প খাত। তবে নানামুখী চ্যালেঞ্জের মধ্যেও পণ্য রপ্তানিতে ৩৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে গত বছর। সেই সুবাদে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানি ৫ হাজার কোটি ডলার বা ৫০ বিলিয়নের মাইলফলক স্পর্শ করেছে।

বিদায়ি বছরটি ছিল এক কথায় প্রিয়জন হারানোর বছর। অনেক বিশিষ্টজনকে হারিয়েছি আমরা। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য-বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদ, আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী, সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, আবুল মাল আব্দুল মুহিত, তোয়াব খান, ড. আকবর আলি খান, গাজী মাজহারুল আনোয়ার, শর্মিলী আহমেদ ও কাজী আনোয়ার হোসেন। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ, ফুটবল কিংবদন্তি পেলে, লতা মঙ্গেশকর, সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় ও বাপ্পি লাহিড়ী। এছাড়াও আমরা হারিয়েছি আরও অনেক বিশিষ্টজনকে। তাদের সবার প্রতি রইল আমাদের অশেষ শ্রদ্ধা। বিদায়ি বছরে দেশে অনেক দুর্যোগ-দুর্ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে সিলেটের বন্যা, করতোয়ায় নৌকাডুবি, সীতাকুণ্ডের ডিপোতে বিস্ফোরণ অন্যতম। দুর্যোগে প্রাণহানি ও ফসলের ক্ষয়ক্ষতি এড়ানো বা সর্বনিম্ন পর্যায়ে রাখা সম্ভব হয়েছিল। তবে গাফিলতি আর অবহেলা অনেক ক্ষেত্রে আমাদের অর্জন ম্লান করে দিচ্ছে, এতে কোনো সন্দেহ নেই।

এ বছর মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কাতারে বসেছিল ফিফা ফুটবল বিশ্বকাপের ২২তম আসর। প্রথমবারের মতো একটি মুসলিমপ্রধান দেশে অনুষ্ঠিত এ আসরে ৩৬ বছর পর চ্যাম্পিয়ন হয়েছে আর্জেন্টিনা। ফুটবলে এ বছর আমাদের অর্জনও অসামান্য। নারী সাফ ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ। আমরা বিশ্বাস করি, মানুষের কর্মস্পৃহা ও উদ্ভাবনী শক্তির কাছে অচিরেই হার মানবে সব ধরনের প্রতিকূলতা। পৃথিবীতে আবার ফিরে আসবে শান্তি। জনগণ, সরকার, রাজনৈতিক দল এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা নতুন বছরটিকে শান্তি-সমৃদ্ধিময় ও তাৎপর্যপূর্ণ করে তুলবেন। সবাইকে নতুন বছরের শুভেচ্ছা।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments