যুক্তরাষ্ট্রের টেনেসি অঙ্গরাজ্যের ন্যাশভিলের একটি স্কুলে নৃশংসা বন্দুক হামলায় তিন শিশুসহ ৬ জন নিহত হয়েছে। সোমবারের ওই হামলাটি চালায় নিজেকে ট্রান্সজেন্ডার হিসেবে পরিচয় দেয়া অড্রে হেল। পুলিশ জানিয়েছে, শিশুদের স্কুলটিতে হামলার জন্য আগে থেকেই প্রস্তুতি নিচ্ছিলো অড্রে। সে হামলার আগে বৈধভাবে সাতটি বন্দুকও কেনে। এরপর তা লুকিয়ে রাখে বাড়িতে। এ খবর দিয়েছে বিবিসি।
তদন্তকারীরা বলছেন, হামলাকারী অড্রের বাবা-মা মনে করতেন যে, তাদের সন্তান বন্দুক কেনার মতো মানসিক অবস্থায় নেই। তাই ২৮ বছরের অড্রে বন্দুক কিনে বাড়িতে লুকিয়ে রাখে এবং হামলার পরিকল্পনা সাঁজাতে থাকে। তার বাবা-মা এই পরিকল্পনা এবং বন্দুক কেনার বিষয়ে কিছুই জানতেন না। অড্রে হেল বহু আগেই নিজেকে ট্রান্সজেন্ডার হিসেবে ঘোষণা দিয়েছিল। পুলিশ জানিয়েছে, হামলাকারী অড্রে ‘মানসিক ব্যাধির জন্য ডাক্তারের তত্ত্বাবধানে ছিল’।
তবে টেনেসিতে এমন কোন আইন ছিল না যা একজন সম্ভাব্য হামলাকারীর থেকে বন্দুক বাজেয়াপ্ত করার অনুমতি দেয়।
তার হামলায় নিহত শিক্ষার্থীরা হচ্ছে ইভলিন ডিকহাউস, হ্যালি স্ক্রাগস এবং উইলিয়াম কিনি। তাদের সকলের বয়স ৯ বছর। এছাড়া হামলায় নিহত হয়েছেন আরও তিন স্কুলকর্মী। তারা হচ্ছেন, সিনথিয়া পিক (৬১), ক্যাথরিন কুন্স (৬০ এবং মাইক হিল (৬১)। পুলিশ হামলাকারী অড্রে হেলের পিতামাতার সাথে কথা বলেছে। অড্রে হেল যদিও গুলি শুরুর ১৫ মিনিটের মধ্যেই পুলিশের হাতে নিহত হয়। জানা গেছে, অড্রে হেল নিজেও ওই একই স্কুলের শিক্ষার্থী ছিল। হামলার সময় তার কাছে একটি আধা-স্বয়ংক্রিয় রাইফেলসহ মোট তিনটি বন্দুক ছিল। হত্যাকারী হামলার আগে স্কুল প্রাঙ্গণে নজরদারি চালায় এবং স্কুলের একটি মানচিত্র তৈরি করে।
পুলিশের একজন মুখপাত্র বলেছেন, হামলাকারী বিশেষ করে কোনো ব্যক্তিকে টার্গেট করেনি। তবে সে খুব সম্ভবত স্কুলের গির্জা ভবনকে টার্গেট করেছিল। হেলের বাবা-মা জানতেন যে, তাদের সন্তানের কাছে একটি বন্দুক ছিল এবং তাও সে বিক্রি করে দিয়েছে। তারা বিশ্বাস করেন যে, তাদের সন্তান অস্ত্রের মালিক হওয়ার মতো পরিস্থিতিতে ছিল না। তবে সে শিশুদের হত্যা করতে শহরের আশপাশের পাঁচটি দোকান থেকে বৈধভাবে অস্ত্রগুলো কেনে।
সোমবার স্থানীয় সময় সকাল ১০ টা ১৫তে প্রথম হামলার খবর পায় পুলিশ। হামলাকারী একটি গাড়িতে করে স্কুলে গিয়েছিল। এরপর সে একটি দরজা দিয়ে গুলি করতে করতে বিল্ডিংয়ে প্রবেশ করে। ন্যাশভিল পুলিশের প্রকাশ করা ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে যে, বন্দুকধারী সামনের দরজায় কাচের প্যানগুলিকে ভেঙে ফেলার জন্য গুলি চালাচ্ছে। তারপরে স্কুলের নির্জন করিডোরে ঘুরে ঘুরে হত্যার জন্য মানুষ খুঁজছিল সে। এসময় তার শরীরে আরও একাধিক বন্দুক ঝুলতে দেখা গেছে। সে সেখানে যত বেশি সম্ভব শিক্ষার্থী হত্যার টার্গেট নিয়ে গিয়েছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সন্দেহভাজন ব্যক্তি প্রথম তালায় গুলি চালিয়ে ভবনের দ্বিতীয় তলায় যায়। এসময় পুলিশের গাড়ি স্কুলে পৌঁছালে সে দ্বিতীয় তলা থেকে তাদের উপর গুলি চালায়। এতে একটি গাড়িতে গুলি লাগে। এক কর্মকর্তা সামান্য আহত হন এসময়।