প্রায় ৬০০০ থেকে ৫৫০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের কথা। শিয়াল্ক পাহাড়গুলি দীর্ঘকাল ধরে কৃষিজমির নিচে ঢাকা পড়েছিল। কোনো এক বন্যার পর সাড়ে সাত হাজার বছরের প্রাচীন পাহাড়গুলি জেগে ওঠে। এরআগে অন্য কেউ এসম্পর্কে কিছুই জানতেন না।
প্রাথমিকভাবে স্থানটিকে কেবলই ধ্বংসাবশেষ বলে মনে হয়েছিল। তবে আপনি যদি একেবারে কাছ থেকে দেখেন, মনে হবে প্রাচীন নিদর্শনগুলি আপনার সাথে কথা বলছে। নিচে এই শহর, এর সংস্কৃতি এবং এর মানুষ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হলো।
বর্ণনায় বলা হয়েছে, কাশানের লোকেরা শহরের এই রহস্যময় এলাকাটিকে ‘অভিশপ্ত শহর’ বলে অভিহিত করে। প্রবল এক বন্যার আগে কেউ এই ভয়ঙ্কর স্থানটির কাছে যাওয়ার সাহস করেনি। মূলত ভয়াবহ ওই বন্যার পরই শিয়াল্ক পাহাড়গুলি আবিষ্কার হয়।
সম্ভবত এই কাঠামোটিকে ‘পাহাড়’ হিসেবে উল্লেখ করা সঠিক হবে না। বাস্তবে এটি একটি জিগুরাত। মূলত জিগুরাত হচ্ছে, একটি আয়তক্ষেত্রাকার ধাপযুক্ত টাওয়ার। সাধারণত এই ধাপযুক্ত পাহাড়ের শীর্ষে একটি মন্দির থাকে। প্রাথমিকভাবে এই মন্দির মাটি দিয়ে তৈরি করা হয়।
বন্যার পানির শ্রোতে জিগুরাতটির আকর্ষণীয় রূপ প্রকাশিত হয়। সেই সাথে বিভিন্ন ধরণের সরঞ্জাম এবং মৃৎপাত্র আবিষ্কৃত হয়। বিখ্যাত ফরাসি প্রত্নতত্ত্ববিদ এবং ল্যুভর জাদুঘর থেকে প্রাচীন পারস্যের বিশেষজ্ঞ রোমান ঘিরশম্যান ইরান ভ্রমণ করেন এবং একটি টিম নিয়ে তিনি এই বিশেষ ঐতিহাসিক স্থানটিতে খনন কাজ শুরু করেন। তার অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসা সিয়াল্ক পাহাড়ের সম্পদের একটি বড় অংশ এখন প্যারিসের মর্যাদাপূর্ণ জাদুঘরে রাখা হয়েছে।
২০০১ সাল পর্যন্ত ড. মালেক শাহমিরজাদি পাঁচ ধাপে নতুন খনন শুরু করেন। তখন কেউই শিয়াল্ক পাহাড়ের দিকে মনোযোগ দেয়নি। যদিও ঘিরশম্যানের আবিষ্কার এবং গবেষণার ফলাফল ফরাসি ভাষায় দুটি বই হিসেবে প্রকাশিত হয়।
ঘিরশম্যান এবং ড. মালেকশাহী দুজনেই তিন মৌসুমে শিয়াল্ক পাহাড়ে খননকাজ পরিচালনা করেন। এই প্রত্নতাত্বিক অভিযানে আশ্চর্যজনক এবং আকর্ষণীয় কিছু ফল পাওয়া যায়।
ঘিরশম্যানের ধারণা, এই সভ্যতাটি ১০ হাজার বছরেরও বেশি পুরানো। উত্তরের পাহাড় এবং দক্ষিণের পাহাড় শিয়াল্ক পাহাড়ের প্রধান দুটি অংশ। প্রতিটির ছয়টি প্রধান স্তর রয়েছে। যুগে যুগে প্রতিটি স্তরের নিজস্ব স্বতন্ত্রতা গড়ে উঠেছে। খনন অভিযান শেষে এসব বৈশিষ্ট্য প্রকাশিত হয়।