সাকিব আল হাসান যেন বাংলাদেশ ক্রিকেটের এক নাট্যকারের নাম। তার ব্যাটে-বলে রচিত হয় টাইগারদের ক্রিকেটে জয়-পরাজয়ের গল্প। আবার মাঠের বাইরে ব্যক্তি সাকিবকে নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা বিতর্কের কাহিনীও কম নয়। সাকিব এরপরও বাংলাদেশের ক্রিকেটের অপরিহার্য নাম। যে কারণে তৃতীয় দফায় টাইগারদের অধিনায়ক হওয়ার সৌভাগ্যও হয়েছে তার। প্রথম দুইবার নেতৃত্ব হারিয়েছেন ব্যর্থতা আর বিতর্কের বোঝা মাথায় নিয়ে। এবার টেস্ট দল যখন চরম খারাপ সময় পার করছে ঠিক তখন তার কাঁধে ভার পড়েছে ব্যর্থতা থেকে দলকে টেনে বের করার। কতটা সফল হবেন সেটি সময়ই বলে দেবে। তবে আপাতত দল তার ওপরই রাখছে ভীষণ আস্থা। জাতীয় দলের ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজনের কণ্ঠে সেই আস্থার সুরই বেজেছে আরও একবার। তিনি বলেন, দেখেন সাকিব খুবই বুদ্ধিমান। আপনি যদি জিজ্ঞেস করেন বাংলাদেশে কার ক্রিকেট জ্ঞান সবচেয়ে ভালো, আমি অবশ্যই বলবো তাদের একজন সাকিব। সাকিবের চিন্তা ধারা তো ভিন্ন। ও তো দেশসেরা অলরাউন্ডার না, বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। সে চাইবে দলের জন্য সেরাটা করতে।’ তার নেতৃত্বেই ওয়েস্ট ইন্ডিজে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলবে টাইগাররা। ১৬ই জুন সিরিজের প্রথম ম্যাচ মাঠে গড়াবে এন্টিগাতে। তবে এখনো দলের সঙ্গে যোগ দেননি সাকিব। আছেন পরিবারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে।
২০১৯-এ ফিক্সিংকাণ্ডে জড়িয়ে নেতৃত্ব হারান সাকিব। সেবার এক বছরের জন্য তাকে সব ধরনের ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ করেছিল আইসিসি। এরপর মাঠে ফিরে খেলেছেন মুমিনুল হক সৌরভের নেতৃত্বে। তবে বার বারই তার টেস্ট খেলা নিয়ে এসেছে প্রশ্ন। সাকিব টেস্ট খেলতে চায় না এ নিয়ে বিতর্ক কম হয়নি। তবে তারই কাঁধে সেই টেস্টের নেতৃত্ব ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে। শুধু তাই নয় খালেদ মাহমুদ সুজন বিশ্বাস করেন তার নেতৃত্বেই দেশের টেস্ট সংস্কৃতির বড় পরিবর্তন আসবে। তিনি বলেন, ‘আমি এটাও বলি যে সাকিবের জন্য বড় ব্যাপার, সাকিব অধিনায়ক হওয়াতে আমাদের একটা পরিবর্তন (সংস্কৃতিতে) আসলেও আসতে পারে।
সামনে থেকে নেতৃত্ব দেয়া বলতে একটা কথা আছে, জ্ঞানী অধিনায়ক, পরিস্থিতি অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিতে পারা, দুইটা টেস্ট ম্যাচে তো আসলে বোঝা যাবে না, সময় দিতে হবে। আমরা আমাদের সেরা দলটা চাই, যখন সেরা দলটা খেলবে তখন অবশ্যই আমরা খুব শক্তিশালী দল।’
অন্যদিকে মুমিনুলের জন্যও আক্ষেপের সঙ্গে প্রত্যাশাও ঝরেছে সুজনের কণ্ঠে। নেতৃত্ব পাওয়ার পর দেশের সর্বাধিক টেস্ট সেঞ্চুরির মালিক যে ব্যাটিংই ভুলে যান।
শেষ পর্যন্ত ব্যর্থতা থেকে বের হতে নেতৃত্ব ছাড়ার ঘোষণা দেন। এমন কঠিন বাস্ততাকে মুমিনুলের জন্য সাপেবরই মনে করেন সুজন। তিনি বলেন, ‘মুমিনুলের জন্য দুঃখ অনুভব করছি, দারুণ অধিনায়ক। হয়তো সফল হয়নি, হয়তো চাপটা তার মধ্যে তৈরি হয়েছিল। এদিক থেকে আমি খুশি যে, সে সাহসী একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছে অধিনায়কত্ব ছেড়ে নিজের ব্যাটিংয়ের প্রতি ফোকাস করতে চাচ্ছে। আমি মনে করি মুমিনুলের জন্য এটা দারুণ কাজে দিবে।’