Monday, March 20, 2023
spot_img
Homeধর্মসরকারি খরচে প্রত্যেকে ৩ জনকে হজে পাঠাতে চান সংসদীয় কমিটির সদস্যরা

সরকারি খরচে প্রত্যেকে ৩ জনকে হজে পাঠাতে চান সংসদীয় কমিটির সদস্যরা

ধর্ম মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যরা ৩ জন করে প্রতিনিধিকে রাষ্ট্রীয় খরচে পবিত্র হজ পালনের জন্য সৌদি আরবে পাঠাতে চান। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে কমিটি ধর্ম মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করেছে।
তবে ধর্ম মন্ত্রণালয় বলেছে, বাংলাদেশ থেকে এ বছর আগের তুলনায় কমসংখ্যক মানুষ হজে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। তাই রাষ্ট্রীয় খরচে হজযাত্রী নেওয়ার সুযোগও কম। প্রত্যেক সদস্যকে দুজন প্রতিনিধি পাঠানোর সুযোগ দেওয়া যেতে পারে। আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এই আলোচনা হয়। তবে স্থায়ী কমিটির সদস্যরা কতজন করে প্রতিনিধি পাঠানোর সুযোগ পাবেন, তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি।
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খানসহ ধর্ম মন্ত্রণালয়– সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সদস্য ১০ জন। প্রত্যেকের ৩ জন প্রতিনিধিকে হজে পাঠাতে হলে কমিটির সদস্যদের সুপারিশে মোট ৩০ জনকে হজে পাঠাতে হবে। সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যেতে জনপ্রতি ৪ লাখ ৬২ হাজার ১৫০ টাকা থেকে ৫ লাখ ২৭ হাজার ৩৪০ টাকা খরচ হবে।
এর আগে ২০১৯ সালে সংসদীয় কমিটির প্রত্যেক সদস্যের সুপারিশে পাঁচজন করে সরকারি খরচে হজে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন। করোনা পরিস্থিতির কারণে গত দুই বছর বাংলাদেশ থেকে কেউ হজে যাওয়ার সুযোগ পাননি।
সংসদীয় কমিটির সূত্র জানায়, গত বছরের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত সংসদীয় কমিটির সভায় সদস্যদের প্রতিনিধিদের হজে পাঠানোর বিষয়টি আলোচনায় এনেছিলেন কমিটির সদস্য মনোরঞ্জন শীল। তিনি আগের মতো সংসদীয় কমিটির সদস্যদের জন্য পাঁচজন করে প্রতিনিধিকে হজে যাওয়ার সুযোগ রাখার অনুরোধ করেন। কমিটির সদস্য নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী তার বক্তব্যে সমর্থন জানান। পরে কমিটি তাদের প্রত্যেক সদস্যের জন্য আগের মতো পাঁচজন করে প্রতিনিধিকে হজ কার্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করে।
এই সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে আজকের বৈঠকে ধর্ম মন্ত্রণালয় জানায়, এবার বাংলাদেশ থেকে মোট ৫৭ হাজার ৫৮৫ জন পবিত্র হজ পালনে যাওয়ার সুযোগ পাবেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় যাবেন চার হাজার। তাই সরকারি খরচে হজ পালনে পাঠানোর সুযোগও এবার আগের তুলনায় কম। সে অনুযায়ী এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বৈঠক শেষে ধর্ম মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি রুহুল আমীন মাদানী বলেন, এ বছর আগের চেয়ে কম মানুষ হজে যাবেন। মন্ত্রী বলেছেন, সংসদীয় কমিটির সদস্যরা দুজন করে প্রতিনিধি পাঠাতে পারবেন। তবে কমিটির সদস্যরা তিনজন করে পাঠানোর সুযোগ দিতে বলেছেন। এ বিষয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নেবে।
সংসদীয় কমিটির প্রধান কাজ কমিটির আওতাধীন মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম পর্যালোচনা, অনিয়ম ও গুরুতর অভিযোগ তদন্ত করা এবং বিল পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে মন্ত্রণালয়কে পরামর্শ দেওয়া বা সুপারিশ করা। এ ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয় থেকে বিশেষ কোনো সুবিধা নিলে তা স্বার্থের সঙ্গে সংঘাতপূর্ণ হওয়ার আশঙ্কা থাকে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
সংসদীয় কমিটির সদস্যরা কেন সরকারি খরচে তাদের প্রতিনিধিদের হজে পাঠাবেন—এমন প্রশ্নের জবাবে রুহুল আমীন মাদানী বলেন, এটি আগে থেকেই হয়ে আসছে। যারা এই ধর্ম মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সদস্য তাদের ওপর নির্বাচনী এলাকার মানুষের দাবি থাকে হজে পাঠানোর। এই কমিটির সভাপতি হওয়ায় তার কাছে অনেকেই সরকারি খরচে হজে যাওয়ার দাবি নিয়ে আসছেন।
বৈঠক শেষে সংসদ সচিবালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বৈঠকে আলেম নামধারী মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষ শক্তিকে আসন্ন হজ কার্যক্রমে সম্পৃক্ত না করার বিষয়ে লক্ষ রাখা, সারা দেশে নির্মাণাধীন মডেল মসজিদগুলো বর্তমান সরকারের মেয়াদে দ্রুত শেষ করা, বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবের যাতায়াতে বিমানভাড়া সহনীয় পর্যায়ে আনার এবং সারা দেশের ইবতেদায়ি মাদ্রাসাগুলো জাতীয়করণের বিষয়ে আলোচনা হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এর আগের বৈঠকে কমিটি সুপারিশ করেছিল ‘আলেম নামধারী মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষ শক্তিকে আসন্ন হজ কার্যক্রমে সম্পৃক্ত না করার’। কমিটির সদস্য নজিবুল বশর মাইজভান্ডারীর বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে এই সুপারিশ করা হয়েছিল। গতকালের বৈঠকে এ বিষয় ধর্ম মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আলেম নামধারী মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষ শক্তিকে হজের কাজে সম্পৃক্ত না করার বিষয়ে লক্ষ রাখা হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সংসদীয় কমিটির সভাপতি রুহুল আমীন মাদানী বলেন, গতকালের বৈঠকে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়নি।
কমিটির সভাপতি রুহুল আমীন মাদানীর সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য ও ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান, শওকত হাচানুর রহমান, মো. ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লাহ, জিন্নাতুল বাকিয়া, তাহমিনা বেগম ও বেগম রতœা আহমেদ অংশ নেন।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments