মুমিনের সামাজিক বন্ধন একটি শরীরের মতো। যখন মানুষ তার কোনো একটি অঙ্গে ব্যথা অনুভব করে গোটা শরীর তখন তার সঙ্গ দেয়। এমনকি একটি অঙ্গের ব্যথা তার পুরো দেহের আরাম ও স্বস্তি কেড়ে নেয়। ঠিক তেমনি মুমিনরা পরস্পর সহমর্মী, অন্তরঙ্গ ভাই।
যখন কোনো ভাই কষ্ট বা বিপদে আক্রান্ত হয়, তখন বাকি সবাই তার পাশে দাঁড়ায়, তার ব্যথায় ব্যথিত হয়। এ জন্য নবী করিম (সা.) মুমিনের পারস্পরিক অবস্থাকে একটি শরীরের সঙ্গে তুলনা করে বলেছেন, মুমিনদের উদাহরণ তাদের পারস্পরিক ভালোবাসা, দয়ার্দ্রতা ও সহানুভূতির দিক থেকে একটি মানবদেহের মতো। যখন তার একটি অঙ্গ আক্রান্ত হয় তখন তার সমস্ত দেহ ডেকে আনে তাপ ও অনিদ্রা। (মুসলিম, হাদিস : ৬৪৮০)
পৃথিবীতে শুধু ভালোবাসার বন্ধনই টিকে থাকে। এই মূলনীতি সামনে রেখে ইসলাম মুমিনদের পারস্পরিক সম্পর্ককে সুন্দর ও দৃঢ় করার ব্যাপারে গুরুত্ব দিয়েছে। সাহাবাদের পরস্পরের আন্তরিকতার কথা তুলে ধরে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর তোমরা সকলে আল্লাহর রজ্জুকে সুদৃঢ় হাতে ধারণ করো; পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ো না। আর তোমরা সে নিয়ামতের কথা স্মরণ করো, যা আল্লাহ তোমাদেরকে দান করেছেন। তোমরা পরস্পর শত্রু ছিলে। অতঃপর আল্লাহ তোমাদের মনে সম্প্রীতি দান করেছেন। ফলে এখন তোমরা তাঁর অনুগ্রহের কারণে পরস্পর ভাই ভাই হয়েছ। ’ (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১০৩)
সাহাবাদের পারস্পরিক আন্তরিকতা ও অন্তরঙ্গ সম্পর্ক এই পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে, তারা নিজের ওপর অন্যকে প্রাধান্য দিতেন। তাঁদের এই আন্তরিকতার প্রশংসা করে আল্লাহ বলেন, ‘যারা মুহাজিরদের আগমনের আগে মদিনায় বসবাস করেছিল এবং বিশ্বাস স্থাপন করেছিল, তারা মুহাজিরদের ভালোবাসে, মুহাজিরদের যা দেওয়া হয়েছে, সে জন্য তারা অন্তরে ঈর্ষা পোষণ করে না এবং নিজেরা অভাবগ্রস্ত হলেও তাদের অগ্রাধিকার দেয়। যারা মনের কার্পণ্য থেকে মুক্ত, তারাই সফলকাম। ’ (সুরা : হাশর, আয়াত : ৯)
তাই এমন একটি প্রজন্ম গড়ে তোলা দরকার, যারা পরস্পর সম্প্রীতি ও ঐক্য প্রতিষ্ঠায় আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আদেশ মানতে তত্পর থাকবে।