আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘তবে কি তারা লক্ষ করে না উটের প্রতি, কিভাবে তা সৃষ্টি করা হয়েছে? এবং আকাশের প্রতি—কিভাবে তাকে উঁচু করা হয়েছে? এবং পাহাড়ের প্রতি—কিভাবে তাকে প্রোথিত করা হয়েছে? এবং ভূমির প্রতি—কিভাবে তা বিছানো হয়েছে? সুতরাং (হে রাসুল) আপনি উপদেশ দিতে থাকুন, আপনি তো একজন উপদেশদাতা। ’ (সুরা গাশিয়া, আয়াত : ১৭-২১) পৃথিবীর প্রতিটি বস্তু আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন। সৃষ্টির মধ্যে গভীরভাবে চিন্তা করলে স্রষ্টাকে দেখা যায়। একজন প্রকৃত ঈমানদার যখন বিশাল এ সবুজ-শ্যামল পৃথিবীর অপরূপ প্রকৃতির দিকে দৃষ্টি দেবে, সব জাগায় দেখতে পাবে, সব কিছুতেই আল্লাহর কুদরতি নিদর্শন।
খুঁটিবিহীন আকাশের বিশালতায় তিনি। সারি সারি পর্বতের উচ্চতায় তিনি। বৃক্ষরাজির পত্রপল্লবের মর্মর ধ্বনিতেও তিনি। গাছের থোকায় থোকায় ফলের কাঁদির মনকাড়া সৌন্দর্যে তিনি। বাগনজুড়ে রংবেরঙের ফুলের হরেক রকম পাপড়িতে তিনি। সুবাস-সৌরভেও তিনি। দিনের আলো, রাতের আঁধার ও সূর্যের কিরণে তিনি। তারকার দীপ্তিতে তিনি। জোনাকির আলোতে তিনি। পাখির কল্লোলে ও চড়ুইয়ের কিচিরমিচিরে তিনি। মরুভূমির ধু ধু প্রান্তরে তিনি। সবুজের বিস্তৃত মাঠে তিনি। মেঘমালার আবরণে তিনি। বাতাসের শনশন শব্দে তিনি। নদীর তরঙ্গমালায় তিনি। সমুদ্রের গর্জনে তিনি। আল্লাহর পথের মুজাহিদের তাকবির ধ্বনিতে তিনি। দাউদ (আ.)-এর সুর-ঝংকারে তিনি। মুসা (আ.)-এর তখতে তিনি। ইনজিলের চার সুসমাচারে তিনি। কোরআনের পারায় পারায় তিনি। ঐশীগ্রন্থ এ কোরআনে প্রায় দুই হাজার ৯৪০ বার আল্লাহ শব্দটি এসেছে। মানুষ আল্লাহর অনুসন্ধানে কতদূর বন-বিজনে চলে যায়; অথচ আল্লাহ তাআলা কোরআনের সুরা জারিয়াতর ২১ নম্বর আয়াতে বলেছেন, ‘তোমাদের মধ্যেও, তোমরা কি অনুধাবন করবে না?’
নিজের অস্তিত্বের প্রতিটি বিন্দুকণায় তিনি। এদিক-সেদিক ছুটেচলা- উদ্ভ্রান্ত লোকসকল, তোমরা একটু নিজের মধ্যে অনুসন্ধান করে দেখো না! তোমাদের মুখনিঃসৃত কথায় তিনি! শ্রবণেও তিনি। তোমাদের দৃষ্টিশক্তিতে তিনি। তোমাদের শ্বাস-প্রশ্বাসের ওঠানামায় তিনি। তোমাদের শাহরগেও তিনি। তিনিই আল্লাহ—বিশ্ব জাহানের রব।
লেখক : খতিব : মদিনা জামে মসজিদ রায়পুরা, নরসিংদী