Saturday, July 27, 2024
spot_img
Homeনির্বাচিত কলামসন্দেহজনক ব্যাংক লেনদেন

সন্দেহজনক ব্যাংক লেনদেন

অর্থ পাচার ও সন্ত্রাসে অর্থায়নসংক্রান্ত সন্দেহজনক ব্যাংক লেনদেনের সংখ্যা ক্রমাগত বেড়ে চলেছে। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে সন্দেহজনক লেনদেন ধরা পড়েছিল ৩ হাজার ৫৭৩টি। ২০১৯-২০ অর্থবছরে এ ধরনের লেনদেনের সংখ্যা ছিল ৩ হাজার ৬৭৫। ২০২০-২১ অর্থবছরে বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ১ কোটি ৩৩ লাখ ৫৮ হাজার ৬৪৬টি লেনদেন তল্লাশির জন্য পাঠানো হয় বাংলাদেশ ব্যাংকের ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) কাছে এবং ওই বছর ৫ হাজার ২৮০টি লেনদেনের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে।

আর ২০২১-২২ অর্থবছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ২ কোটি ৩২ লাখ ১৭ হাজার ৩১৫টি নগদ লেনদেন রিপোর্ট (সিটিআর) পাঠানো হয়েছে বিএফআইইউতে। এর মধ্যে ৫ হাজার ৩১২টি লেনদেনকে সন্দেহজনক (এসটিআর) হিসাবে শনাক্ত করা হয়েছে। উল্লেখ করা যেতে পারে, মানি লন্ডারিং আইন-২০১২-এর ধারা ২-এর (য) উপধারায় সন্দেহজনক লেনদেন বলতে বোঝায় ‘যাহা স্বাভাবিক এবং সাধারণ লেনদেনের ধরন হইতে ভিন্ন বা যে লেনদেন অপরাধ হইতে অর্জিত সম্পদ বা কোনো সন্ত্রাসী কার্যে, কোনো সন্ত্রাসী সংগঠনে বা সন্ত্রাসীকে অর্থায়ন।’

ব্যাংকিং নিয়মে একজন গ্রাহক একটি নির্দিষ্ট দিনে তার অ্যাকাউন্টে একাধিক বা একটি লেনদেনের মাধ্যমে দশ লাখ টাকা বা তারও বেশি জমা করলে অথবা অ্যাকাউন্ট থেকে উত্তোলন করলে সংশ্লিষ্ট গ্রাহকের বিরুদ্ধে সিটিআর রিপোর্ট করে থাকে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। অর্থাৎ সন্দেহভাজন যেসব লেনদেনের কথা বলা হচ্ছে, তার প্রতিটিতেই এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে।

বলা বাহুল্য, সন্দেহজনক মানেই অপরাধ সংঘটিত হয়েছে এমন নয়। আমরা বলব, সন্দেহজনক লেনদেনগুলোর বিস্তারিত তদন্ত হওয়া উচিত এবং সুনির্দিষ্টভাবে যেসব লেনদেনে অপরাধ সংঘটিত হওয়ার প্রমাণ মিলবে, সেসব লেনদেনকারীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে অবশ্যই সচেতন থাকতে হবে নির্দোষরা যেন অযথা হয়রানির শিকার না হয়।

অর্থ পাচারের ইস্যুটি এখন বেশ আলোচিত হচ্ছে। সম্প্রতি খবর বেরিয়েছে, মাত্র দশ মাসে সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের প্রায় তিন হাজার কোটি টাকার সমপরিমাণ অর্থ জমা পড়েছে। সব মিলিয়ে সুইস ব্যাংকে এখন বাংলাদেশিদের টাকার পরিমাণ ৮ হাজার ২৭৫ কোটি টাকা। এই যখন বাস্তবতা, তখন টাকা পাচার রোধে বিএফআইইউকে আরও সক্রিয় হতে হবে। সন্দেহজনক লেনদেনগুলো সুষ্ঠুভাবে যাচাই করে টাকা পাচারের প্রমাণ মিললে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে নিতে হবে ব্যবস্থা।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments