ভারতে সন্তানধারণের হার সামগ্রিকভাবে কমছে। দেশটির জাতীয় পারিবারিক স্বাস্থ্য সমীক্ষার পঞ্চম দফার প্রতিবেদন প্রকাশ্যে আসতেই এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন সমীক্ষকরা।
হিসাব বলছে, ভারতীয়দের সন্তানধারণের সামগ্রিক হার ২.২ থেকে কমে হয়েছে ২। ভারত সরকারের বক্তব্য, দেশজুড়ে পরিবার পরিকল্পনা নিয়ে ব্যাপক প্রচারের ফলেই মানুষ সচেতন হয়েছে।
এবার তারই সুফল মিলতে শুরু করেছে।
সন্তানধারণের হার প্রকাশের একটি নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া রয়েছে। প্রত্যেক নারী গড়ে কতজন সন্তানের জন্ম দিচ্ছেন, সেই সংখ্যাই সন্তানধারণের হার হিসেবে বিবেচিত হয়।
আগেরবারের সমীক্ষায় দেখা যায়, গড় হিসাবে ভারতীয় নারীদের সন্তানসংখ্যা দুইয়ের বেশি। কিন্তু সরকারের নীতি হলো, ‘আমরা দুজন, আমাদের দুজন’। লাগাতার প্রচারের ফলে অবশেষে সেই লক্ষ্যমাত্রা ছোঁয়া সম্ভব হয়েছে বলে মনে করছেন সীমক্ষকরা।
জাতীয় পারিবারিক স্বাস্থ্য সমীক্ষার চতুর্থ ও পঞ্চম দফার মধ্যেই এই বিরাট পার্থক্য ধরা পড়েছে।
এবারের সমীক্ষার রিপোর্ট থেকেই জানা গেছে, ভারতে মাত্র পাঁচটি এমন রাজ্য রয়েছে, যেখানে সন্তানধারণের হার লক্ষ্যমাত্রা দুইয়ের চেয়ে বেশি।
এই রাজ্যগুলো হলো বিহার (২.৯৮), মেঘালয় (২.৯১), উত্তর প্রদেশ (২.৩৫), ঝাড়খণ্ড (২.২৬ ) ও মণিপুর (২.১৭)।
সূত্রের খবর, জাতীয় পারিবারিক স্বাস্থ্য সমীক্ষার পঞ্চম দফার জন্য দেশের মোট ৭০৭টি জেলায় সমীক্ষা চালানো হয়। এর অধীনে ছিল প্রায় ছয় লাখ ৩৭ হাজার পরিবার। সেগুলোকেই নমুনা হিসেবে বেছে নিয়ে সমীক্ষা চালানো হয়।
সে দেশের মোট ২৮টি রাজ্য এবং আটটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে এই ৭০৭টি জেলা রয়েছে। সমীক্ষার আওতায় আনা হয়েছে সাত লাখ ২৪ হাজার ১১৫ জন নারী এবং এক লাখ এক হাজার ৮৩৯ জন পুরুষকে।
সরকারের পক্ষ থেকে প্রকাশ করা এক বিবৃতিতে বলা হয়—‘দেশের প্রায় সব রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলেই অত্যাধুনিক গর্ভনিরোধক ব্যবস্থা ব্যবহারের প্রবণতা বেড়েছে। আগে পরিবারকে সম্পূর্ণ করার দোহাই দিয়েই বারবার সন্তান জন্ম দেওয়া হতো। এখন সেই প্রবণতা ১৩ শতাংশ থেকে কমে হয়েছে ৯ শতাংশ। ’
তবে এই মানসিকতা আরো পরিবর্তনের প্রয়োজন আছে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। প্রসঙ্গত, পরিবারকে সম্পূর্ণ করার অপূর্ণ ইচ্ছা বলতে মূলত পুত্রসন্তান লাভের বাসনাকেই বোঝানো হয়েছে।
সূত্র: এই সময়