Saturday, July 27, 2024
spot_img
Homeধর্মশয়তানের কর্মকাণ্ড

শয়তানের কর্মকাণ্ড

শয়তানের মূল কাজ হলো মানবসন্তানের সঙ্গে শত্রুতা করা, তাদের যেকোনো মূল্যে জাহান্নামের অভিবাসী করা। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘হে মানুষ, জমিনে যা রয়েছে, তা থেকে হালাল পবিত্র বস্তু আহার করো এবং শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ কোরো না। নিশ্চয়ই সে তোমাদের জন্য সুস্পষ্ট শত্রু। ’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ১৬৮)

শয়তান কুমন্ত্রণা দেয় : ‘যে নিজেকে লুকিয়ে রেখে বারবার এসে কুমন্ত্রণা দেয় তার অনিষ্ট থেকে (আমি আল্লাহর আশ্রয় চাই)।’ (সুরা : নাস, আয়াত : ৪)

আল্লাহর নাফরমানি : ইবলিস শয়তানের প্রধান কাজ হলো আল্লাহর আদেশ অমান্য করা। নিজের ঠুনকো যুক্তিতর্ককে অগ্রাধিকার দিয়ে আল্লাহর আদেশ অমান্য করে সে অভিশপ্ত হয়েছে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর স্মরণ করুন, যখন আমরা ফেরেশতাদের বললাম, আদমকে সিজদা করো, তখন ইবলিস ছাড়া সবাই সিজদা করল; সে অস্বীকার করল ও অহংকার করল। আর সে কাফিরদের অন্তর্ভুক্ত হলো। ’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ৩৪)

মানুষের মধ্যে শত্রুতা সৃষ্টি করা : ইবলিসের অন্যতম কাজ হলো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা। মানুষের মধ্যে শত্রুতা বাধিয়ে দেওয়া। সে উদ্দেশ্যেই মানুষকে আল্লাহর আদেশ ভুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘অতঃপর শয়তান সেখান থেকে তাদের পদস্খলন ঘটাল এবং তারা যেখানে ছিল সেখান থেকে তাদের বের করল। আর আমি বললাম, তোমরা একে অন্যের শত্রুরূপে নেমে যাও এবং কিছুদিনের জন্য তোমাদের বসবাস ও জীবিকা রইল জমিনে। ’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ৩৬)

অশ্লীল কাজে উৎসাহ দেয় : মহান আল্লাহ অশ্লীলতা পছন্দ করেন না। তাই ইবলিস মানুষকে সর্বদা অশ্লীলতায় উদ্বুদ্ধ করে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘হে মুমিনরা! তোমরা শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ কোরো না। আর কেউ শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করলে শয়তান তো অশ্লীলতা ও মন্দ কাজেরই নির্দেশ দেয়। আল্লাহর অনুগ্রহ ও দয়া না থাকলে তোমাদের কেউই কখনো পবিত্র হতে পারতে না, তবে আল্লাহ যাকে ইচ্ছা পবিত্র করেন এবং আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ। ’ (সুরা : নূর, আয়াত : ২১)

পথভ্রষ্ট করে : পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘একদলকে তিনি সঠিক পথ দেখিয়েছেন আর অন্য দলের প্রতি গোমরাহি নির্ধারিত হয়েছে, তারা আল্লাহকে বাদ দিয়ে শয়তানকে তাদের অভিভাবক করে নিয়েছে আর মনে করছে যে তারা সঠিক পথে আছে। ’  (সুরা : আরাফ, আয়াত : ৩০)

অহংকার : অহংকার পতনের মূল। তাই শয়তান নিজেও অহংকারী এবং মানুষকে অহংকারে উদ্বুদ্ধ করে ধ্বংস করার চেষ্টা করে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘হে ইবলিস, আমার দুই হাতে আমি যাকে সৃষ্টি করেছি তার প্রতি সিজদাবনত হতে কিসে তোমাকে বাধা দিল? তুমি কি অহংকার করলে, না তুমি অধিকতর উচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন?’ (সুরা : সোয়াদ, আয়াত : ৭৫)

দরিদ্রতার ভয় দেখায় : পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘শয়তান তোমাদের গরিব হয়ে যাওয়ার ভয় দেখায় এবং লজ্জাকর বিষয়ের নির্দেশ দেয় এবং আল্লাহ নিজ পক্ষ থেকে তোমাদের সঙ্গে ক্ষমার ও অনুগ্রহের ওয়াদা করছেন এবং আল্লাহ প্রাচুর্যের অধিকারী, মহাজ্ঞানী। ’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ২৬৮)

মদ-জুয়ায় অভ্যস্ত করে : পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘হে মুমিনরা, নিশ্চয়ই মদ, জুয়া, প্রতিমা-দেবী ও ভাগ্যনির্ধারক তীরসমূহ তো নাপাক শয়তানের কর্ম। সুতরাং তোমরা তা পরিহার করো, যাতে তোমরা সফলকাম হও। ’ (সুরা : মায়িদা, আয়াত : ৯০)

পর্দাহীনতায় বাধ্য করে : শয়তান মানুষকে লজ্জাহীনতা শেখায়। মানুষের লজ্জাশীলতা কেড়ে নেওয়া শয়তানের গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘অতঃপর শয়তান তাদের প্ররোচনা দিল, যাতে সে তাদের জন্য প্রকাশ করে দেয় তাদের লজ্জাস্থান, যা তাদের থেকে গোপন করা হয়েছিল এবং সে বলল, তোমাদের রব তোমাদের কেবল এ জন্য এ গাছ থেকে নিষেধ করেছেন যে (খেলে) তোমরা ফেরেশতা হয়ে যাবে অথবা তোমরা চিরস্থায়ীদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে। ’ (সুরা : আরাফ, আয়াত : ২০)

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments