দক্ষিণ এশিয়ার দেশ শ্রীলঙ্কা এখন তার ৭৪ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে সঙ্কটজনক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির মুখোমুখি। কিন্তু কিছু দিন আগেও শ্রীলঙ্কা ছিল দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে উন্নত অর্থনীতির দেশ, যার মাথাপিছু জিডিপি ছিল ৪ হাজার মার্কিন ডলারের বেশি। শ্রীলঙ্কার ৯৫% মানুষ শিক্ষিত, তাদের শিক্ষা ব্যবস্থা দক্ষিণ এশিয়ার সমস্ত দেশের মধ্যে সবচেয়ে কার্যকরী। ভারতের কেরালার পরে তাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাও দক্ষিণ এশিয়ায় সেরা। শ্রীলঙ্কাও দক্ষিণ এশিয়ার একটি প্রধান পর্যটনস্থল। কিন্তু কয়েক বছর ধরে শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি গভীর সংকটে রয়েছে। দেশে আমদানি পণ্যের ক্রমবর্ধমান ঘাটতি জনজীবনকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। কয়েক মাস ধরে দেশটি ভয়াবহ খাদ্য সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সর্বনিম্ন অবস্থানে থাকায় তারা বিদেশ থেকেও খাদ্য আমদানি করে সংকট মেটাতে পারবে না।
নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের ক্রমবর্ধমান ঘাটতি জনজীবনে এক অভূতপূর্ব বিপর্যয় ডেকে এনেছে। কয়েকদিন আগে ডলারের নিরিখে শ্রীলঙ্কার রুপির মূল্য ছিল ১৯০ টাকা, কিন্তু গত দুই মাসে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩০০ টাকার ওপরে। যেখানে শ্রীলঙ্কাকে আগামী বছরের মধ্যে ৭.৩ বিলিয়ন সুদ পরিশোধ করতে হবে সেখানে বর্তমানে, দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ১ বিলিয়ন থেকে ২ বিলিয়নের মধ্যে ওঠানামা করছে। এর মানে শ্রীলঙ্কা ‘আর্থিকভাবে দেউলিয়া’ হওয়ার পথে। শ্রীলঙ্কা সরকার সম্প্রতি দেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছিল, কারণ দেশটি রাজাপাকসে পরিবারকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য গণঅভ্যুত্থানের সম্মুখীন হয়েছে। অনেকেই হয়তো জানেন না, বর্তমান শ্রীলঙ্কার সরকারে রাজাপাকসে পরিবারের পাঁচজন সদস্য হলেন প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী এবং অন্য তিনজন মন্ত্রী। রাজাপাকসে পরিবার শ্রীলঙ্কার সরকারি বাজেটের প্রায় ৭৫ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করে।
কেন গভীর সংকটে পড়ল শ্রীলঙ্কা?
প্রথমত: সবচেয়ে খারাপ ভুল যেটা হল কিছু রাজনৈতিক পরিবারের সদস্যদের ক্ষমতায় ফিরে আসা। যারা দেশের মানুষের প্রতি দায়িত্বশীলতা দেখিয়েছেন কিন্তু এই পরিবারগুলো গণতন্ত্রকে এমন এক পর্যায়ে নামিয়ে এনেছে যেখানে সময়মত নির্বাচন সত্ত্বেও উল্লেখযোগ্য কোনো পরিবর্তন বা সংস্কার হয়নি। কোনো সরকারই দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করে গণতন্ত্র, অর্থনৈতিক ও সামাজিক সংস্কারকে শক্তিশালী করার উদ্যোগ নেয়নি। সম্ভবত একটি পরিবারের একটি দেশ দখল করার সবচেয়ে বড় উদাহরণ হল রাজাপাকসে পরিবারের ক্ষমতায় পুনরায় ফিরে আসা।
প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে (যিনি প্রতিরক্ষা মন্ত্রীও), প্রধানমন্ত্রী এবং সদ্য প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী সম্পর্কে ভাই হন। এছাড়াও স্বজনরা দেশের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও গুরুত্বপূর্ণ সরকারি পদে অধিষ্ঠিত। প্রেসিডেন্ট হিসাবে মাহিন্দা রাজাপাকসের দ্বিতীয় মেয়াদে, মন্ত্রিসভা ছাড়াও ২০১০ থেকে ২০১৫ পর্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সরকারি পদে তাঁর পরিবারের ৪০ জন সদস্য ছিলেন। একটি পারিবারিক সরকার গঠন শ্রীলঙ্কার বর্তমান সংকটের একটি প্রধান কারণ।
দ্বিতীয়ত: গত ১৫ বছরে, শ্রীলঙ্কা বেশ কিছু ব্যয়বহুল এবং উচ্চাভিলাষী প্রকল্প হাতে নিয়েছে, যার বেশিরভাগই অপ্রয়োজনীয় এবং অর্থনৈতিকভাবে অলাভজনক। ২০০৯ সালে, শ্রীলঙ্কার গৃহযুদ্ধে ভারতের ভূমিকার কারণে শ্রীলঙ্কার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট এবং বর্তমান প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে নিজেকে ভারত থেকে দূরে রাখতে এবং চীনের দিকে ঝুঁকতে শুরু করেছিলেন। শ্রীলঙ্কার ভূ-রাজনৈতিক অবস্থানের গুরুত্ব বিবেচনা করে, বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই) এর অধীনে হাম্বানটোটায় একটি গভীর সমুদ্রবন্দর এবং কলম্বো সমুদ্রবন্দরের কাছে একটি চীনা শহর নির্মাণ এবং ‘রাজাপাকসে’ নামের একটি বিমানবন্দর নির্মাণ করা হয়। পরে হাম্বানটোটা গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণের কাজ শেষ হলে দেখা যায় বন্দরটি ব্যবহারের জন্য পর্যাপ্ত চাহিদা নেই।
শ্রীলঙ্কা বন্দরের রাজস্ব বাড়াতে ব্যর্থ হওয়ার পর অবশেষে ৯৯ বছরের জন্য বন্দরটি চীনের কাছে লিজ দিতে বাধ্য হয়েছিল। কলম্বোর চীনা শহর এবং বিমানবন্দর প্রকল্প একই রকম বিপর্যয়ের মধ্যে রয়েছে। একই সময়ে, শ্রীলঙ্কা দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করতে আন্তর্জাতিক সার্বভৌম বন্ডের মাধ্যমে প্রচুর পরিমাণে বিদেশী ঋণ সংগ্রহ করেছে, যার ম্যাচুরিটি ২০২২ সালে শুরু হবে। কিন্তু এখন বন্ড শোধ করার সামর্থ্য নেই শ্রীলঙ্কার। তাই পাকিস্তানের মতো ঋণ পরিশোধে নিজেকে অক্ষম ঘোষণা করে শ্রীলঙ্কার কাছে ‘উদ্ধার প্যাকেজ বা বেলআউট প্যাকেজ’-এর জন্য আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংকের কাছে দরবার করা ছাড়া চলমান সংকট থেকে উত্তরণের কোনো পথ নেই।
তৃতীয়ত: অপরিকল্পিত প্রকল্প গ্রহণ এবং গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের প্রতি উদাসীনতা। উদাহরণস্বরূপ, শ্রীলঙ্কায় বিদ্যুতের চাহিদা প্রতি বছর ৮ শতাংশ হারে বাড়ছে। কিন্তু ২০১৪ সাল থেকে নতুন বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের জন্য কোনো উদ্যোগ নেয়নি দেশটি। অপরিকল্পিত মেগা প্রকল্প শ্রীলঙ্কার উন্নয়নের সামনে বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
চতুর্থত: ২০১৯ সালে, প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে ভ্যাট এবং কর কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তিনি ভ্যাট এর হার ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৮ শতাংশ করেছেন। এছাড়াও তিনি ২% নেশন ডেভেলপমেন্ট ট্যাক্স এবং পে অ্যাজ ইউ আর্ন সিস্টেম বাতিল করেছেন। ফলস্বরূপ, সরকারের রাজস্ব ২৫ শতাংশ কমেছে, এটি শ্রীলঙ্কাকে আরও বিদেশী ঋণ নিতে বাধ্য করেছে।
পঞ্চমত: পর্যটন শ্রীলঙ্কায় বৈদেশিক মুদ্রার একটি প্রধান উৎস। জিডিপিতে এই খাতের অবদান প্রায় ১০ শতাংশ। দেশের বৈদেশিক মুদ্রার আরেকটি বড় উৎস রেমিট্যান্স। COVID-19 মহামারীর আগে, শ্রীলঙ্কা পর্যটন এবং রেমিটেন্স থেকে প্রায় ১২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করেছিল। মহামারীর জেরে যেমন পর্যটন খাতের ক্ষতি হয়েছে, তেমনি রেমিট্যান্সের পরিমাণও উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে।
ষষ্ঠত: কৃষি খাতে রাতারাতি জৈব চাষ প্রবর্তনের হঠকারী সিদ্ধান্ত আজকের পরিস্থিতির জন্য অনেকাংশে দায়ী। প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে কৃষিবিদ ও বিজ্ঞানীদের সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর চাপ কমাতে রাসায়নিক সার আমদানি এবং কৃষিতে রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়। ফলে শ্রীলঙ্কায় খাদ্য উৎপাদন প্রায় এক-তৃতীয়াংশ কমেছে। খাবারের দাম বেড়েছে। এছাড়া খাদ্যের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে দেশটিকে আগের চেয়ে বেশি বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় করতে হবে।
বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক তুলনা:
শ্রীলঙ্কার মোট বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ ৩৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। মোট জনসংখ্যা ২২ মিলিয়ন, শ্রীলঙ্কায় মাথাপিছু ১৬৫০ মার্কিন ডলার ঋণ রয়েছে। অন্যদিকে বাংলাদেশের মোট ঋণের পরিমাণ ৪৯.৪৫ বিলিয়ন ডলার। যেহেতু বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যা ১৬৯ মিলিয়ন, মাথাপিছু ঋণ ২৯২.১১ মার্কিন ডলার। করোনা ভাইরাস মহামারীর কারণে শ্রীলঙ্কার রেমিট্যান্স তলানিতে পৌঁছেছে। ২০২০-২১ অর্থবছরে দেশের রেমিট্যান্স ছিল ৮.৫ বিলিয়ন। ওই অর্থবছরে বাংলাদেশের রেমিট্যান্স ছিল ২৪.৭৮ বিলিয়ন, যা শ্রীলঙ্কার চেয়ে প্রায় তিনগুণ বেশি। কিন্তু জনসংখ্যায় বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কার চেয়ে প্রায় ৬ গুণ বেশি। তাই মাথাপিছু ঋণের হিসাব দেখিয়ে বড় অঙ্কের বৈদেশিক ঋণ কভার করা যাবে না। বিশেষজ্ঞরা শ্রীলঙ্কার বর্তমান সঙ্কটের অন্যতম কারণ হিসেবে রপ্তানি আয় কমে যাওয়াকে উল্লেখ করেছেন। বর্তমানে শ্রীলঙ্কার রপ্তানি আয় ৮.৫ বিলিয়ন। সেখানে বাংলাদেশের রপ্তানি আয় ৩৮.৭৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। অর্থাৎ শ্রীলঙ্কার চেয়ে বাংলাদেশের রপ্তানি আয় প্রায় পাঁচ গুণ বেশি। তবে শ্রীলঙ্কার চেয়ে বাংলাদেশ জনসংখ্যা ৮ গুণ বেশি।
শ্রীলঙ্কার কাছ থেকে বাংলাদেশ কী শিখতে পারে?
বাংলাদেশের আয় মূলত- পোশাক রপ্তানি ও রেমিটেন্সের ওপর নির্ভরশীল। স্বাভাবিক ভাবেই, দেশের অর্থনীতি মূলত বিশ্ববাজারের ওঠানামার উপর নির্ভরশীল। তাই পোশাক রপ্তানির ওপর নির্ভরতারকে অবমূল্যায়ন করা উচিত নয়। বিশ্ব বাজারে চাহিদা ও মূল্যের যেকোনো উল্লেখযোগ্য ওঠানামা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে দুর্দশা ও সংকটের কারণ হতে পারে। রেমিট্যান্স বৈদেশিক মুদ্রার আরেকটি উৎস, যা মহামারীর সময়েও অব্যাহত ছিল এবং বাংলাদেশের অর্থনীতিকে স্থিতিশীল রেখেছিল। তবে এটি মুষ্টিমেয় বাজারের উপরও নির্ভরশীল, বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্য। বাংলাদেশের এই নির্ভরতা কমাতে হবে এবং তার কর্মীদের দক্ষতা বাড়াতে হবে। যাতে তারা আরও বেশি আয় করতে পারে। এই সমস্যাটি জরুরীভাবে সমাধান করা প্রয়োজন।
মেগাপ্রকল্প অনেক দেশে অর্থনৈতিক অবনতি ঘটিয়েছে। উন্নয়নশীল দেশগুলিতে রাতারাতি বড় আকারের অবকাঠামো প্রকল্পে ছুটে যাওয়ার একটি সাধারণ প্রবণতা রয়েছে। বাংলাদেশে মেগাপ্রজেক্টে বড় ধরনের বিনিয়োগ করা হয়েছে। যদি আমরা বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ১০ টি চলমান প্রকল্পের ব্যয় যোগ করি, তাহলে মোট পরিমাণ দাঁড়ায় ২৮১৭০৬০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি, এটি একটি বিশাল পরিমাণ অর্থ। কিন্তু মূল প্রশ্ন হল বাংলাদেশ কীভাবে তহবিল সংগ্রহ করে এবং দেশটি কতটা যুক্তিযুক্তভাবে তা ব্যবহার করে? এ ক্ষেত্রে ধার করা অর্থের পরিমাণ বড় সমস্যা নয়, প্রকল্পগুলোর উপযোগিতা ও সময়মতো বাস্তবায়ন বেশি গুরুত্বপূর্ণ। সেক্ষেত্রে সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং প্রকল্পগুলোকে আরও শক্তিশালী করে বাংলাদেশ ঋণের বোঝা কমাতে পারে।
কিন্তু এক্ষেত্রে দেশের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা সামনে চলে আসে। ক্ষুদ্র ও মাঝারিসহ অধিকাংশ মেগাপ্রকল্প সময়মতো বাস্তবায়িত হয় না। প্রকল্পের মেয়াদ ও ব্যয় এক থেকে চার গুণ বাড়ানো হয়েছে। ফলে প্রকল্পের সার্বিক ব্যয় অনেক বেড়ে যায়। উপরন্তু, প্রকল্প বাস্তবায়নে বিলম্ব সম্ভাব্য আয়ের সুযোগ হ্রাস করে এবং অর্থনীতিতে চাপ সৃষ্টি করে। বাংলাদেশ যদি এই খাতে দুর্নীতি ও অপচয় বিবেচনা করে তাহলে এসব খরচ আরও বেড়ে যায়। তবে বাস্তবতা হল, এই ব্যয় বৃদ্ধির জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের জবাবদিহি করতে হয় না। তারপর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জিনিস হল সমন্বয়। একটি বড় প্রকল্পের অনেকগুলি শাখা থাকে। প্রকল্পের সব ক্ষেত্রে সমন্বয় না থাকলে অর্থনীতিতে অতিরিক্ত চাপ পড়ে। বাংলাদেশ হয়তো অদূর ভবিষ্যতে শ্রীলঙ্কার মতো একই পরিস্থিতির মুখোমুখি হবে না, তবে বাংলাদেশের এখনও তার অর্থনীতি এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে যথেষ্ট দুর্বল। যেখানে বিশেষ নজর দেওয়া দরকার।
সূত্র: moderndiplomacy.eu
লেখক: আশিস কিফায়েত, দক্ষিণ এশিয়ার ভূ-রাজনৈতিক বিশ্লেষক এবং নিউইয়র্ক ভিত্তিক ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক
অনুবাদে: সেবন্তী ভট্টাচার্য্য