২০২২ সালে শাকিব খান ঢাকাই চলচ্চিত্রে প্রায় অনুপস্থিত। দুটি নতুন ছবি মুক্তি পেয়েছিল, গলুই ও বিদ্রোহী। বিদ্রোহী ছবিটি কোনোভাবেই আলোচনা তৈরি করতে না পারলেও, গলুই আলোচনাতে ছিল। সিনেমা দিয়ে আলোচনায় না থাকলেও ব্যক্তিগত সম্পর্ক নিয়ে আলোচনায় ছিলেন ঢাকাই ছবির এই শীর্ষ নায়ক।
শুধু তাই নয়, যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসের অনুমতির জন্য সেখানে গিয়ে নয়মাস ছিলেন শাকিব। আর এই নয়মাসে ঢাকাই চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রি শূন্য থাকেনি, বরং কয়েকটি সিনেমা তুমুল ব্লকবাস্টার হিট হয়েছে। তুমুল আলোচিত হয়েছেন চঞ্চল চৌধুরী, শরীফুল রাজ।
ওই বছর শাকিবের মুক্তি পাওয়া বিদ্রোহী চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেন শাহীন সুমন এবং শাপলা মিডিয়ার ব্যানারে প্রযোজনা করেন সেলিম খান। অন্যদিকে, ‘গলুই’ প্রযোজনা করেন খোরশেদ আলম খসরু। এস এ হক অলিকের পরিচালনায় শাকিব খানের সঙ্গে পূজা চেরি অভিনয় করেছিলেন ছবিটিতে। এই ছবিতে অভিনয় করতে গিয়েই পূজার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কের গুঞ্জন ছড়ায়।
শাকিব ছাড়া ঢাকাই সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি অচল- এ কথাকে উল্টো প্রমাণ করে দিয়েছেন চঞ্চল চৌধুরী, শরীফুল রাজরা। বরং এই বছরেই বাংলা সিনেমাকে ঘিরে তোলপাড় শুরু হয়, যা পূর্বের বেশ কয়েক বছর ঢাকাই চলচ্চিত্রে এমন জোয়ার ছিল না। পরাণ ও হাওয়া চলচ্চিত্রকে কেন্দ্র করে দর্শকদের উন্মাদনা তৈরি হয়। হাওয়া সিনেমাটি নির্মাণ করেন মেজবাউর রহমান সুমন, আর পরাণ রায়হান রাফি।
শুধু দেশে নয় পশ্চিমবঙ্গেও চঞ্চলের অভিনয়ের খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে। অন্যদিকে শাকিব আলোচনায় ছিলেন ব্যক্তিগত সম্পর্ক নিয়ে। বুবলীর সঙ্গে প্রেম, বিয়ে ও বাচ্চা নিয়ে আলোচনায় আসেন শাকিব। শাকিবের নতুন স্ত্রী ও সন্তানের সন্ধান পায় ইন্ডাস্ট্রি।
এরচেয়েও বড় কথা শাকিব ঢাকাই চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রিতে দীর্ঘদিন একক রাজত্ব করলেও এ বছর যেন নিজের ইচ্ছায় সিংহাসন ছেড়ে দিয়েছিলেন। নয় মাস দেশে ছিলেন না, যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসের অনুমতি পেতে সেখানে গিয়ে বসবাস শুরু করেন। এই নয় মাস অবশ্য শূন্যস্থান শূন্য ছিল না, পূরণ করে দিয়েছিল হাওয়া ও পরাণের মতো দর্শক নন্দিত সিনেমা।
সামনে শাকিব কী করবেন? যুক্তরাষ্ট্রে একটি সিনেমার ঘোষণা দিয়ে এসেছেন, সেটি এখনো অন্ধকারে। তপু খান পরিচালিত ‘লিডার- আমিই বাংলাদেশ’ মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে, রায়হান রাফি শাকিবকে নিয়ে একটি সিনেমা বানানোর ঘোষণা দিয়েছেন। সানী সানোয়ার বানাবেন একটি সিনেমা। ২০২৩ এ শাকিব স্বরূপে ফিরতে পারবেন? প্রশ্ন ভক্তদের।
তবে অনেকেই মনে করছেন বছরজুড়ে যদি শাকিব যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে পড়ে থাকেন, তাহলে স্থায়ীভাবে ঢাকাই সিনেমার আসন হারাতে হবে। আবার কেউ কেউ মনে করেন এককভাবে শাকিবের আসন কেউ কেউ দখল না করতে পারলেও সমন্বিতভাবে আসন দখল হয়ে যাবে। অর্থাৎ ঢাকাই চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রি এক-নায়ক কেন্দ্রিক থাকবে না।