লেসবোস দ্বীপের মোরিয়া শরণার্থীশিবির আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়ার পর পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে আসা অভিবাসীদের তৎপরতার ওপর কড়া নজর রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে গ্রিস সরকার। সূত্র জানিয়েছে, শরণার্থীশিবিরে আগুন দেওয়ার ঘটনায় এই দুই দেশের অভিবাসীরা জড়িত ছিল।
গত মাসের ৯ তারিখে গ্রিসের বৃহত্তম অভিবাসীশিবিরে আগুন লেগেছিল, লেসবস দ্বীপের এই শিবিরে বিপুলসংখ্যক মানুষের বসবাস ছিল। আগুনে এটি ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় কমপক্ষে ১২ হাজার মানুষ আশ্রয়হীন হয়ে পড়ে।
এ ঘটনার পর গ্রিস সরকার পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে আসা অভিবাসীদের তদারকির বিষয়ে কড়া নজর রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ ছাড়া গত মাসে ক্রিট দ্বীপের টিমপাকিতে পাকিস্তানি যুবক কর্তৃক স্থানীয় তরুণীকে যৌন হয়রানি করার ঘটনায় গ্রিক ও পাকিস্তানিদের মধ্যে সহিংস সংঘাতের কথা বিবেচনা করেও এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ওই সংঘর্ষের পর গ্রিসে অবৈধভাবে বসবাসরত প্রায় ৩০ জন পাকিস্তানিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল এবং পরে দূতাবাসের অনুরোধে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হলেও দেশ থেকে বিতাড়িত করা হয়েছে।
সূত্র জানায়, গ্রিস কর্তৃপক্ষ এথেন্সের প্রায় ৫০টি মসজিদ এবং গ্রিসে সক্রিয় বিভিন্ন পাকিস্তানি ও আফগান সংগঠনগুলোর ওপর নিবিড় নজর রাখছে।
তুরস্কের সঙ্গে সীমান্ত বিরোধের কারণে পাকিস্তানি ও আফগান যুবকদের উগ্রপন্থী হওয়ার আশঙ্কা করছে গ্রিস সরকার। সীমান্ত সংঘাতের সুযোগে তুরস্ক হয়ে আরো বিপুলসংখ্যক পাকিস্তানির গ্রিসে অনুপ্রবেশের শঙ্কা রয়েছে। এ ছাড়া পাকিস্তানি ও আফগান অভিবাসীরা এথেন্সে মাদকপাচারেও জড়িত বলে জানা গেছে। ফলে কর্তৃপক্ষ এ দুই দেশের অভিবাসীদের কড়া নজরদারিতে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে আসা অবৈধ অভিবাসীরা গ্রিসের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ‘গ্রিক সিটি টাইমস’-এর মতে, গ্রিসে এ রকম প্রায় ১০,০০০ মানুষ অবৈধভাবে বসবাস করছে।
গ্রিস সরকার দেশটিতে অবৈধভাবে বসবাস করা পাকিস্তানিদের নিজ দেশে ফিরিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। গত জুলাই মাসে অবৈধ পাকিস্তানিদের নিয়ে প্রথম বিমানটি এথেন্স ছেড়ে যায়। ওই ফ্লাইটে ৩০ জন অবৈধ পাকিস্তানিকে নিজ জন্মভূমিতে ফেরত পাঠানো হয়েছে। এটা শুধু প্রথম ঘটনা, একইভাবে অবৈধ সব পাকিস্তানিকে দেশে ফেরত পাঠাবে গ্রিস।
সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া।