Monday, March 27, 2023
spot_img
Homeধর্মশয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে বাঁচার উপায়

শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে বাঁচার উপায়

শয়তান মানুষের আজন্ম শত্রু। তার যুদ্ধ কিয়ামত অবধি চলতে থাকবে। এ ব্যাপারে সে আল্লাহর সঙ্গে শপথ করেছে। শয়তান তার এই শপথকে বিভিন্নভাবে বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করে। মুমিনের ঈমানের মধ্যে সে ওয়াসওয়াসা সৃষ্টি করে। পবিত্রতা অর্জন করার পরে সেখানে কুমন্ত্রণা দেয়। নামাজের মাঝে বিভিন্নভাবে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে—এভাবে তার চেষ্টা প্রতিনিয়ত চলতে থাকে।

নিম্নে শয়তানের ওয়াসওয়াসা থেকে বাঁচার উপায় উল্লেখ করা হলো—

ঈমানের ওয়াসওয়াসা

শয়তান যদি কারো ঈমানের মাঝে ওয়াসওয়াসা সৃষ্টি করে, সে ক্ষেত্রে কী করব? শয়তানের প্রথম টার্গেট থাকে মানুষের ঈমান ধ্বংস করা। সে জন্য তার প্রথম মিশন শুরু হয় ঈমান নষ্ট করা দিয়ে। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের কারো কাছে শয়তান আসতে পারে এবং সে বলতে পারে, এ বস্তু কে সৃষ্টি করেছে? ওই বস্তু কে সৃষ্টি করেছে? এরূপ প্রশ্ন করতে করতে শেষ পর্যন্ত বলে বসবে, তোমাদের প্রতিপালককে কে সৃষ্টি করেছে? যখন ব্যাপারটি এ স্তরে পৌঁছে যাবে, তখন সে যেন অবশ্যই আল্লাহর কাছে আশ্রয় চায় এবং বিরত হয়ে যায়।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৩২৭৬)

পবিত্রতায় ওয়াসওয়াসা

শয়তান মুসল্লিকে অজু করার পরে বিভ্রান্ত করে। অজুতে পরিপূর্ণ হাত ধৌত করা হয়েছে কি হয়নি? মাথা কতটুকু মাসাক করা হয়েছে? পায়ের নিচ দিয়ে সম্ভবত কিছু অংশ ধোয়া হয়নি? নামাজ শুরু করার পর তার অগোচরে অজু ভেঙে গেছে কি না—এভাবেই তার মনে বিভিন্ন ধরনের সন্দেহ সৃষ্টি করে। আব্বাদ ইবনে তামিম (রহ.)-এর চাচা থেকে বর্ণিত, একদা আল্লাহর রাসুল (সা.)-এর কাছে এক ব্যক্তি সম্পর্কে বলা হলো যে তার মনে হয়েছিল যেন নামাজের মধ্যে কিছু হয়ে গিয়েছিল। তিনি বললেন, সে যেন ফিরে না যায়, যতক্ষণ না শব্দ শোনে বা দুর্গন্ধ পায় (অর্থাৎ পূর্ণ নিশ্চিত হওয়ার আগে নামাজ ছাড়বে না)। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১৩৭)

নামাজে কুমন্ত্রণা

মুসল্লিকে নামাজে উদাসীন করার জন্য শয়তান তার সর্বোচ্চ শক্তি বিনিয়োগ করে। এ ক্ষেত্রে সে অত্যন্ত চৌকসভাবে তার কূটকৌশল পরিচালনা করে। রাসুল (সা.) সেই শয়তানের নাম বলে গেছেন। তার নাম হচ্ছে ‘খিনজাব’। এই দুষ্ট জিন মানুষকে নামাজের মাঝে কুমন্ত্রণা দেয়। তার এই কুমন্ত্রণা থেকে বাঁচার জন্য প্রিয় নবী (সা.) আমাদের দিকনির্দেশনা দিয়ে গেছেন। আবদুল আলা (রহ.) বর্ণনা করেন যে ওসমান ইবনে আবুল আস (রা.) নবী (সা.)-এর কাছে এসে বলেন, হে আল্লাহর রাসুল, শয়তান আমার নামাজ ও কিরাতের মধ্যে বাধা হয়ে দাঁড়ায় এবং সব কিছুতে গোলমাল বাধিয়ে দেয়। তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, এটা এক (প্রকারের) শয়তান যার নাম ‘খিনজাব’। যে সময় তুমি তার উপস্থিতি বুঝতে পারবে তখন (আউজুবিল্লাহ পড়ে) তার অনিষ্ট হতে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চেয়ে, তিনবার তোমার বাম পাশে থু থু ফেলবে। তিনি বলেন, তার পর আমি তা করলাম, আর আল্লাহ আমার হতে তা দূর করে দিলেন। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৫৬৩১)

এখানেই থুতু ফেলার কথা এসেছে। নামাজে থু থু খেলা বলতে মুখ থেকে কোনো কিছু বের করতে হবে এমন নয়। বরং বাম দিকে সামান্য একটু মাথা হেলিয়ে থু থু করার ভঙ্গি করবে। আর এর আগে মনে মনে তিনবার আউজুবিল্লাহ পড়ে নেবে।

আল্লাহ তাআলা আমাদের তাঁর খাঁটি বান্দা হয়ে বেঁচে থাকার তাওফিক দান করুন।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments