অনেক হাদিসে এ রাতের আমল ও ফজিলত বর্ণিত হয়েছে।
১. নামাজ আদায় করা
লাইলাতুল বরাত উপলক্ষে বিশেষ কোনো নামাজ নেই। অন্য সব রাতের মতো সাধ্যমতো নফল নামাজ আদায় করা উত্তম। আলা ইবনে হারিস (রহ.) থেকে বর্ণিত, উম্মুল মুমিমিন আয়েশা (রা.) বলেন, একবার রাসুল (সা.) রাতে নামাজে দাঁড়ালেন এবং এত দীর্ঘ সিজদা করেন যে আমার ধারণা হলো তিনি হয়তো মৃত্যুবরণ করেছেন।
২. কবর জিয়ারত করা
লাইলাতুল বরাতে কবর জিয়ারত করা যায়। কবর জিয়ারতে মৃত্যুর কথা স্মরণ হয়। আমলের প্রতি আগ্রহ বাড়ে।
৩. বেশি বেশি দোয়া করা
লাইলাতুল বরাত হলো জাহান্নাম থেকে মুক্তির রাত। এ রাতে বেশি পরিমাণে তাওবা-ইস্তিগফার করতে হয়। রাব্বুল আলামিনের দরবারে হাত তুলে প্রার্থনা করতে হয়। আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, পাঁচটি রাত এমন আছে যে রাতে বান্দার কোনো দোয়া ফেরত দেওয়া হয় না। আর তা হলো জুমার রাতের দোয়া, রজব মাসের প্রথম রাতের দোয়া, নিসফা শাবান অর্থাৎ অর্ধ শাবানের দোয়া, ঈদুল ফিতর রাতের দোয়া, ঈদুল আজহা রাতের দোয়া। (মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক, হাদিস : ৭৯২৭)
৪. রাতে ইবাদত দিনে রোজা
লাইলাতুল বরাতে নফল নামাজ, কোরআন তিলাওয়াত, জিকির-আজকার ইত্যাদি আমলে মশগুল থাকতে হয়। আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে ক্ষমা চেয়ে নিতে হয়। বিশেষ রহমত লুফে নিতে হয় এবং দিনের বেলা রোজা রাখতে হয়। আলী বিন আবু তালিব (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, যখন শাবান মাসের অর্ধেকের রজনী আসে তখন তোমরা রাতে নামাজ পড়ো আর দিনের বেলা রোজা রাখো। নিশ্চয়ই আল্লাহ এ রাতে সূর্য ডোবার সঙ্গে সঙ্গে পৃথিবীর আসমানে এসে বলেন, কোনো গুনাহ ক্ষমাপ্রার্থী আছে কি আমার কাছে? আমি তাকে ক্ষমা করে দেব। কোনো রিজিকপ্রার্থী আছে কি? আমি তাকে রিজিক দেব। কোনো বিপদগ্রস্ত মুক্তি পেতে চায় কি? আমি তাকে বিপদ মুক্ত করে দেব। আছে কি এমন? আছে কি তেমন? এমন বলতে থাকেন ফজর পর্যন্ত। (তিরমিজি, হাদিস : ১৩৮৮; শুআবুল ঈমান, হাদিস : ৩৮২২)
এ রাত ঘিরে সমাজে প্রচলিত অনেক কুসংস্কার ও বিদআত আছে। বাড়াবাড়ি ও ছাড়াছাড়ি বিষয়ে সবাইকে সতর্ক হওয়া উচিত।