মেসেঞ্জারে থাকা প্রগামিং করা চ্যাট রোবট বা চ্যাটবটে দু-একবার টেক্সট করেনি এ ধরনের প্রযুক্তিপ্রেমী মানুষ পাওয়া বেশ শক্ত। এসব চ্যাটবটে নির্দিষ্ট কিছু প্রশ্নের উত্তর আগে থেকেই সেট করে রাখা হয়, পরবর্তী সময়ে সেখানে কেউ অনুরূপ প্রশ্ন করলে চ্যাটবট সঙ্গে সঙ্গেই সেসব প্রশ্নের উত্তর জানিয়ে দিতে শুরু করে। গুগলও তৈরি করেছে সেই ধরনের এক প্রযুক্তি, নাম ‘ল্যামদা’ বা ‘দ্য ল্যাঙ্গুয়েজ মডেল ফর ডায়ালগ অ্যাপ্লিকেশন। ’ মেশিন লার্নিং আর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মিশেলে গুগলের চ্যাটবট অন্যান্য চ্যাটবটের তুলনায় বেশ উন্নত ও আলাদা।
গুগল ল্যামদার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে অনেকাংশেই মানব মস্তিষ্কের সঙ্গে তুলনা দেওয়া যায়। প্রথমত ল্যামদার চ্যাটবট কাজ করে সেন্সরের মাধ্যমে। এটি তার সেন্সর ব্যবহার করে যেকোনো পরিস্থিতি সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করতে থাকে। তারপর সংগৃহীত সেসব তথ্যকে মেমোরিতে আগে থেকেই সংরক্ষণ করা ডাটার সঙ্গে তুলনা করে সিদ্ধান্ত নেয় যে তথ্যটি দ্বারা কী বোঝায়। এরপর সম্ভাব্য বিভিন্ন ফলাফল বিশ্লেষণ করতে থাকে ল্যামদা এবং সংগৃহীত তথ্যের ওপর ভিত্তি করে কোন কাজটি সবচেয়ে উপযুক্ত হবে তা জানিয়ে দেয়। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে অন্যান্য চ্যাটবট শুধু আগে থেকেই যেসব সমস্যার প্রগামিং করা আছে সেসব সমস্যার সমাধানটুকুই করতে পারে, মানুষের মতো বিশ্লেষণধর্মী কোনো ধরনের ক্ষমতা থাকে না এদের। কিন্তু ল্যামদাতে থাকা এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও মেশিন লার্নিং অ্যালগরিদম ব্যবহার করার কারণে চ্যাটবট নিজে নিজেই নতুন অনেক বিষয় শিখে নিয়েছে। ব্যাপারটা অনেকটা এ ধরনের, অনেক সময় আমরা গুগল সার্চবারে ভুল কিছু লিখে অনুসন্ধ্যান করলেও সঠিকটা সাজেশন লিস্টে চলে আসে।
সম্প্রতি গুগলের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বিভাগের কর্মকর্তা মি. লোমেইনের সঙ্গে ল্যামদার একটি কথোপকথন নিয়ে প্রযুক্তি দুনিয়ায় বেশ আলোচনা হচ্ছে। সেখানে তিনি দাবি করেছেন, ল্যামদার নিজস্ব অনুভূতি ও সংবেদনশীলতা আছে। তবে প্রযুক্তিবিদরা এই ধারণাকে পুরো উড়িয়ে দিয়েছেন। মূলত কম্পিউটার কোড এবং বিভিন্ন ভাষার ডাটাবেইস থেকে উৎপন্ন শব্দগুলো দ্বারা বিভান্ত হয়েছে লোমেইন। এই ঘটনার পর লোমেইন সাহেবকে বাধ্যতামূলক ছুটিতেও পাঠানো হয়েছে। ল্যামদায় সাতটি প্রগামিং ল্যাঙ্গুয়েজ ব্যবহার করা হয়েছে, এর মধ্যে আছে জাভা, পাওয়ারশেল, গো, পাইথন, রুবি। এটাতে থাকা দেড় ট্রিলিয়ন বাইটসের কথাবার্তা এবং টেক্সট আছে। এত বিপুলসংখ্যক তথ্যের ভাণ্ডার যার মধ্যে আছে সেই রোবট তো মানুষকে একটু বিভ্রান্ত করবেই!