Saturday, July 27, 2024
spot_img
Homeবিচিত্রলন্ডনের সবচেয়ে ছোট মাইক্রোফ্ল্যাট কিনতে চান?

লন্ডনের সবচেয়ে ছোট মাইক্রোফ্ল্যাট কিনতে চান?

কল্পনা করুন মাত্র ৭ বর্গমিটারের একটি ফ্ল্যাট, যেখানে আপনি গোটা একটা সংসার পেতে ফেলেছেন। ফ্ল্যাটে রয়েছে একটি বিছানা, একটি টয়লেট, একটি সিঙ্ক, একটি মাইক্রোওয়েভ এবং কিছু স্টোরেজের জায়গা। কিন্তু রান্নাঘর বা নিজের শখের জিনিসপত্র রাখার কোনো বাড়তি জায়গা নেই। বা ধরুন ফ্ল্যাটে কেউ ঘুরতে এলো তিনি যদি হঠাৎ বসার কোনো জায়গা খোঁজেন তাও মিলবে না। এটি লন্ডনের সবচেয়ে ছোট মাইক্রোফ্ল্যাটের জীবন। পূর্ব লন্ডনে লোয়ার ক্ল্যাপটন এলাকায় অবস্থিত এই ফ্ল্যাটটিকেই এর বিক্রেতারা মনে করছেন রাজধানীর মধ্যে সবচেয়ে ছোট ফ্ল্যাট।

এই ফ্ল্যাটের সবথেকে কম মূল্য দাঁড়িয়েছে ৫০ হাজার পাউন্ড, তবে ভবিষ্যতে এর দাম বাড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ ২০১৭ সালে এটি কেনা হয়েছিল ১ লক্ষ ৩ হাজার ৫০০ পাউন্ডে। সম্পত্তির দাম বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে লন্ডনে ছোট বাড়ির চাহিদা ক্রমেই বাড়ছে।স্থান সংকুলানের অভাবে বেশিরভাগ মানুষ ছোট ফ্ল্যাটবাড়ির দিকে ঝুঁকছেন। ক্ল্যাপটন ফ্ল্যাটটি সম্প্রতি সংস্কার করা হয়েছে।

বিছানা এবং দেয়ালের মধ্যবর্তী স্থানে কিছুটা জায়গা ফাঁকা রাখা হয়েছে, যাতে আপনি হাত পা মেলে শুতে পারেন। এছাড়া খাওয়া-দাওয়া করার জন্য একটি ভাঁজ করা টেবিল রাখা হয়েছে। একটি টয়লেট এবং শাওয়ারও রাখা হয়েছে ওই ছোট্ট জায়গার মধ্যে। মালিক ইতিমধ্যে প্রতি মাসে ৮০০ পাউন্ড করে ভাড়া পেয়ে ফ্ল্যাটের জন্য বিনিয়োগের টাকা পুনরুদ্ধার করেছেন। বর্তমান ভাড়াটিয়ারা বেশির ভাগ সময় অন্যত্র থাকেন এবং কাজের জায়গার কাছাকাছি হওয়ায় প্রতি সপ্তাহে মাত্র এক বা দুই রাত ফ্ল্যাটে কাটান। যদিও নিল হাডসন, একজন আবাসন বিশ্লেষক ক্রেতাদের সতর্ক করে বলেছেন যে এই ধরণের ফ্ল্যাট বসবাসের জন্য টেকসই নয়।

ক্ষুদ্র ফ্ল্যাটগুলি দীর্ঘমেয়াদী নয়। টিভি উপস্থাপক কার্স্টি অলসপ মজা করে বলেছেন, মানুষ যদি জিম, জেট ফ্লাইট, কফি এবং নেটফ্লিক্সের পিছনে কম খরচ করেন তাহলে সহজেই নিজেদের একটি বাড়ি কিনতে পারেন। কার্স্টি জানিয়েছেন, তিনি তার প্রথম ফ্ল্যাটটি যখন কিনেছিলেন, তখন বাড়ির গড় দাম ছিল ৫০ হাজার পাউন্ড এবং ফ্ল্যাটের আকার ছিল ৭৩.৪ বর্গ মিটার – ক্ল্যাপটন ফ্ল্যাটের চেয়ে যা প্রায় ১০ গুণ বড়। কিংস কলেজ লন্ডনের নগর গবেষণার অধ্যাপক ফিলিপ হাবার্ডের গবেষণা অনুসারে মাইক্রোফ্ল্যাটগুলি আরও জনপ্রিয় হয়ে উঠছে এবং তাদের আকার সঙ্কুচিত হচ্ছে। লন্ডনে প্রতি ১৫ টির মধ্যে একটি এক বেডরুমের অ্যাপার্টমেন্ট গড়ে ওঠে ৩৭ বর্গ মিটার জায়গার মধ্যে।

বর্তমানে স্থান সংকুলানের অভাবে যুক্তরাজ্যের সম্পত্তির মাঝারি আকার এই বছর থেকে ২৯ বর্গ মিটারে নেমে এসেছে। গবেষক হাবার্ড জানাচ্ছেন, ক্রেতারা এখন ৩৭ বর্গ মিটারের উপরে ফ্ল্যাট খোঁজার চেষ্টা করছেন। কারণ কম জানালা এবং বসবাসের জায়গার অভাব, সেই সঙ্গে ঘুমের পর্যাপ্ত জায়গা না থাকার জন্য ভাড়াটিয়াদের মানসিক স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলছে মাইক্রোফ্ল্যাটগুলি। ইয়র্ক ইউনিভার্সিটির সেন্টার ফর হাউজিং পলিসির রিসার্চ ফেলো জুলিয়া রাগ বলেছেন, মাইক্রোফ্ল্যাটগুলিকে আবাসনের বিকল্প সমাধান হিসাবে দেখা হলে এটি একটি উদ্বেগজনক পরিণতির দিকে নিয়ে যেতে পারে।

কারণ এটি বসবাসযোগ্য স্থান কখনোই হয়ে উঠতে পারবে না। এই ধরণের ফ্ল্যাটে আরাম বা সুবিধার অভাব রয়েছে। ফ্ল্যাটের আশেপাশের এলাকাটি বার এবং ক্যাফে দ্বারা সুসজ্জিত হতে পারে তবে থাকার জন্য এইগুলির উপর জীবন নির্ভর করা উচিত নয় বলেই মনে করেন রিসার্চ ফেলো জুলিয়া রাগ।

সূত্র: www.theguardian.com

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments