রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের চুলি্লপাত্র (রিয়্যাক্টর ভেসেল) ও একটি স্টিম জেনারেটর রাশিয়া থেকে সমুদ্রপথে পাঠানো হয়েছে। ১৪ হাজার কিলোমিটার সমুদ্রপথ অতিক্রম করে চলতি বছরের শেষে দিকে রূপপুর প্রকল্প এলাকায় এসে পৌঁছাবে। করোনা মহামারির মধ্যেও কেন্দ্রটির নির্মাণ কাজ করছে দেশি ও রাশিয়ান শ্রমিকরা।
আজ বৃহস্পতিবার রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পরমাণু শক্তি করপোরেশনের (রোসাটম) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির প্রথম ইউনিট ২০২৩ সালে এবং দ্বিতীয় ইউনিট ২০২৪ সালে উত্পাদনে আসার কথা রয়েছে। বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির মূল যন্ত্রাংশই পারমাণবিক চুলি্ল এবং স্টিম জেনারেটর। এই দুটি যন্ত্রাংশ দেশে নির্ধারিত সময়ে আসায় মনে করা হচ্ছে, সময়ের মধ্যেই কেন্দ্রটি উত্পাদনে আসবে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, পারমাণবিক চুলি্ল পাত্রটির ওজন ৩৩৩ দশমিক ৬ টন এবং স্টিম জেনারেটরের ওজন ৩৪০ টন। এধরনের যন্ত্র স্থানান্তর এবং পরিবহন একটি জটিল প্রক্রিয়া। বিশেষভাবে চুলি্ল পাত্র এবং স্টিম জেনারেটর স্বয়ংক্রিয় যানে করে ভোলগোদোনস্ক এর সিমলিয়ান্সক এর একটি জেটিতে পাঠানো হয়। সেখান থেকে এগুলো নভোরোসিয়েস্কে পৌঁছাবে। সেখান থেকে কৃষ্ঞসাগর এবং সুয়েজ ক্যানেল হয়ে বাংলাদেশের রূপপুর পারমাণবিক বিদু্যৎ কেন্দ্রে পৌঁছাবে।
রোসাটমের যন্ত্র উত্পাদনকারী শাখা জেএসসি অটোমেনারগোম্যাশ থেকে জানানো হয়েছে, রাশিয়ার ভোলগোদোনস্ক এর অটোম্যাসের কারখানায় এগুলো প্রস্তুত করা হয়েছে। ভিভিইআর-১২০০ প্রযুক্তিকে সবথেকে নিরাপদ বলে উলে্লখ করছে রাশিয়া।
জেএসসি অটোমেনারগোম্যাশ এর মহাপরিচালক আন্দ্রেই নিকিপেলোভ এ বিষয়ে বলেছেন, করোনা ভাইরাসের মধ্যেও তারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই যন্ত্রাংশ প্রস্তুত করে বাংলাদেশে পাঠিয়েছেন। সময়ের সঙ্গে তারা যন্ত্রাংশের গুনগত মান বাজায় রাখার জন্যও সচেষ্ট থাকেন। এক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। তবে ১৪ হাজার কিলোমিটার সমুদ্রপথ অতিক্রম করে এগুলো পৌঁছতে চলতি বছরের শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
রোসাটম বলছে, ভিভিইআর-১২০০ প্রযুক্তির পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রর নিরাপত্তা ব্যবস্থা কল্পনাতীত। এই প্রযুক্তিকে তৃতীয় প্রজন্মের চেয়ে অগ্রগামী বা থ্রি প্লাস বলা হচ্ছে। পুরোপুরি বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলেও কোনও রকম অপরারেটরের সাহায্য ছাড়াই এ ধরনের প্রযুক্তি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে।
উলে্লখ্য, সব মিলিয়ে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে দুই হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে।