পশ্চিমা দেশগুলোর নিষেধাজ্ঞার জবাবে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তার দেশের ‘পারমাণবিক সুরক্ষামূলক’ অস্ত্রসম্ভারের ওপর ‘বিশেষ সতর্কতা’ জারি করেছেন। এটি রাশিয়ার ‘কৌশলগত ক্ষেপণাস্ত্র সম্ভারের’ ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সতর্কতা। ‘ন্যাটোর আগ্রাসনের জবাবে’ এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে পুতিন জানান। রাশিয়ার এ ঘোষণার অর্থ পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করা হবেই তা নয়।
তারপরও যুক্তরাষ্ট্র ‘অগ্রহণযোগ্য’ আখ্যা দিয়ে এর নিন্দা জানিয়েছে।
ইউক্রেনে রুশ হামলার ৪র্থ দিনে দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খারকিভে প্রচণ্ড সংঘাতের মধ্যে রাশিয়ার লৌহমানব হিসেবে পরিচিত পুতিনের এ নির্দেশনা এলো। রাজধানী কিয়েভসহ ইউক্রেনের বিভিন্ন অঞ্চলে দৃঢ় প্রতিরোধের সম্মুখীন হচ্ছে হামলাকারী রুশ সেনারা।
রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শুইগুসহ শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনার সময় আজ রবিবার পুতিন পরমাণু অস্ত্রসম্ভারের প্রস্তুতির কথা বলেন। এসময় রুশ নেতা বলেন, পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার প্রতি ‘অবন্ধুসুলভ পদক্ষেপ’ নিয়েছে এবং ‘অন্যায্য নিষেধাজ্ঞা’ আরোপ করেছে।
প্রসঙ্গত, ইউক্রেনে হামলার শাস্তি হিসেবে দেশটির পশ্চিমা মিত্ররা রাশিয়ার বিরুদ্ধে নজিরবিহীন আর্থিক নিষেধজ্ঞার ঘোষণা দিয়েছে। এর কিছুটা কার্যকর করা শুরুও হয়ে গেছে।
এদিকে আজ রাশিয়ার সঙ্গে প্রতিবেশি বেলারুশের মিন্স্কে যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনায় বসতে রাজি হননি ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভোলোদেমির জেলেনস্কি। তিনি বলেছেন, যে মাটি থেকে রাশিয়ার বাহিনী ইউক্রেনে ক্ষেপণাস্ত্র ও গোলা ছুড়ছে সেখানে গিয়ে আলোচনা হতে পারে না। এ ঘোষণার পর ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট জানান, ইউক্রেন-বেলারুশ সীমান্তে রাশিয়ার প্রতিনিধি দলের সঙ্গে দেখা করবে ইউক্রেনের প্রতিনিধি দল।
এক বিবৃতিতে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি জানান, বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্কোর সঙ্গে আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিবৃতিটিতে বলা হয়েছে, ‘কোনো পূর্ব শর্ত ছাড়াই ইউক্রেন-বেলারুশ সীমান্তে, প্রিপিয়াত নদীর কাছে রাশিয়ার প্রতিনিধি দলের সঙ্গে দেখা করবে ইউক্রেনের প্রতিনিধি দল। ’
‘ইউক্রেনীয় প্রতিনিধি দলের সফর, আলোচনা এবং ফিরে আসা পর্যন্ত সব যুদ্ধবিমান, হেলিকপ্টার এবং বেলারুশ অঞ্চলে মোতায়েন সব ক্ষেপণাস্ত্র নিস্ক্রিয় থাকবে নিশ্চিত করে দায়িত্ব নিয়েছেন প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্কো। ’
সম্ভাব্য এই আলোচনার ব্যাপারে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো বিবৃতি প্রকাশ করেনি রাশিয়া বা বেলারুশ।
প্রতিবেশী বেলারুশে যুদ্ধ নিয়ে আলোচনায় বসতে অস্বীকৃতি জানিয়ে জেলেনস্কি বিকল্প ওয়ারশ, ব্রাতিস্লাভা, ইস্তাম্বুল, বুদাপেস্ট বা বাকু’র কথা বলেছিলেন। তিনি মন্তব্য করেন মিনস্ককে আলোচনার জায়গা হিসেবে বেছে নিয়েছে রাশিয়া, বেলারুশও নয়, ইউক্রেনও নয়। এছাড়াও ইউক্রেন সেনাবাহিনীকে অবশ্যই আÍসমর্পণ করতে হবে- রাশিয়ার এমন শর্ত মানতেও রাজি নয় বলে জানায় ইউক্রেন। দেশটি বলে, তারা কোনো চূড়ান্ত বা অগ্রহণযোগ্য শর্তাবলীতে রাজি নয়। সূত্র: এএফপি, বিবিসি