আমাদের চারপাশে ফুটপাতগুলোর এমন অবস্থা যে সেগুলো পথচারীদের ব্যবহারের সুযোগ নেই। অথচ ফুটপাতগুলো বানানো হয়েছে মানুষের যাতায়াত নির্বিঘ্ন করার জন্য। টং দোকান, পোশাকের দোকান, খাবারের দোকান, বইয়ের দোকানসহ নানা ধরনের দোকানের দৌরাত্ম্যের কারণে কোথাও পা ফেলার সুযোগ নেই পথচারীদের। পথচারীরা বাধ্য হয়ে সড়কে নেমে পড়ে।
এর ফলে বিরূপ প্রভাব পড়ে গাড়ি চলাচলে। প্রধান সড়কে লেগে যায় যানজট। অথচ যারা এই ফুটপাত ব্যবহার করছে তারা মনে করছে না যে এটি একটি অপরাধ। মানুষের হক নষ্ট করার কারণে আল্লাহর কাছে এর জন্য জবাব দিতে হবে! ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) মিম্বারে উঠে আওয়াজ দিয়ে বলেন, হে লোকসকল! যারা মুখে ইসলাম কবুল করেছ কিন্তু অন্তরে এখনো ঈমান মজবুত হয়নি! তোমরা মুসলমানদের কষ্ট দেবে না, তাদের লজ্জা দেবে না এবং তাদের গোপন দোষ অনুসন্ধানে প্রবৃত্ত হবে না। কেননা যে ব্যক্তি তার মুসলিম ভাইয়ের গোপন দোষ অনুসন্ধানে নিয়োজিত হবে আল্লাহ তাআলা তার গোপন দোষ প্রকাশ করে দেবেন। আর যে ব্যক্তির দোষ আল্লাহ তাআলা প্রকাশ করে দেবেন তাকে অপমান করে ছাড়বেন, সে তার উটের হাওদার ভেতরে অবস্থান করে থাকলেও। (তিরমিজি, হাদিস : ২০৩২)
সড়ক ও ফুটপাতের ক্ষেত্রে সরকারি যেসব নিয়ম আছে তা মানা আবশ্যক। কারণ আমির ও শাসকের আনুগত্য করা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্যের (শর্তসাপেক্ষে) অন্তর্ভুক্ত। তা আমাদের জন্য মানা আবশ্যক। কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘হে ঈমানদাররা! আল্লাহর নির্দেশ মান্য করো, নির্দেশ মান্য করো রাসুলের এবং তোমাদের মধ্যে যারা বিচারক তাদের। ’ (সুরা : নিসা, আয়াত : ৫৯)
একজন মানুষ যখন নিয়ম ভঙ্গ করে অবৈধ স্থানে দোকান বসায়, সে সঙ্গে সঙ্গে চারটি গুনাহ করল। ১. চুক্তি ভঙ্গ। ২. ওয়াদা খেলাফ। ৩. অন্যকে কষ্ট দেওয়া। ৪. সড়কের অবৈধ ব্যবহার। অথচ আমরা কোনো কিছুর তোয়াক্কা না করে দিনরাত আমাদের পাপের বোঝা ভারী করছি। আমাদের রাসুল (সা.) রাস্তার হকের ব্যাপারে কী বলেছেন! আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, নবীজি (সা.) বলেছেন, খবরদার! তোমরা রাস্তায় বসে থেকে রাস্তা দখল করবে না। একান্ত যদি বসতেই হয়, তাহলে রাস্তার হক আদায় করবে। (বুখারি, হাদিস : ২৪৬৫)
আল্লাহ তাআলা আমাদের জীবনের প্রতিটি পদে তাঁর হুকুম মেনে চলার তাওফিক দান করুন।