মুমিন হওয়ার জন্য ‘মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহর রাসুল’ সাক্ষ্য দেওয়া অপরিহার্য। আর এই সাক্ষ্যের দাবি হলো মহানবী (সা.)-এর নিঃশর্ত আনুগত্য। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমার প্রতিপালকের শপথ! তারা মুমিন হবে না যতক্ষণ পর্যন্ত তারা তাদের নিজেদের বিবাদ-বিসংবাদের বিচার ভার তোমার ওপর অর্পণ না করে; অতঃপর তোমার সিদ্ধান্ত সম্পর্কে তাদের মনে কোনো দ্বিধা না থাকে এবং সর্বান্তঃকরণে তা মেনে নেয়। ’ (সুরা নিসা, আয়াত : ৬৫)
কোরআনের একাধিক আয়াতে মহানবী (সা.)-এর আনুগত্যের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
যেমন ইরশাদ হয়েছে, ‘হে মুমিনরা, তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্য কোরো। ’ (সুরা আনফাল, আয়াত : ২০)
আর রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর আনুগত্যের অর্থ হলো তাঁর আদেশ ও নিষেধ মান্য করা। মহান আল্লাহ বলেন, ‘রাসুল তোমাদের যা দেয় তা গ্রহণ কোরো এবং যা থেকে নিষেধ করেন তা থেকে বিরত থাকো। ’ (সুরা হাশর, আয়াত : ৭)
পবিত্র কোরআনে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর আনুগত্যের বেশ কিছু কারণ ও উপকারিতা বর্ণনা করা হয়েছে। যার কয়েকটি হলো—
১. আল্লাহর আনুগত্যের নামান্তর : পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘যে রাসুলের আনুগত্য করল, সে আল্লাহরই আনুগত্য করল। ’ (সুরা নিসা, আয়াত : ৮০)
২. আল্লাহর ভালোবাসা লাভ : ইরশাদ হয়েছে, ‘বলুন! তোমরা যদি আল্লাহকে ভালোবাসো তবে আমার আনুগত্য কোরো। আল্লাহ তোমাদের ভালোবাসবেন এবং তোমাদের পাপ মার্জনা করবেন। আল্লাহ ক্ষমাশীল দয়ালু। ’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত : ৩১)
৩. আল্লাহর অনুগ্রহ লাভ : আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্য কোরো। যেন তোমরা অনুগ্রহপ্রাপ্ত হও। ’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত : ১৩২)
৪. সুপথ লাভ : ইরশাদ হয়েছে, ‘যদি তোমরা তাঁর আনুগত্য করো সুপথ পাবে। ’ (সুরা নুর, আয়াত : ৫৪)
৫. পরকালে উত্তম পরিণতি : আল্লাহ বলেন, ‘কেউ আল্লাহ ও রাসুলের আনুগত্য করলে সে নবী, সত্যনিষ্ঠ, শহীদ ও সৎকর্মপরায়ণ, যাদের প্রতি আল্লাহ অনুগ্রহ করেছেন তাদের সঙ্গী হবে এবং তারা কত উত্তম সঙ্গী। ’ (সুরা নিসা, আয়াত :৬৯)
শায়খ ইবনে উসাইমিন (রহ.) বলেন, ‘এই সাক্ষ্যের দাবি হলো রাসুলুল্লাহ (সা.) যে সংবাদ দিয়েছেন তাতে তাঁকে সত্যায়ন করা, তাঁর আদেশগুলো মান্য করা এবং তিনি যা থেকে নিষেধ করেছেন তা পরিহার করা। ’ (শরহু সালাসাতিল উসুল, পৃষ্ঠা ৭৫)
আল-মাউসুয়াতুল আকাদিয়া