মিয়ানমারের রাখাইনে আগুন দিয়ে একটি গ্রাম পুড়িয়ে দিয়েছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। একই সঙ্গে দুজন বেসামরিক লোককে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কিউকতাউ শহর এলাকার ইয়াঙ্গুন-সিত্তওয়ে সড়কের পাশে অবস্থিত ওই গ্রামে আগুন দেয় মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। নিহতদের স্বজনদের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে থাইল্যান্ডভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য ইরাওয়াদ্দি।
মিয়ানমার সেনাদের হামলায় ভুক্তভোগী কো মং নিন্ত উইনের বাবা ইউ নিও মাং হ্লা বলেন, ‘আমার ছেলে মোটরসাইকেলে চড়ে কাজ থেকে ফিরছিল। বিকেল ৫টার দিকে কিউকতাওয়ে সেনা সদস্যদের মুখোমুখি হয় সে। তারা তাকে পথ দেখাতে বলে। গ্রামের কাছে একটি বিস্ফোরণ হলে হামলা চালায় সেনারা।’
এর পরপরই সেনাবাহিনীর ট্রাকগুলো পুরো গ্রাম ঘিরে ফেলে এবং গ্রামবাসীকে ঘরবাড়ি ছেড়ে যেতে বলা হয়। এরপর সেনারা স্থানীয়দের ঘরের মালামাল লুট করে এবং বাড়িগুলোতে আগুন জ্বালিয়ে দেয়।
ইউ নিও মাং হ্লা জানান, গ্রামের প্রায় ৪০০ ঘরের মধ্যে ২০০ এর বেশি ঘর আগুনে পুড়ে গেছে। তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় ২০০ এর বেশি ঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা এর তালিকাও করতে পারব না। অনেকেই গ্রাম ছেড়ে পালিয়েছেন। কিছু ঘর পোড়েনি, কারণ গ্রামের লোকজন ফিরে এসে আগুন নিভিয়ে ফেলেছিলেন। সেনারা বলেছিল, কেউ আগুন নেভানোর চেষ্টা করলে তাকে গুলি করা হবে।‘
এদিন মিয়ানমার সেনাদের বর্বরতার শিকার আরেক ভুক্তভোগীর নাম কো খিন মং থিন (৩২) ঘরে পালিয়ে থাকার সময় সেনাদের হাতে ধরা পড়েন।
তবে বরাবরের মতো এবারও ইচ্ছাকৃত হামলা ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ অস্বীকার করেছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। তাদের মুখপাত্র মেজর জেনারেল জাও মিন তুন এক সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেছেন, রাস্তার পাশে পুঁতে রাখা বোমার মাধ্যমে সেনাদের ওপর আরাকান আর্মির সদস্যরা হামলা চালিয়েছিল। এতে দুই পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। গতকাল শুক্রবার সকালে ঘটনাস্থল থেকে স্থানীয় দুজনের মরদেহ এবং একটি বন্দুক উদ্ধার করা হয়েছে।
নিহতদের শরীরে গুলিবিদ্ধ হওয়া ক্ষতচিহ্ন রয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ দুটি কিউকতাওয়ে পাঠানো হয়েছে।