নামাজ বেহেশতের চাবি। বিশেষ করে জামাতের সহিত নামাজ আদায় করার ব্যাপারে ইসলামে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, যাঁর হাতে আমার প্রাণ, তাঁর শপথ! আমার ইচ্ছা হয়, জ্বালানি কাঠ সংগ্রহ করতে আদেশ দিই, অতঃপর নামাজ কায়েমের আদেশ দিই, অতঃপর নামাজের আজান দেওয়া হোক, অতঃপর এক ব্যক্তিকে লোকদের ইমামত করার নির্দেশ দিই। অতঃপর আমি লোকদের নিকট যাই এবং তাদের (যারা নামাজে শামিল হয়নি) ঘর জ্বালিয়ে দিই।
যে মহান সত্তার হাতে আমার প্রাণ, তাঁর কসম! যদি তাদের কেউ জানত যে একটি গোশতহীন মোটা হাড় বা ছাগলের ভালো দুটি পা পাবে তাহলে অবশ্যই সে এশার নামাজের জামাতেও হাজির হতো। (বুখারি, হাদিস : ৬৪৪)
তাই ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা মসজিদে গিয়ে জামাতের সহিত নামাজ আদায় করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন এবং একে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেন। অনেক সময় দেখা যায়, কোনো ব্যস্ততার কারণে মসজিদে যেতে যেতে জামাত দাঁড়িয়ে যায়। তখন অনেকেই রাকাত হারানোর ভয়ে দৌড়াতে শুরু করেন। কিন্তু মহানবী (সা.) এমনটি করতে নিষেধ করেছেন।
আবু কাতাদা (রা.) বলেন, একবার আমরা নবী (সা.)-এর সঙ্গে নামাজ আদায় করছিলাম। হঠাৎ তিনি লোকদের (আগমনের) আওয়াজ শুনতে পেলেন। নামাজ শেষে তিনি জিজ্ঞেস করেন তোমাদের কী হয়েছিল? তাঁরা বলেন, আমরা নামাজের জন্য তাড়াহুড়া করে আসছিলাম। নবী (সা.) বলেন, এরূপ করবে না। যখন নামাজে আসবে ধীরস্থিরভাবে আসবে (ইমামের সঙ্গে) যতটুকু পাও আদায় করবে, আর যতটুকু ছুটে যায় তা (ইমামের সালাম ফিরানোর পর) পূর্ণ করবে। (বুখারি, হাদিস : ৬৩৫)
অন্য হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন তোমরা ইকামত শুনতে পাবে, তখন নামাজের দিকে চলে আসবে, তোমাদের উচিত স্থিরতা ও গাম্ভীর্য অবলম্বন করা। তাড়াহুড়া করবে না। ইমামের সঙ্গে যতটুকু পাও তা আদায় করবে, আর যা ছুটে যায় তা পূর্ণ করবে। (বুখারি, হাদিস : ৬৩৬)
তা ছাড়া মসজিদ হলো মহান আল্লাহর ঘর। নামাজ হলো গাম্ভীর্যপূর্ণ একটি ইবাদত। মসজিদে এসে নামাজ আদায়ের ক্ষেত্রে এগুলো লক্ষ্য রাখা আবশ্যক। তাড়াহুড়া ও দৌড়াদৌড়ি ইবাদতের গাম্ভীর্যকে বিঘ্নিত করবে। খুব তাড়াহুড়া করে মসজিদে ঢুকতে গিয়ে কোনো দুর্ঘটনাও ঘটার আশঙ্কা রয়েছে। দুর্ঘটনা না ঘটলেও দৌড়ে যাওয়ার কারণে অনেকের শ্বাস-প্রশ্বাসে সমস্যা হয়, মনোস্থিরতা নষ্ট হয়। তাই নামাজে যাওয়ার ক্ষেত্রে একটু আগে আগেই যাওয়ার চেষ্টা করা উচিত। কোনো কারণে দেরি হয়ে গেলে অতিরিক্ত তাড়াহুড়া না করা উচিত।