সাহাবায়ে কেরাম থেকেও ফিদিয়া আদায়ের প্রমাণ পাওয়া যায়। সাবেত বুনানি (রহ.) বলেন, আনাস ইবনে মালেক (রা.) যখন বার্ধক্যের কারণে রোজা রাখতে সক্ষম ছিলেন না, তখন তিনি রোজা না রেখে (ফিদিয়া) খাবার দান করতেন।
ফিদিয়া আদায়ের বিধান
যেসব নারী-পুরুষ বার্ধক্যের কারণে দুর্বল বা অসুস্থ হয়ে মৃত্যু অবস্থায় উপনীত হয়, তাদের রোজা না রাখা বৈধ। তবে রোজার পরিবর্তে তারা ফিদিয়া আদায় করবে। ইমাম আবু হানিফা, শাফেয়ি ও আহমদ ইবনে হাম্বল (রহ.)-এর মতে ফিদিয়া আদায় করা ওয়াজিব। (কামুসুল ফিকহ : ৪/৪৫০)
রোজার ফিদিয়ার পরিমাণ
রোজার ফিদিয়া হচ্ছে একজন মিসকিনকে দুই বেলা ভরপেট খাবার খাওয়ানো।
ফিদিয়া আদায়ের পর সুস্থ হলে করণীয়
ফিদিয়া আদায় করার পর সুস্থ হয়ে গেলে ভাঙা রোজা কাজা করতে হবে; আগের ফিদিয়া প্রদান যথেষ্ট হবে না। তবে ফিদিয়া আদায়ের কারণে তার সওয়াব আমলনামায় থেকে যাবে।
ফিদিয়ার পরিবর্তে অন্য কেউ রোজা রাখার বিধান
সমাজে অনেক জায়গায় বদলি রোজার প্রচলন আছে। এটি ভিত্তিহীন। যার ওপর ফিদিয়া ওয়াজিব, তার পক্ষ থেকে তার অভিভাবক বা অন্য কেউ রোজা রেখে দিলে সেটা গ্রহণযোগ্য হবে না। (আপকে মাসায়েল : ৪/৬০৩)
ফিদিয়ার জন্য অসিয়ত করে যাওয়া জরুরি
ছুটে যাওয়া রোজার কাজা আদায় করতে না পারলে মৃত্যুর আগে ফিদিয়া আদায়ের অসিয়ত করে যাওয়া জরুরি। অসিয়ত করে না গেলে ওয়ারিশরা যদি মৃতের পক্ষ থেকে ফিদিয়া দেয় তাহলে আশা করা যায়, আল্লাহ তাআলা তা কবুল করবেন।
ফিদিয়া আদায়ে অক্ষম হলে করণীয়
ফিদিয়া আদায় করার মতো কোনো সম্পদ না থাকলে তাওবা-ইস্তিগফার করবে। সেই সঙ্গে এই নিয়ত রাখা যে ‘আল্লাহ তাআলা সচ্ছলতা দান করলে ফিদিয়া আদায় করে দেবো।’ অসচ্ছল অবস্থায়ই মারা গেলে আশা করা যায় আল্লাহ তাআলা তাকে ক্ষমা করে দেবেন। কারণ সাধ্যের বাইরে বান্দার ওপর আল্লাহ কোনো কিছু চাপিয়ে দেন না। (আহসানুল ফাতাওয়া : ৪/৪৪৯, আপকে মাসায়েল : ৪/৬০২)
আল্লাহ সব দুর্বল, বৃদ্ধ ও অসুস্থদের আরোগ্য দান করুন। সেই সঙ্গে যথাযথভাবে রোজার ফিদিয়া আদায়ের তাওফিক দান করুন। আমিন।