আপনি যার কাছে গিয়ে দাঁড়াবেন তার নামই বলে উঠবে রোবটিক নারী কণ্ঠ। হ্যাটের মধ্যে থাকবে একটি ফোন, সেটাই আপনার চেহারা চিনে নাম বলে দেবে। ২০১৭ সালে এই হ্যাট-ফোন প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করছিল ফেসবুক। মেনলো পার্কে ফেসবুকের অফিস রুমে হ্যাট ফোন প্রযুক্তিটি নিয়ে অভ্যন্তরীণভাবে অল্প কিছু কর্মী নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষাও চালিয়েছিলেন ইঞ্জিনিয়ার টমার লেভেন্ট।
তিনি এক মিটিংয়ে প্রযুক্তিটি ব্যবহার করে দেখান তাঁর সহকর্মীদের। একজনের সামনে গিয়ে তিনি দাঁড়ালে হ্যাটের সঙ্গে রাবার ব্যান্ড দিয়ে যুক্ত থাকা ক্যামেরার লেন্স পুরোটা ঘুরে ওই সহকর্মীর নাম ‘জ্যাক হাওয়ার্ড’ বলে উল্লেখ করে। প্রথমে বিষয়টিকে মজার ছলে নিলেও পরে তিনি বুঝতে পারেন এই প্রযুক্তি মোটেও হেলাফেলা করার মতো কিছু নয়।
কী কাজে লাগত?
আসলেই ফেসবুক হ্যাট-ফোন নামের ডিভাইসটি বাজারে আনলে মানুষ স্বল্প পরিচিত কারো নাম ভুলে যাওয়ার মতো বিড়ম্বনা থেকে বেঁচে যেত।তবে ছয় বছর পেরিয়ে গেলেও হ্যাট-ফোন নামের কোনো ডিভাইস বাজারে আসার নামগন্ধ নেই।
এই প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করা ইঞ্জিনিয়ার টমার লেভেন্ট এখন ফেসবুক ছেড়ে অ্যাপলে গেছেন। সেখানে এখন ভিশন প্রোকে আরো উন্নত করার কাজ করছেন।
বিপদটা কোথায়?
দৃষ্টিশক্তিহীন ব্যক্তিদের জন্য এই প্রযুক্তি ‘অন্ধের যষ্ঠি’ হিসেবে কাজ করতে পারে।দিন শেষে প্রযুক্তিটি কিন্তু বেশ বিপজ্জনক। অপরিচিত কারো সামনে গেলেই যদি নাম জানা যায়, তবে নাম ধরে সেই ব্যক্তির সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে থাকা প্রফাইলও বের করা সম্ভব। অর্থাৎ প্রযুক্তি ব্যবহার করে যেকোনো ব্যক্তির নামসহ অন্যান্য তথ্য জানা যাবে। হানি হবে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা।
গুগলও চেয়েছিল ফেসিয়াল রিকগনিশন প্রযুক্তি
২০১১ সালে গুগলও ছবি দিয়ে ব্যক্তির পরিচয় খোঁজার টুল নিয়ে কাজ করছিল।
কিন্তু তা প্রকাশ্যে আনেনি। গুগলের তৎকালীন চেয়ারম্যান এরিক স্মিট জানিয়েছিলেন প্রযুক্তি তৈরি করেও তা নিজেদের কাছেই রাখতে হয়েছে। তিনি বলেন, ‘এআই আমার জানা মতে একমাত্র প্রযুক্তি, যা তৈরি করার পর আমরা নিজেরাই থেমে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’ সময়ের তুলনায় প্রযুক্তির ক্ষমতা অদ্ভুত রকমের বেশি মনে হওয়ায় মাঝপথে সরে আসে মেটা ও গুগল।