মানুষের জীবনের সবচেয়ে বড় সফলতা হলো, আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে সক্ষম হওয়া। যেসব কাজ করলে তিনি খুশি হন, জীবনকে সেসব কাজে ব্যয় করতে পারা। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ তাঁর বান্দাদের এমন কিছু পথ বাতলে দিয়েছেন, যেগুলো অনুসরণ করা গেলে সহজেই তাঁর নৈকট্য অর্জন করা সম্ভব হয়। আল্লাহর ভালোবাসা পাওয়া সহজ হয়।
আর যে ব্যক্তি আল্লাহর ভালোবাসার পাত্র হয়ে গেল, তার চেয়ে ভাগ্যবান আর কে হতে পারে! আর আল্লাহ যখন কাউকে ভালোবাসে তখন আসমানবাসীরাও তাকে ভালোবাসতে থাকে এবং দুনিয়াতে যারা মহান আল্লাহর বিশেষ বান্দা রয়েছে, তাদের মনেও তার প্রতি ভালোবাসার জন্ম হয়। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘যারা ঈমান আনে ও সৎ কাজ করে দয়াময় তাদের জন্য সৃষ্টি করবেন ভালোবাসা। ’ (সুরা : মরিয়ম, আয়াত : ৯৬)
ইবনে আব্বাস বলেন, এর অর্থ দুনিয়ার মানুষের মধ্যে তার জন্য তিনি ভালোবাসা তৈরি করেন। অন্য অর্থ হচ্ছে, তিনি নিজে তাকে ভালোবাসেন, অন্য ঈমানদারদের মনেও ভালোবাসা তৈরি করে দেন। মুজাহিদ ও দাহহাক এ অর্থই করেছেন। ইবনে আব্বাস থেকে অন্য বর্ণনায় এসেছে, তিনি মুসলিমদের মধ্যে দুনিয়াতে তার জন্য ভালোবাসা, উত্তম জীবিকা ও সত্যকথা জারি করেন। সুতরাং ঈমান ও সৎকর্মে দৃঢ়পদ ব্যক্তিদের জন্য আল্লাহ তাআলা বন্ধুত্ব ও ভালোবাসা সৃষ্টি করে দেন। ঈমান ও সংকর্ম পূর্ণরূপে পরিগ্রহ করলে এবং বাইরের কুপ্রভাব থেকে মুক্ত হলে ঈমানদার সৎকর্মশীলদের মধ্যে পারস্পরিক ভালোবাসা ও সমপ্রীতি সৃষ্টি হয়ে যায়।
একজন সৎকর্মপরায়ণ ব্যক্তি অন্য একজন সৎকর্মপরায়ণ ব্যক্তির সঙ্গে ভালোবাসার বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে যায় এবং অন্যান্য মানুষ ও সৃষ্টিজীবের মনেও আল্লাহ তাআলা তাদের প্রতি মহব্বত সৃষ্টি করে দেন। হাদিসে এসেছে, রাসুল (সা.) বলেন, আল্লাহ যখন কোনো বান্দাকে পছন্দ করেন, তখন জিবরাইলকে বলেন, আমি অমুক বান্দাকে ভালোবাসি তুমিও তাকে ভালোবাসো।
তারপর জিবরাইল সব আসমানে এ কথা ঘোষণা করেন এবং তখন আকাশের অধিবাসীরা সবাই সেই বান্দাকে ভালোবাসতে থাকে। এরপর এই ভালোবাসা পৃথিবীতে নাজিল করা হয়। ফলে পৃথিবীর অধিবাসীরাও তাকে ভালোবাসতে থাকে। (তিরমিজি, হাদিস : ৩১৬১)
সুবহানাল্লাহ, আমরা যদি মহান আল্লাহ ও তাঁর সৃষ্টির ভালোবাসা পেতে চাই, তবে আমাদেরও খাঁটি ঈমানদার হতে হবে এবং সৎকর্মে আত্মনিয়োগ করতে হবে। মহান আল্লাহ আমাদের খাঁটি ঈমান অর্জন ও আমলময় জীবন গঠনের তাওফিক দান করুন। আমিন