রাজশাহীতে বর-কনেসহ বউভাতের অনুষ্ঠান থেকে ফেরার সময় দু’টি নৌকা ডুবে যায়। শুক্রবার (৬ মা’র্চ) সন্ধ্যায় রাজশাহী মহানগরের শ্রীরামপুর এলাকার বিপরীতে পদ্মা নদীতে নৌকাডুবির এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনের ম’রদেহ উ’দ্ধার করা হয়েছে। এখনও নি’খোঁজ রয়েছেন প্রায় পাঁচজন।
নৌকাডুবির পর বালু তোল ড্রেজার নৌকা বর আসাদুজ্জামান রুমনকে উ’দ্ধার করে। পরে সেখান থেকে তাকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। রুমন পদ্মা’র চরের ওপারের থাকা পবা উপজে’লার চরখিদিরপুরের গ্রামের ইনছার আলীর ছেলে।
শনিবার (৭ মা’র্চ) দুপুরে রুমন মহানগরের শ্রীরামপুর এলাকায় আসেন। সেখানে ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, নদীর ওপার থেকে আসার সময় পথিমধ্যে হঠাৎ ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যায়। এতে আতঙ্কিত হয়ে ওই নৌকায় থাকা ছেলে-মে’য়ে কা’ন্নাকাটি শুরু করে। তখন তার ভাই নৌকা থেকে লাফ দেয়। লাফ দিলে নৌকা হেলে যায়। ফলে পানি এসে নৌকা ডুবে যায়।
রুমন বলেন, একটি বালু তোলার ড্রেজার নৌকা এসে আমাদের উ’দ্ধার করে। আমা’র স্ত্রী’ আমা’র সঙ্গে ছিল। কিন্তু সে তার বোনের সঙ্গে নৌকার পেছনের দিকে ছিল। আমি আমা’র বন্ধু শামীমের সঙ্গে ছিলাম। তাকে এখনো খুঁজে পাওয়া যায়নি।
তিনি আরও বলেন, আমা’র সঙ্গে কেউ ছিল না তখন। যারা মে’য়ে (কনে) আনতে যায়, ওই ক’জনই ওপারে মে’য়েকে আনতে গিয়েছিল। আম’রাও ডুবে গিয়েছিলাম। যে নৌকাটি আমাকে উ’দ্ধার করেছিল, সেটি আরও তিনজনকে উ’দ্ধার করে। নৌকায় থাকা লোকজন বলেছিল, আম’রা তোমাদের বাঁ’চাই, এখানে আরও চারটি নৌকা আছে। নৌকাগুলো সেখানে খোঁজাখুজি করছিল। পরে সেখান থেকে আমাদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
এদিকে নি’খোঁজদের খুঁজতে রাজশাহীর পদ্মা নদীতে উ’দ্ধার অ’ভিযান পরিচালনা করছে চারটি উ’দ্ধারকারী ইউনিট। এরমধ্যে রাজশাহী সদর ফয়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের একটি রংপুর থেকে আসা একটি, বিআইডব্লিউটির একটি এবং বিজিবির একটি ইউনিট নদীতে কাজ করছে।
এর আগে শুক্রবার সন্ধ্যায় ঘটনার পর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত নি’খোঁজদের উ’দ্ধারে অ’ভিযান চলে। পরে পদ্মা নদীতে শনিবার সকাল সাড়ে ৭টা থেকে আবারও উ’দ্ধার অ’ভিযান শুরু হয়।
শনিবার দুপুরে রতন আলী (২২) নামে এক যুবকের ম’রদেহ উ’দ্ধার করা হয়। তিনি মহানগরের রাজপাড়া থানার বসুয়া এলাকার গাজী শেখের ছেলে। এছাড়া তিনি নি’খোঁজ কনের দুলাভাই।
শুক্রবার রাতে উ’দ্ধারের পর তার ছয় বছরের মে’য়ে ম’রিয়ম খাতুনকে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃ’ত ঘোষণা করেন।
এর আগে শনিবার দুপুর সোয়া ১টার দিকে মহানগরের শ্রীরামপুর ঘাট সংলগ্ন পদ্মা নদী থেকে এখলাস হোসেন (২২) নামে আরও একজনের ম’রদেহ উ’দ্ধার করা হয়।
তিনি পবা উপজে’লার কাঁঠালবাড়িয়া গ্রামের আসলাম হোসেনের ছেলে এবং নৌকাডুবিতে নি’খোঁজ কনে সুইটি খাতুন পূর্ণিমা’র চাচাতো ভাই। এছাড়া এখলাস পেশায় কাঠমিস্ত্রি ছিলেন। এছাড়া শনিবার দুপুরে দুর্ঘ’টনার কবলে পড়ে ডুবে যাওয়া নৌকাটিও উ’দ্ধার করা হয়েছে।
শনিবার সকালে রাজশাহী শহর থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরে পদ্মা নদীর চারঘাট অংশের ইউসুফপুর থেকে মনি বেগম (৪৫) নামে আরও এক নারীর ম’রদেহ উ’দ্ধার করা হয়। তিনি নি’খোঁজ কনের চাচি। এ নিয়ে পদ্মায় নৌকাডুবির ঘটনায় মৃ’তের সংখ্যা দাঁড়ালো চারজনে। এখনও নি’খোঁজ রয়েছেন প্রায় পাঁচজন।