Thursday, September 28, 2023
spot_img
Homeআন্তর্জাতিকযুদ্ধবিমান ও জাহাজ দিয়ে তাইওয়ানকে ঘিরে ফেলার সামরিক মহড়া দিচ্ছে চীন

যুদ্ধবিমান ও জাহাজ দিয়ে তাইওয়ানকে ঘিরে ফেলার সামরিক মহড়া দিচ্ছে চীন

চীনের সামরিক বাহিনী তাইওয়ানকে ঘিরে ফেলার এক মহড়া শুরু করেছে যেটি চলবে তিন দিন ধরে। তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, ৪২টি চীনা সামরিক বিমান এবং আটটি যুদ্ধ জাহাজ তাইওয়ান প্রণালীর মধ্যরেখা অতিক্রম করেছে।

এ মধ্যরেখাকে চীন এবং তাইওয়ানের মাঝখানে অঘোষিত সীমারেখা বলে ধরা হয়। বেইজিং এই মহড়াকে তাইওয়ানের সরকারের প্রতি এক কড়া হুঁশিয়ারি বলে বর্ণনা করেছে। চীন তাইওয়ানকে তাদের দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া এক দেশ বলে গণ্য করে। তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েন যুক্তরাষ্ট্রে এক সফর শেষে দেশে ফেরার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই চীন এই সামরিক মহড়া শুরু করে।

চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যমে বলা হচ্ছে, সামরিক মহড়ার সময় তাইওয়ান দ্বীপের চারপাশে যুগপৎ টহল এবং অগ্রাভিযান চালানো হচ্ছে। এর মাধ্যমে তাইওয়ানকে একদম ঘিরে ফেলার মাধ্যমে একটি ‘প্রতিরোধমূলক অবস্থান’ নেয়া হচ্ছে। সামরিক মহড়ায় দূর-পাল্লার রকেট, নৌবাহিনীর ডেস্ট্রয়ার, ক্ষেপণাস্ত্র-বাহী জাহাজ, বিমান বাহিনীর যুদ্ধ জাহাজ, বোমারু বিমান সহ অনেক অত্যাধুনিক সামরিক সরঞ্জাম ব্যবহার করা হচ্ছে।

তাইওয়ান নিজেদেরকে একটি সার্বভৌম দেশ বলে গণ্য করে। দেশটির আছে নিজস্ব সংবিধান এবং নির্বাচিত সরকার। কিন্তু চীন মনে করে এটি তাদের একটি বিচ্ছিন্ন প্রদেশ, একদিন যেটি বেইজিং এর নিয়ন্ত্রণে আসবে, এবং এজন্যে প্রয়োজনে তারা শক্তি প্রয়োগে প্রস্তুত। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এমন কথাও বলেছেন যে, তাইওয়ানের সঙ্গে চীনের ‘পুনরেকত্রীকরণ’ এ লক্ষ্য ‘অবশ্যই পূরণ হতে হবে’। তাইওয়ানের চারপাশ ঘিরে চীন মাঝে-মধ্যেই মহড়া দেয়। কিন্তু এবার দ্বীপটি ঘিরে চীন যে মহড়া শুরু করেছে সেটিকে তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই যে যুক্তরাষ্ট্রের হাউজ স্পিকার কেভিন ম্যাকার্থির সঙ্গে দেখা করে এসেছেন, তার পাল্টা ব্যবস্থা বলে মনে করা হচ্ছে।

প্রেসিডেন্ট সাই শনিবার বলেছেন, তার সরকার যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশের সঙ্গে একযোগে কাজ করে যাবে, কারণ তাদের দ্বীপটি এখন চীনের দিক থেকে ‘ক্রমাগত কর্তৃত্ববাদী সম্প্রসারণবাদের’ মুখোমুখি হচ্ছে। তিনি এ মন্তব্য করেন তাইপে সফরে আসা যুক্তরাষ্ট্রের এক কংগ্রেস প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময়। এ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন কংগ্রেসের পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান মাইকেল ম্যাকল।

ম্যাকল বলেছেন, তাইওয়ানকে অস্ত্র সরবরাহের লক্ষ্যে ওয়াশিংটন কাজ করছে। তবে এই অস্ত্র ‘যুদ্ধের জন্য নয়, শান্তির জন্য’। তবে চীনের সর্বশেষ সামরিক মহড়ার কারণে রাজধানী তাইওয়ানের মানুষকে মোটেই বিচলিত বলে মনে হলো না। ‘আমার মনে হয় তাইওয়ানের অনেক মানুষ এখন এতে অভ্যস্ত হয়ে গেছেন। তাদের মনোভাবটা যেন, ‘এই যে, আবার শুরু হয়ে গেল’, বলছেন এক বাসিন্দা জিম সাই।

তাইওয়ানকে ঘিরে চীনের তিনদিন ব্যাপী এ মহড়ার নাম দেয়া হয়েছে ‘অপারেশন শার্প সোর্ড’- এটি সোমবার পর্যন্ত চলবে বলে জানিয়েছে পিপলস লিবারেশন আর্মির (পিএলএ) ইস্টার্ন থিয়েটার কমান্ড। গত অগাস্টেও বেইজিং তাইওয়ানের চারপাশ ঘিরে এক সপ্তাহের মহড়া শুরু করেছিল, যখন কেভিন ম্যাকার্থির পূর্বসূরি সাবেক স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি তাইওয়ান সফর করেন। সেটি ছিল বিগত বছরগুলোতে চীনের সামরিক শক্তির সবচেয়ে বড় প্রদর্শনী। মহড়ার সময় যুদ্ধবিমান, যুদ্ধজাহাজ এবং ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়। সূত্র: বিবিসি।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments