বিশ্বনবী (সা.) কিয়ামতের আগ মুহূর্তের অনেক সংবাদ দিয়ে গেছেন। কিয়ামতের আগে ছোট-বড় অনেক নিদর্শন প্রকাশ পেতে থাকবে। মুমিনদের জন্য সে সময় করণীয়, সতর্কতা স্পষ্টভাবে বলে দিয়ে গেছেন। তেমনি এক হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, একটা সময় এমন হবে, যারা প্রকৃত মুমিন তারা পৃথিবী ছেড়ে পালিয়ে যেতে চাইবে।
দুনিয়ার বুকে বেঁচে থাকাই তাদের জন্য কষ্টসাধ্য। ঈমান নিয়ে বেঁচে থাকাই তাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হবে। আবু সাইদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি আবু সাসাআহকে বলেন, তোমাকে দেখছি তুমি ছাগলকে অত্যন্ত ভালোবেসে এদের সর্বদা লালন-পালন করো, তাই তুমি এদের যত্ন করো এবং রোগ-ব্যাধিতে আক্রান্ত হলে চিকিৎসা করো। আমি নবী (সা.)-কে বলতে শুনেছি, এমন এক সময় আসবে, যখন ছাগলই হবে মুসলিমের উত্তম সম্পদ। তাকে নিয়ে পাহাড়ের চূড়ায় বৃষ্টি বর্ষণের স্থানে চলে যাবে এবং তাঁদের দ্বিনকে ফিতনা থেকে রক্ষা করবে। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৩৬০০)
পৃথিবীজুড়ে নানা নৈরাজ্য দেখে মনে অস্বস্তিতে থাকবে প্রকৃত মুুুমিন। পরস্পর লড়াই, হত্যাকাণ্ড বেড়ে যাওয়া, অশ্লীলতা সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্র ছড়িয়ে যাওয়া, এসব দেখে কোনো প্রকৃত মুমিন সুস্থ থাকতে পারবে না। আর এসব ঘটনা কিয়ামতের পূর্ব সময়ে একের পর এক ঘটতে থাকবে। রাসুল (সা.) বলেছেন, সেই সত্তার শপথ! যাঁর হাতে আমার জীবন, দুনিয়া ধ্বংস হবে না যে পর্যন্ত না মানুষের কাছে এমন এক যুগ আসে, যখন হত্যাকারী জানবে না যে কী দোষে সে অন্যকে হত্যা করেছে এবং নিহত লোকও জানবে না যে কি দোষে তাকে হত্যা করা হচ্ছে। জিজ্ঞেস করা হলো, কিভাবে এমন অত্যচার হবে? তিনি জবাবে বললেন, সে যুগটা হবে হত্যার যুগ। এরূপ যুগের হত্যাকারী ও নিহত ব্যক্তি উভয়েই জাহান্নামি হবে। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৭১৯৬)
যে রবের নিয়ামত ভোগ করছে জগদ্বাসী সেই রবকেই অস্বীকার করছে দিনরাত। তাঁর অবাধ্যতায় হেন কোনো কাজ নেই তারা করবে না। কিয়ামতের আগ মুহূর্তে মুমিনদের মনে হবে জমিনের পিঠ থেকে জমিনের পেটই মুমিনদের জন্য উত্তম। রাসুলের প্রিয় সাহাবি হজরত আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যখন তোমাদের মধ্যকার উত্তম লোক তোমাদের শাসক হবে, তোমাদের সম্পদশালীরা দানশীল হবে এবং তোমাদের কর্ম পারস্পরিক পরামর্শের ভিত্তিতে সম্পন্ন হবে, তখন ভূতলের তুলনায় ভূপৃষ্ঠই তোমাদের জন্য উত্তম হবে। আর যখন তোমাদের মধ্যকার খারাপ লোক তোমাদের শাসক হবে, তোমাদের সম্পদশালীরা কৃপণ হবে এবং তোমাদের কার্যাবলি তোমাদের নারীদের ওপর ন্যস্ত করা হবে; তখন ভূতলই ভূপৃষ্ঠের তুলনায় তোমাদের জন্য উত্তম হবে (অর্থাৎ জীবনের চেয়ে মৃত্যুই উত্তম)। (জামে তিরমিজি, হাদিস : ২২৬৬)
হে আল্লাহ, তুমি আমাদের তোমার রহমতের ছায়ায় ঢেকে রাখো।