Saturday, June 10, 2023
spot_img
Homeখেলাধুলাম্যান্ডেলা স্কয়ার থেকে ওয়ান্ডারার্সে

ম্যান্ডেলা স্কয়ার থেকে ওয়ান্ডারার্সে

দক্ষিণ আফ্রিকার অবিসংবাদিত নেতা নেলসন ম্যান্ডেলা। জোহানেসবার্গের স্যান্ডটন সিটির ম্যান্ডেলা স্কয়ার পর্যটক তো বটেই, উইকএন্ড নাইটে তুলে আনে পুরো শহরের যুবসমাজকে। ম্যান্ডেলার বিশাল ব্রোঞ্জমূর্তিকে ঘিরে গড়ে ওঠা হাই এন্ড শপিং মল, নাইট ক্লাব আর হোটেলের মাঝে একটা ফুটবল মাঠের সমান চত্বরের সীমানাদেয়াল তৈরি করেছে দামি সব রেস্তোরাঁ। সপ্তাহান্তের সন্ধ্যায় তাই খুব ভিড় হয়, বিশেষ করে প্রতি শনিবারে।
উইকএন্ডের সংস্কৃতির দেশের লোকজনের কাছে রবিবার মানে অবিরাম বিশ্রাম। আবাসিক পাড়ায় এমনিতেই সুনসান নীরবতা বিরাজ করে। কর্মসপ্তাহ শুরুর আগের দিন শহর জাগে দেরিতে। তবে ঠিক ক’টায়, সেটা বোঝাও কঠিন। মনে হয় ব্যস্ততম শহরটি ঘণ্টা বাজিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে।  
ব্যতিক্রম খেলার মাঠ। সেটা ম্যানচেস্টার হোক কি জোহানেসবার্গÑসানডে নাইট খেলার জন্য বরাদ্দ।
ট্যুরে এসে জোহানেসবার্গের অভিজাত এলাকা স্যান্ডটনের যে গেস্ট হাউজে উঠেছি, সেটির মালিক ডাচ বংশোদ্ভূত দক্ষিণ আফ্রিকান। ছবির মতো বাড়ি। পাখির ডাক আর নিজের কণ্ঠস্বর ছাড়া কোনো শব্দ শোনা যায় না। তো, গেস্ট হাউজ… থেকে ওয়ান্ডারার্স মিনিট দশেকের ড্রাইভ। উঁচু-নিচু মসৃণ পথের দুপাশে ঝাঁ-চকচকে সব উঁচু দালান দক্ষিণ আফ্রিকার অর্থনীতির বহিরাঙ্গ হয়ে আছে।  
দক্ষিণ আফ্রিকা-বাংলাদেশ সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডের ভেন্যু ইম্পেরিয়াল ওয়ান্ডারার্সও তা-ই। অনায়াসে স্পোর্টিং ল্যান্ডমার্ক বলা যায়। পিংক ডে ক্রিকেট, তাই গোলাপি সাজ ব্যানারে-পোস্টারে। দেখে ভালো লাগে দেখে সামাজিক এই আন্দোলনে যুক্ত সবাই। সাধারণ দর্শক থেকে শুরু করে পেশাদার সাংবাদিকও গোলাপি চিহ্ন বহন করেছেন। দেখে আফসোস হচ্ছিল, আমাদের দেশের বিশেষ দিবসগুলো কেন যেন শুধুই আনুষ্ঠানিকতায় বাঁধা পড়ে থাকে!
যেখান থেকে শুরু করেছিলাম, রবিবাসরীয় আলস্যে কেমন ম্রিয়মাণ থাকে জোহানেসবার্গ। আবার সেই শহরই জেগে থাকে খেলার মাঠে। সকালে মিডিয়া সেন্টারে ঢোকার আগেই দেখেছি গোলাপি স্রোত স্টেডিয়ামের প্রবেশপথে। পাঁচতলা উঁচু প্রেসবক্স থেকে নিচে তাকালেই সবুজ আর গোলাপি। এখানকার গ্যালারি বাংলাদেশের প্রধান ক্রিকেট সেন্টার মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামের মতো উঁচু না। তাই প্রেসবক্সে বসে আশপাশের এলাকাও চোখে পড়ে। সবুজে ঘেরা আবাসিক এলাকা। আরো সবুজ ড্রেসিংরুমের পেছনের অংশ, বিশাল গলফ কোর্স যে। ছুটির দিনে সাহেবরা গলফ খেলছেন। ওয়ান্ডারার্সের গা লাগোয়া, তাই ক্যাডিদেরও দেখা যায়। সব মিলিয়ে এমন একটা পরিবেশ, যেখানে অশুভর প্রবেশাধিকার আছে বলে মনে হয় না!
এরা খেলা নিয়ে যজ্ঞ করে, তবে উৎসবের রংটাই বেশি ছিটায়। এক পাশে সস্তার টিকিটের কাঠের খোলা গ্যালারি আছে। আবার দামের সিঁড়ি বেয়ে চারতলার শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বক্সও আছে। একটা ছবি ছবি ভাব, রুচির ছাপ সর্বত্র। মিডিয়া সেন্টারে দুটি বাঁধাই করা বড় ফ্রেমে দক্ষিণ আফ্রিকার দুই সাবেক গ্রেটের ছবি। গ্রায়েম স্মিথ ও হাশিম আমলা ব্যাট উঁচিয়ে দাঁড়িয়ে। দুটো ছবিই সাদা-কালো। অনায়াসে রঙিন ছবি ফ্রেম করা যেত। কিন্তু সাদা ইটের দেয়ালে ফ্রেম দুটি এত মানিয়েছে যে সাদাই পরিপূর্ণ রঙিন করে তুলেছে দুজনকে।  
পরিমিতিবোধ তো একেই বলে!

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments