লক্ষ পাগল কুত্তা, লক্ষ দানব, লক্ষ কাপুরষ, লক্ষ হিংস্র জানোয়ার, মৃত্যুর পর “মোদির” মতো কারো জন্ম হয়। এটা একটি ভারতের প্রবাদ। সন্দেহের অবকাশ নেই, ভারতের বর্তমান প্রেক্ষাপটে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নাম, ইতিহাসের জঘন্যতম রাজা, বাদশা, জুলুমবাজ প্রশাসকদের তালিকায় লিপিবদ্ধ হবে। ইতিহাসের হিংস্র মানব নামের নরপশুদের সাথে যুক্ত করা হবে তার নাম। আগামী দিনের ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষেপ করা হবে নরেন্দ্র মোদিকে। বিশ্বের আলোচনার টেবিলের কেন্দ্র বিন্দু এ মুহূর্তে নরেন্দ্র মোদি ও তার প্রশাসন। ধর্ম, জাতি গোষ্ঠী নির্বিশেষে তার ও প্রশাসনের প্রতি নিন্দা অব্যাহত রয়েছে।
ইতিহাসে বা আলাপচারিতায় পৃথিবীতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ভারতের গনতন্ত্রের প্রতি শ্রদ্ধা ও সুনামকে চিরতরে ধ্বংস করে দিয়েছে মোদি। হিংসায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির পোঁয়াবারো এখন ভারতের গনতন্ত্রে। নির্লজ্জ নির্লিপ্ত ভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে তার আচরণে।
ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত থাকতে হীন মন মানসিকতায়,ক্ষমতার দাপটে বেপরোয়াভাবে তার লালিত পালিত উগ্রবাদী মতবাদে বিশসী সম্প্রদায়কে লেলিয়ে দিয়ে সুনামধন্য ভারতকে হেয় প্রতিপন্ন করে চলেছে অবলিলায়।
সপ্তাহ থেকে দিল্লিতে, নিরীহ মুসলিম সংখ্যালঘুদের উপর, মোদির পালিত বর্বর বাহিনীর বর্বরোচিত আক্রমণ ও হত্যা, অবুঝ শিশুর সম্মুখে পিতাকে হত্যা, মেয়ের লাশ বহনকারী পিতাকে মারপিট, লুটপাট, ঘর বাড়ি, গাড়িতে আগুন দিয়ে অরাজকতা- বিশ্বের শান্তিকামী জনগোষ্ঠী হতবিহ্বল। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে সাথে নিয়ে উক্ত ন্যক্কারজনক তান্ডবের নিন্দা জানাবার ভাষা খুঁজে পাচ্ছে না বিশ্বের বিবেকবান মানুষেরা। প্রত্যক্ষদর্শীরা ছেড়ে দে মা পালিয়ে বাঁচি, ভয়ে পালিয়েছে। ভারতের ইতিহাসের এই কলংক লেপনে পুলিশকে উলঙ্গ নৃত্যে, বর্বরদের সাথে একত্রিত হয়ে উল্লাসে, হাতে হাত মিলিয়ে নমরুধ, ফেরাউনদের আন্তরিক সহযোগিতা করতে দেখা যায়।
নাটকীয় ভঙ্গিতে কয়েকমাস পূর্বে মোদি সরকার মাষ্টার প্ল্যানের মাধ্যমে মুসলমানদের নাগরিকত্ব না দেয়ার একটি প্রস্তাব সংসদে উত্থাপণ ও গৃহিত করে। পুরো ভারতবর্ষে হিন্দু মুসলিম দাঙ্গার পরিবেশ সৃষ্টিই ছিল মূল লক্ষ্য।
ভারতের সিংহভাগ সচেতন মহল মোদির বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। সামাজিক রাজনৈতিক সাংস্কৃতিক বলিউড অভিনেতা তারকা টুইটারে মোদির প্রশাসনের প্রতি কড়া সমালোচনার বার্তা ছিল নজরকাঁড়ার মতো। মোদির প্রথম নির্বাচনে বলিউড অভিনেতা অভিনেত্রী মডেল তারকাদের সমর্থন ছিল দেশ জুড়ে। মোদির নির্বাচন ক্যাম্পেইনে বলিউড মুসলিম বিশ্বব্যাপী পরিচিত সুপারষ্টাররা জমায়েত হয়ে মনেপ্রাণে নির্বাচনের সভাগুলো মাতিয়ে রেখেছিলেন। আজ মোদির বুর্জুয়া রাজনীতির নীতিমালায় সবাই ধরাশায়ী। ভয়ে অনেকে মুখ খুলছেন না।
বিচারপতিকে রাতারাতি অপসারণ ভারতের ইতিহাসে হয়তো প্রথম। ভারতের সুশীল সমাজ, মোদি ও তার সহযোগিদের এহেন নির্মম অমানবিক, সংবিধান পরিপন্থী কার্যকলাপে হতাশা ব্যক্ত করেছেন। ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ডঃ মনমোহন সিং কংগ্রেস নেতা সোনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধী, মমতা ব্যানার্জি সহ প্রখ্যাত রাজনীতিবিদরা মোদি প্রশাসনের সমালোচনা ব্যাপকভাবে অব্যাহত রেখেছেন।
ভারতের সচেতন হিন্দু মহল মুসলমানদের পাশে অবস্থান নিয়েছে। হিন্দু ধর্মাবলম্বী শ্রদ্ধার পাত্র “প্রেমনাথ” মুসলমানদের বাঁচাতে গিয়ে নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন। চারজন মুসলিম আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়ার সময় প্রেমনাথ বাঁচাতে এগিয়ে এলে তিনিও পুড়ে যান শহীদদের সাথে। ইতিহাসে মোদির নাম থাকবে ঘৃণার তালিকায়, পক্ষান্তরে প্রেমনাথের নাম থাকবে সেরা তালিকায়।
বিগত কয়েকটি বছর থেকে বাংলাদেশ বেশ সমস্যায়, ভোগান্তির মধ্যে রয়েছে মিয়ানমার থেকে আগত রোহিঙ্গাদের নিয়ে। মিয়ানমার মুসলমানদের হত্যা, বেদখল, নির্যাতন, নির্মমতা, রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে ঠেলে দেয়ার পিছনেও মোদির একটি বড় হাত ছিল বলে বিজ্ঞ মহলের অভিমত। এদিকে বাংলাদেশের প্রশাসনের ভিন্ন ভিন্ন রাজনৈতিক ইস্যুকে হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করে নিচ্ছে ফায়দা।
বাংলাদেশের হাজার হাজার শিক্ষিত যুবক বেকারত্বের অভিশাপ নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে অথচ মোদি বাংলাদেশ সরকারকে ভয় দেখিয়ে ভারতীয়দের কাজের সুযোগ করে দিয়ে বাংলাদেশ থেকে প্রতিমাসে নিয়ে যাচ্ছে হাজার হাজার কোটি টাকা। যা ইতিমধ্যে বিভিন্ন মিডিয়া প্রচার করেছে।
জাতির মহান নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শতবর্ষ জন্মদিনের প্রধান অতিথি মোদিকে বিবেচিত করার পেছনে কাজ কিরে যাচ্ছে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের কুটনৈতিকরা। বাংলাদেশের সরকার সরবে নিরবে নিভৃতে মোদিকে প্রধান অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানানোর সিদ্ধান্তে অটল রয়েছে। বাংলাদেশের জনগণ সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে মিছিল মিটিং অব্যাহত রেখেছে।
বাংলাদেশের জনগণ যেখানে প্রত্যাখ্যান করেছে মোদিকে, সে ক্ষেত্রে জোরপূর্বক যদি মোদিকে প্রধান অতিথির আসনে বসানো হয়, বিশ্বে মোদি ও বাংলাদেশ সরকার নিন্দিত হিসাবে গন্য হবে বলে অভিজ্ঞ মহলের অভিমত।
মোদি ব্যতিরেকে যে কোন ভারতীয় উচ্চ পর্যায়ের কাউকে নিয়ে আসলে জাতির ইজ্জত রক্ষা হবে।
আমাদের জাতির প্রাণ, জাতির পিতাকে বিশ্বে অনাকাঙ্ক্ষিত আলোচনার সুযোগ থেকে রক্ষার দায়িত্ব সরকারের। দল মত নির্বিশেষে বিশ্বের সকল প্রবাসী অভিবাসীরা মনে করে, মোদিকে প্রধান অতিথির আসনে বসানোর চিন্তা থেকে বাংলাদেশ সরকার সরে আসবে।
বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে সরাসরি হস্তক্ষেপ ও স্বাধীনতার ইতিহাসের অন্যতম মহাপ্রাণ ভারতের প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধির পরিবারের সদস্যরা এখনো ভারতের কংগ্রেসের নিয়ন্ত্রণে রয়েছেন, কংগ্রেসের প্রধান অথবা ইন্দিরা গান্ধির পরিবারের কাউকে অতিথি হিসেবে সরকার বিবেচনায় নিয়ে আসতে পারে বলে যুক্তরাষ্ট্রের অনেক প্রবাসী তাদের অভিমত ব্যক্ত করেছেন।
লিখাটা আমার ব্যক্তিগত মতামত নয়, সাংবাদিক হিসেবে প্রবাসী অভিবাসীদের মতামতের
উপর জরিপের রিপোর্ট।