Wednesday, March 22, 2023
spot_img
Homeধর্মমৃত মা-বাবার জন্য করণীয়

মৃত মা-বাবার জন্য করণীয়

মা-বাবা কত ছোট শব্দ। কিন্তু এ দুটি শব্দের সঙ্গে কত যে আদর, স্নেহ ও ভালোবাসা আছে, তা পৃথিবীর কোনো মাপযন্ত্র দিয়ে নির্ণয় করা যাবে না। যেদিন থেকে মা-বাবা দুনিয়া ছেড়ে চলে গেলেন সেদিন থেকে মনে হয় কী যেন হারিয়ে গেল! মনে হলেই বুকের ভেতরটা কেঁপে ওঠে! চোখ থেকে বৃষ্টির মতো পানি ঝরে! সেই মা-বাবার জন্য আমাদের কি কিছুই করার নেই? অবশ্যই আছে।

সন্তানের করণীয়

বেশি বেশি দোয়া করা : মা-বাবা দুনিয়া থেকে চলে যাওয়ার পর তাদের জন্য বেশি বেশি দোয়া করা।

মহান আল্লাহ দোয়া শিখিয়েছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘হে আমার রব, তাদের উভয়ের প্রতি রহম করো, যেমন তারা আমাকে শৈশবকালে (দয়া-মায়া করে) লালন-পালন করেছেন। ’ (সুরা : বনি ইসরাঈল, আয়াত : ২৪)

মা-বাবার পক্ষ থেকে মাফ চাওয়া : মা-বাবা বেঁচে থাকতে কারো সঙ্গে খারাপ আচরণ করে থাকলে বা কারো ওপর জুলুম করে থাকলে অথবা কাউকে কষ্ট দিয়ে থাকলে তাদের পক্ষ থেকে মাফ চেয়ে নেওয়া অথবা ক্ষতি পূরণ দিয়ে দেওয়া। (তিরমিজি, হাদিস : ২৪১৮)

দান-সদকা করা : মা-বাবার মাগফিরাত কামনায় ও তাঁদের মর্যাদা বৃদ্ধির নিয়তে অভাবগ্রস্ত লোকদের খুঁজে খুঁজে দান-সদকা করা। এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে এসে বলল, হে আল্লাহর রাসুল, আমার মা হঠাৎ মৃত্যুবরণ করেছেন। আমার ধারণা তিনি যদি কথা বলার সুযোগ পেতেন তাহলে দান-সদকা করতেন। আমি তাঁর পক্ষ থেকে সদকা করলে তিনি কি এর সওয়াব পাবেন? রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন হ্যাঁ, অবশ্যই পাবেন। (বুখারি, হাদিস : ২৭৬০)

মা-বাবার পক্ষ থেকে রোজা ও হজ : যদি মা-বাবার কোনো রোজা কাজা হয়ে থাকে, তাহলে তাদের ইন্তেকালের পর তাদের পক্ষ থেকে রোজা রাখা। নবীজি (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করল এ অবস্থায় যে তার ওপর রোজা ওয়াজিব ছিল। তবে তার পক্ষ থেকে তার অভিভাবক রোজা রাখবে। ’ (বুখারি, হাদিস : ১৯৫২)

তাদের পক্ষ থেকে হজ বা ওমরাহ পালন করা। তাদের নিয়তে সব সময় কিছু কিছু যেকোনো ধরনের নফল ইবাদত করা। এর দ্বারা তারা উপকৃত হবেন, তাদের আত্মা খুশি হবে। আমরা তাদের রুহানি ফয়েজ লাভ করব। (বুখারি, হাদিস : ১৮৫২)

ঋণ পরিশোধ করা : মা-বাবার কোনো ঋণ থাকলে তা দ্রুত পরিশোধ করার চেষ্টা করা। নবীজি (সা.) বলেন, ‘মুমিন ব্যক্তির আত্মা তার ঋণের সঙ্গে সম্পৃক্ত থেকে যায়, যতক্ষণ না তা পরিশোধ করা হয়। ’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ২৪১৩)

কবর জিয়ারত করা : তাঁদের কবর জিয়ারত করা। এর মাধ্যমে সন্তান ও মা-বাবা উভয়ই উপকৃত হবে। রাসুল (সা.) বলেন, আমি তোমাদের কবর জিয়ারত করতে নিষেধ করেছিলাম। অতঃপর মুহাম্মদের মায়ের কবর জিয়ারতের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এখন তোমরা কবর জিয়ারত করো। কেননা তা আখিরাতকে স্মরণ করিয়ে দেয়। (তিরমিজি, হাদিস : ১০৫৪)

লেখক : মুহাদ্দিস, জামিয়া আম্বরশাহ আল ইসলামিয়া, কারওয়ান বাজার, ঢাকা

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments