জানুয়ারিতে আটক করা নারী মানবাধিকারকর্মী তামানা জারিয়াবি পারিয়ানিকে মুক্তি দেয়া হয়েছে। ৯ই জানুয়ারি রাজধানী কাবুলের পারওয়ান-২ এলাকায় এপার্টমেন্ট থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে অস্ত্রধারীরা। এর আগে তিনি নারী অধিকারের দাবিতে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন। অনলাইন বিবিসি তার মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত হলেও তিনি কেমন আছেন সে বিষয়ে জানা যায়নি। তার সঙ্গে নিখোঁজ হয়েছিলেন পারওয়ানা ইব্রাহিমখেল। অন্যদিকে কয়েক সপ্তাহ পরে নিখোঁজ হয়ে যান জাহরা মোহাম্মাদি এবং মুরসাল আয়ার। এসব ঘটনায় ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়।
গত বছর ১৫ই আগস্ট আফগানিস্তানের শাসন ক্ষমতা দখল করে তালেবানরা। তখন থেকেই নারীদের অধিকারকে খর্ব করা হয়েছে এবং হচ্ছে।শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এবং কর্মক্ষেত্রে নারীদের উপস্থিতি বন্ধ করে দিয়েছে তালেবানরা। এসবের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করার সিদ্ধান্ত নেন ওইসব নারী ও তাদের সঙ্গে আরো কয়েক ডজন নারী। এর কয়েকদিন পরেই মিস পারিয়ানি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও পোস্ট দেন। তাতে তিনি বলেন, তার ঘরে কিছু সশস্ত্র ব্যক্তি উপস্থিত হয়েছে এবং তাকে গ্রেপ্তার করেছে। এরপর তিনি অদৃশ্য হয়ে যান।
তিনি নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার পর প্রতিবেশীরা বিবিসির সাংবাদিককে বলেছেন, মিস পারিয়ানিকে তার অন্য দুই বোনসহ নিয়ে গেছে। তারপর থেকে তাদের কেউই আর এপার্টমেন্টে ফিরে আসেননি। প্রতিবেশীরা বলেছেন, তাদেরকে তুলে নিয়ে গেছে একটি সশস্ত্র গ্রুপ। ওদিকে কোনো নারীকে গ্রেপ্তার বা আটকে রাখার অভিযোগ অব্যাহতভাবে অস্বীকার করে এসেছে তালেবানরা।
মিস পারিয়ানিকে গ্রেপ্তারের কয়েকদিন পর বিবিসিকে সাক্ষাতকার দেন সুহাই শাহিন। জাতিসংঘে তালেবানদের রাষ্ট্রদূত হওয়ার আশা করছেন তিনি। ওই সাক্ষাতকারে বলেছেন, যদি তালেবানরা ওই নারীদের তুলে নিয়ে থাকতো, তাহলে তারা তা জানাতো। যদি অভিযোগ সত্য হয়, তাহলে তারা আদালতে গিয়ে নিজেদের সুরক্ষা দাবি করতে পারে। এটাই আইনগত বিষয়। কিন্তু ওইসব নারীকে যদি আটক করা না হয়ে থাকে, আর তারা যদি এমন ভুয়া ঘটনা সৃষ্টি করে থাকে তবে তা হলো বিদেশে আশ্রয় পাওয়ার একটি কৌশল।
তালেবানরা আফগানিস্তানের ক্ষমতা কেড়ে নেয়ার আগে নারীরা যথেষ্ট স্বাধীনতা ভোগ করতেন। কিন্তু তালেবানদের শাসনের অধীনে তাদের সেই অধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে। তারা ইচ্ছেমতো স্কুল-কলেজে যেতে পারছেন না। যোগ দিতে পারছেন না কর্মক্ষেত্রে। এসব কারণে মাঝে মাঝেই বিক্ষোভ করছেন নারীরা।