মিশরের প্রত্নতাত্ত্বিকরা ৫২-ফুট লম্বা প্যাপিরাস আবিষ্কার করেছেন যা প্রাচীন মিশরীয় সভ্যতার অন্তর্গত ‘বুক অফ দ্য ডেডের’ অংশ বলে মনে করা হচ্ছে। ২,০০০ বছরেরও বেশি পুরানো নথিটি সাক্কারায় জোসারের স্টেপ পিরামিডের দক্ষিণে একটি সৌধের মধ্যে পাওয়া গেছে। ‘দ্য বুক অফ দ্য ডেড’ -এ অনেক নতুন তথ্য রয়েছে। নতুন আবিষ্কারটি প্রাচীন মিশরীয় সভ্যতার উপর আলোকপাত করতে পারে বলে মনে করছেন গবেষকরা। সংরক্ষণের কাজ ইতিমধ্যেই সম্পূর্ণ হয়েছে, এবং প্যাপিরাসটি আরবি ভাষায় অনুবাদ করা হচ্ছে। গত ১৪ জানুয়ারী মিশরীয় প্রত্নতাত্ত্বিক দিবস উপলক্ষে একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই আবিষ্কারের কথা প্রকাশ্যে আনা হয়। বিবৃতি অনুসারে, সুপ্রিম কাউন্সিল অফ অ্যান্টিকুইটিজের সেক্রেটারি জেনারেল মোস্তফা ওয়াজিরি বলেছেন, ১০০বছরেরও বেশি সময় পর সাক্কারাতে এটিই প্রথম পূর্ণ প্যাপিরাস যা উন্মোচিত হয়েছে। জোসারের স্টেপ পিরামিডটি ফারাও জোসারের শাসনামলে নির্মিত হয়েছিল এবং এটি ছিল মিশরীয়দের নির্মিত প্রথম পিরামিড। মিশরের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের প্রাক্তন মন্ত্রী জাহি হাওয়াস একটি ইমেলে লাইভ সায়েন্সকে জানিয়েছেন -”স্টেপ পিরামিডের চারপাশের এলাকাটি সহস্রাব্দ ধরে কবর দেওয়ার জন্য ব্যবহৃত হয়েছিল। যে কফিনে নতুন প্যাপিরাসগুলি মিলেছে সেগুলি ৭১২ খ্রিস্টপূর্বাব্দ থেকে ৩৩২ খ্রিস্টপূর্বাব্দর মধ্যের ”।
প্যাপিরাসের মালিকানা এবং এর সঠিক তারিখ সম্পর্কে তথ্য শীঘ্রই ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন হাওয়াস। মিশরীয়রা বিশ্বাস করেন যে ‘দ্য বুক অফ দ্য ডেড হল’ এমন একটি বই যেটি মৃতদের অন্য জগতে প্রবেশের দিক নির্দেশ করে। ৫২ ফুট লম্বা হলেও এর আগে এর থেকেও বেশি দৈর্ঘের বুক অফ দ্য ডেড প্যাপিরির অন্যান্য উদাহরণ রয়েছে। শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা সংরক্ষণাগারের প্রধান ফয় স্কাল্ফ একটি ইমেইলে লাইভ সায়েন্সকে জানিয়েছেন – ”অনেক পান্ডুলিপি আছে যেগুলোর দৈর্ঘ্য একই রকম হতো, কিন্তু প্রাচীন মিশরীয় ধর্মীয় গ্রন্থের প্যাপিরাসের দৈর্ঘ্য পরিবর্তিত হতে পারে।”
দ্বিতীয় প্যাপিরাস
এটি দ্বিতীয় প্যাপিরাস, যা গত বছরে সাক্কারাতে পাওয়া গেছে। এটিতে ‘বুক অফ দ্য ডেড’ লেখা হয়েছে। ২০২২ সালে, একটি ১৩-ফুট লম্বা খণ্ডিত প্যাপিরাস যেখানে বুক অফ দ্য ডেড -এর কিছু খণ্ডিত অংশ লেখা রয়েছে তা সাক্কারাতে ফারাও তেটির পিরামিডের কাছে একটি কবরের খাদে পাওয়া গিয়েছিল। এটিতে “Pwkhaef” নামে এক ব্যক্তির নাম লেখা ছিল। ফারাও তেটির পিরামিডের কাছে সমাধিস্থ হওয়া সত্ত্বেও, পখহেফ বহু শতাব্দী ধরে বেঁচে ছিলেন।কবরের খাদ যেখানে এই প্যাপিরাস পাওয়া গেছে মিশরের ১৮ এবং ১৯ তম রাজবংশের। একজন প্রাক্তন শাসকের পিরামিডের পাশে সমাধিস্থ করার প্রথা সে সময় মিশরে জনপ্রিয় ছিল। পর্যটন ও পুরাকীর্তি মন্ত্রকের মিশরীয় প্রত্নতাত্ত্বিকদের একটি দল এই আবিষ্কারটি করেছিল, যারা এখনও প্রাচীন নথির ছবি প্রকাশ করতে পারেনি। বিবৃতি অনুযায়ী, নতুন আবিষ্কৃত প্যাপিরাসটি শীঘ্রই একটি মিশরীয় যাদুঘরে প্রদর্শন করা হবে।
সূত্র : .livescience.com