সন্তানের জন্য তুলনামূলকভাবে মা-ই বেশি ত্যাগ স্বীকার করেন। গর্ভধারণ, দুধপান, রাত জেগে সন্তানের তত্ত্বাবধানসহ নানাবিধ কষ্ট একমাত্র মা-ই সহ্য করেন। তা ছাড়া সন্তানের প্রতি মা-ই সবচেয়ে বেশি যত্নবান ও বেশি আদর-সোহাগ করে থাকেন। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘আর আমি মানুষকে মা-বাবার সঙ্গে সদয় ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছি।তার মা তাকে অতি কষ্টে গর্ভে ধারণ করেছেন এবং অতি কষ্টে তাকে প্রসব করেছেন। তার গর্ভধারণ ও দুধপান ছাড়ানোর সময় লাগে ৩০ মাস। অবশেষে যখন সে তার শক্তির পূর্ণতায় পৌঁছে এবং ৪০ বছরে উপনীত হয়, তখন সে বলে, হে আমার রব, আমাকে সামর্থ্য দাও, তুমি আমার ওপর ও আমার মা-বাবার ওপর যে নিয়ামত দান করেছ, তোমার সে নিয়ামতের যেন আমি কৃতজ্ঞতা আদায় করতে পারি এবং আমি যেন ভালো কাজ করতে পারি, যা তুমি পছন্দ করো। আর আমার জন্য তুমি আমার বংশধরদের মধ্যে সংশোধন করে দাও। নিশ্চয় আমি তোমার কাছে তাওবা করলাম এবং নিশ্চয়ই আমি মুসলিমদের অন্তর্ভুক্ত। ’ (সুরা আহকাফ, আয়াত : ১৫)
এ কারণে ইসলাম মায়েদের সর্বোচ্চ সম্মান প্রদর্শনের প্রতি গুরুত্ব দিয়েছে। মহানবী (সা.) সাহাবায়ে কেরামকে মায়ের যত্ন নেওয়ার ব্যাপারে বিশেষভাবে তাগিদ দিয়েছেন। মিকদাম বিন মাদীকারিব (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা তোমাদের মায়েদের সম্পর্কে তোমাদের উপদেশ দিচ্ছেন। এ কথা তিনি তিনবার বলেন: নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের বাবাদের সম্পর্কে উপদেশ দিচ্ছেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ পর্যায়ক্রমে তোমাদের নিকটবর্তীদের সম্পর্কে তোমাদের উপদেশ দিচ্ছেন (সদাচারের)। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৩৬৬১)
আল্লাহ ও আল্লাহর রাসুল (সা.)-এর পর পৃথিবীতে সর্বোচ্চ সম্মান পাওয়ার যোগ্য মা-বাবা। আর তাদের দুজনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সম্মান পাওয়ার যোগ্য হলেন মা। এটি কারো বানানো মনগড়া কথা নয়। মায়েদের এই অনন্য সম্মানের আসনে বসানোর নির্দেশ দিয়েছেন, বিশ্বনবী মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ (সা.)। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, এক লোক রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে এসে জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহর রাসুল, আমার কাছে উত্তম ব্যবহার পাওয়ার অধিক হকদার কে? তিনি বলেন, তোমার মা। লোকটি বলল, তারপর কে? মহানবী (সা.) বলেন, তোমার মা। সে বলল, তারপর কে? তিনি বলেন, তোমার মা। সে বলল, তারপর কে? তিনি বলেন, তারপর তোমার বাবা। ’ (বুখারি, হাদিস : ৫৯৭১)
মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে মায়ের খিদমত করার তাওফিক দান করুন। আমিন