Sunday, March 26, 2023
spot_img
Homeবিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমালিকানা দ্বন্দ্বে হুমকির মুখে শতাধিক ইন্টারনেট সেবা সার্ভিস

মালিকানা দ্বন্দ্বে হুমকির মুখে শতাধিক ইন্টারনেট সেবা সার্ভিস

মালিকানা দ্বন্দ্বে হুমকির মুখে পড়েছে দেশের জরুরি সব ইন্টারনেট সেবা। দ্বন্দ্বের জেরে সার্ভার রুম দখল ও পাল্টা দখলের চেষ্টা চলছে। ঘটেছে হামলার ঘটনাও। বাংলাদেশের বৃহত্তম ইন্টারনেটভিত্তিক তথ্য প্রযুক্তি ও টেলিযোগাযোগ সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান মেট্রোনেট বাংলাদেশ লিমিটেডে চলছে তুঘলকি কাণ্ড। প্রতিষ্ঠানটির মালিকানা দাবি করছেন দুই পক্ষ। একে অপরের বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তুলছেন। পাশাপাশি সন্ত্রাসী বাহিনী পাঠিয়ে একে অপরের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগও করছেন। এরইমধ্যে থানায় দায়ের করা হয়েছে একাধিক সাধারণ ডায়েরি। তথ্য প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা মানবজমিনকে বলেন, এ ধরনের দ্বন্দ্বে যদি সার্ভার রুমের কোনো ক্ষতি হয় তাহলে হুমকির মুখে পড়তে পারে সারা দেশের ইন্টারনেট সেবা। 

প্রতিষ্ঠানটির প্রধান সেবাগুলোর মধ্যে রয়েছে-ইন্টারনেট, সিকিউর ডাটা, আইপি টেলিফোন সার্ভিস, এসএমএস সার্ভিস, শর্টকোড সার্ভিস, টোল ফ্রি নম্বর সার্ভিস, আইপি- পিএবিএক্স, ডাটা সেন্টার, ই-মেল সার্ভিস, ইআরপি ইনফ্রাস্ট্রাকচার ম্যানেজ সার্ভিস ইত্যাদি। সংশ্লিষ্টরা জানান, মেট্রোনেট বাংলাদেশের অন্যতম ব্যাকহোল সার্ভিস প্রভাইডার যার সেবা ন্যূনতম সময়ের জন্য বন্ধ হলেও ব্যাহত হতে পারে বাংলাদেশের জরুরি সেবা ৯৯৯, ব্যাংকিং চেক ক্লিয়ারেন্স, ক্রেডিট কার্ড সেবা, ব্যাংক ব্রাঞ্চ এবং এটিএম সেবা, পস লেনদেন, অনলাইন ভ্যাট (এ-চালান), বিকাশ, নগদ, শিওর ক্যাশ, কিউ ক্যাশ, ডি-মানি, হিসাব, উপায়, অনলাইনে বিল পরিশোধ করতে পারবে না ওয়াসা, ডেসকো, বিপিডিবি, ডিপিডিসি, আরইবি, তিতাস, নেসকো, ডাব্লিউজেডপিডিসিএল, কেজিডিসিএল, বিজিডিসিএল, বন্ধ হয়ে যাবে বাস এবং ট্রেনের অনলাইন টিকিটিং সার্ভিস সিএনএস।

ক্ষতিগ্রস্ত হবে চট্টগ্রাম স্টক একচেঞ্জ সেবা, জাতীয় পরিচয়পত্র অনুসন্ধান সেবা, ই- পাসপোর্ট সেবা। ইডিএস মানির কারণে ব্যাহত হবে সকল ইনস্যুরেন্স কোম্পানির অনলাইন পেমেন্ট ও চেক ক্লিয়ারেন্স। ব্যাহত হতে পারে ১৩০টিরও অধিক সরকারি ও বেসরকারি কোম্পানির সর্ট কোড সার্ভিস, ব্যাংক এবং মোবাইল ব্যাংকিং এর সকল ওটিপি সার্ভিস। প্রতিষ্ঠানটির উল্লেখযোগ্য গ্রাহকদের মধ্যে রয়েছে ন্যাশনাল ইমার্জেন্সি সার্ভিস ৯৯৯, অ্যান্টি করাপশন কমিশন, ন্যাশনাল লিগ্যাল এইড সার্ভিস, ভূমি মন্ত্রণালয়, ন্যাশনাল হিউম্যান রাইট কমিশন, মাইক্রো ক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি, বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সকল ব্যাংক, এভার কেয়ার, পপুলার, আদ-দ্বীন, এএমজেড, ম্যারিস্টপস হসপিটাল থেকে শুরু করে আরও অনেক হাসপাতাল, অধিকাংশ ঔষধ কোম্পানি, কর্পোরেটর্স অফিস এবং গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি। রোববার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলন করে মেট্রোনেট বাংলাদেশ লিমিটেডে সেবা বন্ধের ষড়যন্ত্র চলছে বলে অভিযোগ করেন প্রতিষ্ঠানটির ৩ পরিচালক। এদিকে মালিকানা দ্বন্দ্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন দেশের তথ্য প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করা সংগঠন বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ। মানবজমিনকে তিনি বলেন, মেট্রোনেটের মালিকানা নিয়ে গণ্ডগোল। সংবাদ সম্মেলন পাল্টা উকিল নোটিশ। সত্যিই কি এসবের প্রয়োজন ছিল? ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবাদানকারীদের একটি সংগঠন রয়েছে (আইএসপিএপি)। এই সংগঠন তো অনেক বড় বড় প্রোগ্রাম করছে দেশ-বিদেশেও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করছে। তাছাড়া বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন লাইসেন্সি প্রতিষ্ঠানসমূহের শেয়ার মালিকানা সম্পর্কে অবগত। মালিকানা পরিবর্তন বা সংযোজন করার ক্ষেত্রে বিটিআরসিতে অবগত করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। আমার প্রশ্ন হচ্ছে- তাদের দ্বন্দ্ব সংঘাত না করে তারা কেন নিয়ন্ত্রণ কমিশন বা তাদের নিজস্ব অভিভাবক সংগঠন আইএসপিএবি’র কাছে গেলো না? সমাধানটা তো এখানেই হতে পারতো।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments