মার্কিন সিনেটের ম্যাজরিটি লিডার সিনেটর চাক শুমারকে এনডোর্স করেছে দক্ষিণ এশীয় প্রবাসীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগঠন অ্যালায়েন্স অব সাউথ এশিয়ান আমেরিকান লেবার-অ্যাসাল। নিউইয়র্কের ব্রুকলীনে কেনসিংটন ইভেন্ট হলে গত ১ এপ্রিল শুক্রবার বিকেলে অ্যাসাল এক নির্বাচনী সমাবেশে নিউইয়র্কে মার্কিন সিনেটে ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থী চাক শুমারকে পুন:নির্বাচনের জন্য এনডোর্সমেন্ট করে। আগামী ২৮ জুন ইউএস সিনেটের এ ডেমোক্র্যাটিক প্রাইমারি অনুষ্ঠিত হবে।
অনুষ্ঠানে সিনেটের সংখ্যাগরিষ্ঠ নেতা সিনেটর চাক শুমার তার বক্তব্যে বলেন, অ্যাসাল একটি তৃণমূল সংগঠন, এর নিবেদিতপ্রাণ সদস্যরা আজ এখানে আছেন। আমি অ্যাসালের এনডোর্সমেন্ট পেয়ে অত্যন্ত গর্বিত এবং আমি অ্যাসাল ব্যানারটি সিনেটের ফ্লোরে নিয়ে যাব। তিনি বলেন, আমি শ্রমিকদের ভালোবাসি, তারা মধ্যবিত্তের মেরুদন্ড। অ্যাসাল শ্রমিকদের সহ কমিউনিটির বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে কাজ করছে। আমরা এ লড়াইয়ে একসাথে আছি, আমি সবসময় আপনাদের সাথে থাকব।

অ্যাসালের ন্যাশনাল প্রেসিডেন্ট, কিংবদন্তী ইউনিয়ন লিডার ও নিউইয়র্ক সিটির রিডিস্ট্রিক্টিং কমিশনার মাফ মিসবাহ উদ্দিনের সভাপতিত্বে এবং অ্যাসালের ন্যাশনাল সেক্রেটারি করিম চৌধুরীর পরিচালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন কংগ্রেসওম্যান ইভেট ডি. ক্লার্ক, সিটি কাউন্সিল মেম্বার শাহানা হানিফ, রিটা জোসেফ এবং ফারাহ এন লুইস।
অ্যাসালের ন্যাশনাল প্রেসিডেন্ট মাফ মিসবাহ উদ্দিন অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার জন্য সিনেটর চাক শুমারকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, শ্রমিক, অভিবাসী এবং সংখ্যালঘুদের জন্য তিনি যে কাজ করেন তার জন্য তাকে ধন্যবাদ। নিউইয়র্ক থেকে সিনিয়র সিনিয়র সিনেটর হিসেবে পুনঃনির্বাচনের জন্য সিনেটের সংখ্যাগরিষ্ঠ নেতা চাক শুমারকে সমর্থন করে ইতিহাস তৈরি করেছে অ্যাসাল।

মাফ মিসবাহ উদ্দিন সিনেটর চাক শুমারের বিগত দিনের কর্মকান্ডের সংক্ষিপ্ত বিবরণ তুলে ধরে বলেন, ট্রাম্পের মুসলিম নিষেধাজ্ঞার পর তার লড়াই ছিল অসাধারণ। বাংলাদেশিসহ দক্ষিণ এশিয়ানদের কল্যাণেও তিনি অনেক কিছু করেছেন। তিনি আশা করে বলেন, অ্যাসালকে সাথে নিয়ে চাক শুমার ভবিষ্যতে বাংলাদেশি সহ দক্ষিণ এশীয় সংখ্যালঘুদের জন্য আরও অনেক কিছু করবেন। বিভিন্ন দাবি পূরণের প্রত্যাশা রেখে বিপুল করতালির মধ্যে সিনেটর চাক শুমারকে পুনরায় প্রার্থী হিসেবে অ্যাসালের সমর্থন ঘোষণা করেন মাফ মিসবাহ উদ্দিন।
অ্যাসালের ন্যাশনাল সেক্রেটারি করিম চৌধুরী বিভিন্ন জাতীয় সমস্যা সিনেটরের নজরে আনেন। যার মধ্যে রয়েছে ১১ মিলিয়ন লোকের অভিবাসন, ধীর ভিসা প্রক্রিয়ার সাথে পারিবারিক পুনর্মিলনে বিলম্ব, মহামারী চলাকালীন কমিউনিটির অন্যান্য অনেক সমস্যার মধ্যে অর্থনৈতিক বিপর্যয় উল্লেখযোগ্য।
সিনেটর চাক শুমার তার নির্বাচনী এলাকায় সবচেয়ে বেশী ভাষা ও বর্ণের মানুষের বাস উল্লেখ করে আরও বলেন, তাদের অধিকার সুরক্ষায় তিনি সবসময় সচেষ্ট। সেজন্যই বাংলাদেশিসহ দক্ষিণ এশিয়ানদের সাথে তার সম্পর্ক দিন দিন আরো ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠছে।
শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন অ্যাসালের ব্রুকলিন চ্যাপ্টারের সভাপতি ডা. মজিবুর রহমান মজুমদার, এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট নাজমুল হাসান মানিক, ভাইস প্রেসিডেন্ট মোঃ আকরাম, সেক্রেটারি খায়রুল হোসেন; পলিটিকেল একশান ডাইরেক্টর মোঃ আজিজুল হক, এক্সিকিউটিভ ডাইরেক্টর নাসির আহমেদ পিন্টু; অর্গানাইজিং ডাইরেক্টর মিয়ান কাদেরী (শপন), লাইফ মেম্বার মামনুনুল হক; কুইন্স চ্যাপ্টারের প্রেসিডেন্ট কাজী ফরিদ আহমেদ সিপিএ, ভাইস প্রেসিডেন্ট হারপ্রীত সিং তূর, ভাইস প্রেসিডেন্ট লীলা মারাত, সেক্রেটারি হারজিত মিনহাস, ব্রঙ্কস চ্যাপ্টারের সেক্রেটারি ইব্রাহিম বড় ভূইয়া, পলিটিকেল একশান ডাইরেক্টর মোঃ আলাউদ্দিন, ম্যানহাটান চ্যাপ্টারের প্রেসিডেন্ট একেএম আমরান, স্টেটেন আইল্যান্ডের ভাইস প্রেসিডেন্ট মুনজুর শেখ, নিউইয়র্ক স্টেট ক্যাপিটাল রিজিয়ন চ্যাপ্টারের সভাপতি ফোর্ডহ্যাম ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক মিজানুর রহমান এবং ন্যাশনাল করেসপন্ডিং সেক্রেটারি জেড ম্যাটালন।
অ্যাসাল উইমেনস কমিটির পক্ষ থেকে কুইন্স উইমেনস কমিটির চেয়ার আদান ইসলাম পারিবারিক সহিংসতা এবং সাংস্কৃতিক ও ভাষাগত সুবিধার অভাব নিয়ে কথা বলেন। তিনি বলেন, শুধুমাত্র সিনেটর এবং ফেডারেল সরকার এই বিষয়ে সাহায্য করতে পারে।
অনুষ্ঠানে অ্যাসালের সদস্যরা ছাড়াও বাংলাদেশী-আমেরিকান সহ দক্ষিণ এশিয় বিপুল সংখ্যক প্রবাসী উপস্থিত ছিলেন।