মোবাইলে গেম খেলছেন অথচ হাতের সাহায্যে অথবা মুখের কথায় কোনো কমান্ডই দিতে হচ্ছে না। শুধু চিন্তা করছেন গেমে এটা করতে হবে আর সঙ্গে সঙ্গে সেটা হয়ে যাচ্ছে। শুনতে অবাক লাগলেও বাস্তবে এমনটাই হতে চলেছে। সামনের দিনে মানুষ কোনো প্রকার নড়াচড়া ছাড়াই শুধু চিন্তাশক্তি ব্যবহার করেই যাতে সব কাজ চালাতে পারে তা নিশ্চিত করতে এ রকম প্রযুক্তি নিয়ে আসছে কজিটেড নামের একটি নিউরোটেক ফার্ম। ইলন মাস্কের ফার্ম নিউরালিংক একই প্রযুক্তি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসছে।
নিউরালিংক ডিভাইস মূলত ব্রেন কম্পিউটার ইন্টারফেস প্রযুক্তি। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে মানব মস্তিষ্ক সরাসরি যুক্ত হয় কম্পিউটারের সঙ্গে। তবে নিউরালিংকের পদ্ধতিতে মস্তিষ্কে একটি চিপ স্থাপন করার দরকার পড়ে। ইলনের ফার্মটি এখন পর্যন্ত শুধু পশুদের নিয়ে কাজ করলেও তাদের চিকিৎসা পদ্ধতি নিয়ে সমালোচনা হয়েছে। গত বছরের এপ্রিলে মাস্কের ব্রেন চিপ স্টার্টআপ ‘নিউরালিংক’ তিন মিনিটের একটি ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করে, যাতে দেখা যায় পেজার নামের একটি বানর শুধু মস্তিষ্কের চিন্তাকে কাজে লাগিয়ে কোনো কিছু হাত দিয়ে না ধরেই মাইন্ড পং নামের একটি ভিডিও গেম খেলছে এবং পুরো প্রক্রিয়াটির পেছনে আছে বানরটির মাথায় বসানো নিউরালিংক চিপ। তবে মাস্কের চিপের তুলনায় কজিটেড কিছুটা আলাদা। এদের চিপ মানব মস্তিকের মধ্যে স্থাপনের দরকার পড়ে না। ভিআর হ্যান্ডসেটের মতো একটি ডিভাইস মাথার ওপরের দিকে লাগালেই চলে। অবশ্য বেশ কিছু প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান এরই মধ্যে নিউরোটেক জাতীয় যন্ত্রের হার্ডওয়ার বানানোর কাজে বিনিয়োগ শুরু করে দিয়েছে। তবে কজিটেড শুধু যন্ত্রটির সিস্টেম উন্নয়নের কাজের মধ্যেই আপাতত সীমাবদ্ধ থাকতে চায়। তাদের পুরো প্রক্রিয়ার নেতৃত্ব দিচ্ছে এনএইচএসের পরামর্শক অ্যালান পনিয়াহ এবং ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডনের কম্পিউটারবিজ্ঞানী দিমিত্রিওস অ্যাডামোস।
কজিটেডের নতুন প্রযুক্তির বিকাশ এখনো উন্নয়নমূলক পর্যায়ে আছে। তবে কিছুদিন আগে প্যারালাইজড ও পক্ষাঘাতগ্রস্ত রোগীদের ওপর পরীক্ষা চালিয়ে সন্তোষ লক্ষ করা গেছে তাদের গবেষকদের। ইলন মাস্ক কিংবা কজিটেডের মতো আরো একটি প্রতিষ্ঠান পক্ষাঘাতগ্রস্ত রোগীদের যোগাযোগে সাহায্য করতে কাজ করে যাচ্ছে বহু বছর ধরেই। সিংক্রোন নামের প্রতিষ্ঠানটি গত বছরের জুলাইয়ে এফডিএর অনুমোদন পায়। পরীক্ষামূলকভাবে তাদের বানানো চিপ যুক্তরাষ্ট্রের একজন এবং অস্ট্রেলিয়ার চারজনের মস্তিষ্কে বসিয়ে কিছুটা সাফল্যও পেয়েছে।