এবার মস্কো সফরে যাচ্ছেন চীনের প্রেসিডেন্ট এবং কমিউনিস্ট পার্টির প্রধান শি জিনপিং। তবে ঠিক কবে নাগাদ তিনি মস্কো যাবেন তা এখনও নিশ্চিত নয়। এই পরিকল্পনার সঙ্গে সম্পর্কিত কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে এ খবর দিয়েছে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল। এতে বলা হয়েছে, আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই রাশিয়া যাচ্ছেন চীনা প্রেসিডেন্ট। এ সময় তিনি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
সূত্রগুলো জানিয়েছে, চীনা প্রেসিডেন্টের রাশিয়া সফরের অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে যুদ্ধ বন্ধ করে শান্তি আলোচনা শুরু করা। তিনি পুতিনকে ইউক্রেনের সঙ্গে আলোচনায় বসার পরামর্শ দেবেন। পাশাপাশি এই যুদ্ধের কারণে যাতে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহৃত না হয় তাও বুঝানোর চেষ্টা করবেন তিনি। এরইমধ্যে এই সফরের প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে। তবে কবে নাগাদ তিনি মস্কো যাবেন তা এখনও নিশ্চিত করা হয়নি। যদিও এপ্রিল ও মে মাসে তিনি মস্কো যেতে পারেন।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির বিরুদ্ধে রাশিয়ার জয় উৎযাপনের দিনেও মস্কো যেতে পারেন তিনি।
এদিকে বর্তমানে মস্কো সফরে আছেন চীনের শীর্ষ কূটনীতিক ওয়াং ই। তিনি বুধবার রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভের সঙ্গে বৈঠক করেন। এই সফরে ওয়াং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে আলোচনার উপরে জোর দেন। গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে চীনের রাজধানী বেইজিং-এ সর্বশেষ দেখা করেন পুতিন ও শি জিনপিং। এরপরই ইউক্রেনে অভিযান চালান তিনি। গত ডিসেম্বর মাসে তারা এক ভিডিও কলে কথা বলেন।
বেইজিং কখনও ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের নিন্দা জানায়নি। ব্যাপক চাপ থাকা সত্ত্বেও রাশিয়ার বিরুদ্ধে পশ্চিমাদের অনুসরণ করে কোনো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেনি চীন। তবে দেশটি প্রথম থেকেই উভয় পক্ষকে শান্তি আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়ে আসছে।
এদিকে হংকং ও সুদূর পশ্চিমাঞ্চলীয় জিনজিয়াং-এ মানবাধিকারের মতো বিষয়গুলি নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে চীনের সম্পর্কের অবনতি হচ্ছে। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের আকাশে চীনের একটি কথিত গুপ্তচর বেলুন প্রবেশ ইস্যুতে দুই দেশের সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে ঠেকে। ওই ইস্যুতে বেইজিং সফর বাতিল করেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
মঙ্গলবার মস্কোতে রাশিয়ার নিরাপত্তা পরিষদের সেক্রেটারি এবং পুতিনের ঘনিষ্ঠ আস্থাভাজন নিকোলাই পাত্রুশেভের সাথে বৈঠকে ওয়াং আবারও দুই দেশের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের উপর জোর দেন। তিনি বলেন, চীন ও রাশিয়ার মধ্যেকার সম্পর্ক চরিত্রগতভাবে পরিপক্ক। পরিবর্তিত আন্তর্জাতিক পরিস্থিতিতে যে কোনও পরীক্ষা সহ্য করতে সক্ষম এই সম্পর্ক। অপরদিকে পাত্রুশেভ ওয়াংকে বলেন, রাশিয়ার পররাষ্ট্র নীতিতে বেইজিং একটি শীর্ষ অগ্রাধিকার এবং দুই দেশকে অবশ্যই একসাথে থাকতে হবে। ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানিয়েছে, মস্কোতে থাকাকালীন ওয়াং প্রেসিডেন শি জিনপিং-এর সফর নিয়ে আলোচনা করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। ক্রেমলিন ইঙ্গিত দিয়েছে ওয়াং পুতিনের সঙ্গেও দেখা করতে পারে।