জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক কপ২৬ (সিওপি২৬) শীর্ষ সম্মেলনে বিশ্বনেতাদের সক্রিয় হওয়ার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। তিনি বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের সময় দ্রুত শেষ হয়ে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে ‘মধ্যরাতের বাকি এক মিনিট’ বলে তিনি প্রতীকী অর্থে হুঁশিয়ারি দেন। মধ্যরাত অর্থাৎ রাত ১২টা বাজার সঙ্গে সঙ্গে যেমন একটি দিনের সমাপ্তি ঘটে, শুরু হয় নতুন আরেকটি দিন- তিনি ঠিক সেই প্রসঙ্গটি উল্লেখ করেছেন। মধ্যরাতের পরেই একটি কঠিন দিনের ইঙ্গিত দিলেন তিনি এর মধ্য দিয়ে। গ্লাসগোতে জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক কপ২৬ শীর্ষ সম্মেলনে সমবেত নেতাদের উদ্দেশে তিনি বক্তব্য রাখছিলেন।
বিবিসির কাছে তিনি বলেছেন, বৈশ্বিক উষ্ণতাকে ধীর গতির করতে হবে। বিশ্বনেতাদের উচ্চাকাঙ্খা থেকে কর্মের দিকে মনোযোগ দিতে হবে। বরিস জনসন বলেন, এই সম্মেলন তার কাছে এক অতি গুরুত্বপূর্ণ (ক্রিটিক্যাল) মুহূর্ত।বলেন, এখনও সাম্যাবস্থার মধ্যে বিরাজ করছে উচ্চাকাঙ্খী প্রত্যাশার ফল। প্রথমবারের মতো তিনি নিশ্চিত করেছেন যে, কামব্রিয়াতে প্রস্তাবিত ও বহুল বিতর্কিত একটি কয়লাখনির কাজ এগিয়ে যাক, তিনি তা চান না। তার ভাষায়, আরো কয়লার পক্ষে নই আমি। কিন্তু বিষয়টি আমার সিদ্ধান্তের বিষয় নয়। এটি হলো পরিকল্পনা বিষয়ক কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের বিষয়। খনিটির প্রকল্প সামনে এগিয়ে যাওয়া বন্ধ না হওয়ায় সমালোচিত হচ্ছে সরকার। এর মধ্যে এটাই প্রথমবারের মতো এ বিষয়ে কঠিন বিবৃতি দিলেন বরিস জনসন। এর ফলে সমঝোতা হতে পারে। কারণ, জাতিসংঘের গুরুত্বপূর্ণ সম্মেলনের জন্য যুক্তরাজ্য সরকার যে কেন্দ্রীয় লক্ষ্যগুলি নির্ধারণ করেছে, তার মধ্যে একটি হলো কয়লা বন্ধ করতে দেশগুলোকে উদ্বুদ্ধ করা।
বিজ্ঞানীদের মধ্যে বৃটিশ সরকারের কর্মকা- নিয়ে উদ্বেগ আছে। বলা হচ্ছে, গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গমন সীমিত করতে যথেষ্ট করছে না দেশগুলো। এসব দেশ বৈশ্বিক গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধির জন্য দায়ী। এর মধ্যেই কপ২৬ শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজক বৃটেন। এর আগে ২০১৫ প্যারিসে জলবায়ু বিষয়ক সম্মেলনে বিশ্বের গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে ধরে রাখার আহ্বান জানানো হয়েছিল। বেশির ভাগই ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে এই তাপমাত্রা ধরে রাখার পক্ষে গুরুত্ব দিয়েছিলেন।
উন্নয়নশীল দেশগুলোকে আগামী চার বছর এ থেকে সৃষ্ট সমস্যা মোকাবিলার জন্য ১০০ কোটি পাউন্ড দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বরিস জনসন। তিনি আরো বলেছেন, ২০০৯ সালে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় সহায়তার জন্য বছরে দরিদ্র দেশগুলোকে ১০০০০ কোটি ডলার দেয়ার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল উন্নত বিশ্ব, তার পুরোটা দেবে না।