উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং-উন প্রচুর মদ্যপান করছেন এবং নিয়মিত কান্নাকাটি করছেন। জীবনের মধ্যগগনে এসে সংকটের মুখে এই স্বৈরাচারী শাসক। এই সপ্তাহের শুরুতে ৩৯ বছরে পা দিয়েছেন কিম। মাঝবয়সে এসে তিনি নাকি অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করছেন, জনসাধারণের চোখে তিনি দীর্ঘদিন ধরেই অনুপস্থিত। কেউ কেউ বলছেন গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যার সাথে লড়াই করছেন কিম। সিউল-ভিত্তিক উত্তর কোরিয়ার শিক্ষাবিদ ডঃ চোই জিনউক বলেছেন যে উত্তর কোরিয়ার নেতা তার ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য এবং নিরাপত্তা নিয়ে নতুন উদ্বেগের সম্মুখীন হচ্ছেন কারণ তার বয়স ৪০ এর কাছাকাছি। ডাঃ জিনউক ডেইলি স্টারের মাধ্যমে টেলিগ্রাফকে বলেছেন-“আমি শুনেছি তিনি অনেক মদ খেয়ে কাঁদছেন। তিনি খুব একাকী বোধ করছেন এবং চাপের মধ্যে আছেন।” প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অতিরিক্ত মদ্যপান এবং ধূমপানের কারণে কিম অত্যধিক স্থূল হয়ে গেছেন। উত্তর কোরিয়ার স্বৈরশাসককে তার ডাক্তার এবং স্ত্রী ব্যায়াম করতে বলেছেন, যদিও কিম তাতে কর্ণপাত করেননি। রিপোর্টে কিম তার স্বাস্থ্যের বিষয়ে এতটাই উদ্বিগ্ন যে তিনি তার নিজের টয়লেট নিয়ে বিদেশে ভ্রমণে যান, যাতে গুপ্তচররা তার স্বাস্থ্য সম্পর্কে কোনো ক্লু না খুঁজে পায়।
কিমের বাবা, কিম জং ইল, ২০১১ সালে ৬৯ বছর বয়সে হৃদযন্ত্র বিকল হয়ে মারা যান। কিমের উদ্বেগ তাঁর পরিণতিও বাবার মতো হতে পারে। কিম জং ইল ২০০৮ সালে স্ট্রোকের শিকার হন। তাঁর ডায়াবেটিস এবং হৃদরোগও ছিল। উত্তর কোরিয়ার বিশেষজ্ঞ আনা ফিফিল্ড টেলিগ্রাফকে বলেছেন যে কিম জং-উন একটি “অস্বাভাবিক শৈশব”জীবন কাটিয়েছেন, যা আর পাঁচটি শিশুদের থেকে অনেকটাই আলাদা ছিলো। আনা বলছেন-”খুব ছোটবেলা থেকেই তাঁর সাথে একজন রাজপুত্রের মতো আচরণ করা হতো এমনকি ব্রিটিশ রাজপরিবারেও যা দেখা যায় না। ”সিউলের কুকমিন ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক আন্দ্রেই ল্যাঙ্কভ বলেছেন: “তার লক্ষ্য খুবই সহজ – কয়েক দশক ধরে তিনি ক্ষমতায় থাকতে চান। পরে প্রাসাদে যেন তাঁর স্বাভাবিক মৃত্যু হয়। কিন্তু তিনি বুঝতে পারছেন খুব শীঘ্রই তাঁর জীবন শেষ হয়ে যাবে। তাই তিনি তার জীবন রক্ষা করতে চাইছেন, জীবনধারা পরিবর্তন নয়। ”২০২২ এর জানুয়ারী থেকে, কিম মার্কিন মূল ভূখন্ডের নাগালের মধ্যে ৯,৩০০ মাইলেরও বেশি রেঞ্জ সহ একটি পারমাণবিক ওয়ারহেড সহ ব্যালিস্টিক এবং ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের একটি বহর পরীক্ষা- করছেন। ক্রিসমাসের ঠিক আগে, দেশটি জাপান সাগরে একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছিল।
সূত্র : mirror.co.uk