Tuesday, March 28, 2023
spot_img
Homeনির্বাচিত কলামভোটার তালিকা হালনাগাদকরণ:বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে হবে

ভোটার তালিকা হালনাগাদকরণ:বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে হবে

ভোটার তালিকা হালনাগাদ করার বিষয়টি একটি নিরন্তর প্রক্রিয়া। এ তালিকা অধিকতর নির্ভুল ও ত্রুটিমুক্ত করাই এর উদ্দেশ্য। ভোটার তালিকা আইন ও বিধিমালা অনুযায়ী প্রতিবছরই ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা এবং বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করার কথা।

এ আইন ও বিধিমালার লঙ্ঘন কাম্য নয়। কারণ বছর বছর অনেকে নতুন ভোটার হওয়ার উপযুক্ত হন। তাদের নিবন্ধন হওয়াটা জরুরি। অনেক ভোটারের মৃত্যু হয়। তাদের নাম তালিকা থেকে বাদ দিতে হয়।

কিছুসংখ্যক দ্বৈত ও ভুয়া ভোটারও থাকে তালিকায়। বাংলাদেশের নাগরিক না হয়ে ভোটার তালিকাভুক্ত হওয়ার ঘটনাও থাকে। এগুলো সংশোধন করার জন্যই ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা হয়। এ কারণেই বাড়ি বাড়ি গিয়ে সরেজমিন পরিদর্শন ও তথ্য সংগ্রহ করে তালিকা চূড়ান্ত করতে হয়।

দুঃখজনক হলেও সত্য, গত দুই বছর ধরে বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ ছাড়াই ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম পরিচালনা করেছে কেএম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন বিগত নির্বাচন কমিশন। ফলে এ কাজে জড়িতরা পাননি পরিপূর্ণ তথ্য।

এতে বিপুলসংখ্যক মানুষের বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হলেও তারা ভোটার তালিকার বাইরে রয়ে গেছেন। এ কারণে তারা জাতীয় পরিচয়পত্রও পাননি। অথচ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্র থাকা জরুরি।

তাই অনেকে বাধ্য হয়ে নিজ উদ্যোগে অনলাইনে অথবা সরাসরি নির্বাচন অফিসগুলোয় গিয়ে ভোটার হওয়ার আবেদন করেছেন। ফলে বিপুলসংখ্যক অনলাইন আবেদন জমে গেছে। এসব আবেদনের নিষ্পত্তি না হওয়ায় চরম ভোগান্তির মধ্যে আছেন সাধারণ মানুষ। নবগঠিত নির্বাচন কমিশনের উচিত এদিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দেওয়া।

সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে একটি নির্ভুল ভোটার তালিকার বিকল্প নেই। নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতাও এর ওপর অনেকাংশে নির্ভরশীল। ভোটার তালিকা নির্ভুল ও হালনাগাদ করার এ গুরুদায়িত্ব নির্বাচন কমিশনকে যথাযথভাবে পালন করতে হবে।

ভোটার তালিকা কোনোভাবে বিতর্কিত বা প্রশ্নবিদ্ধ হোক, এটি কাম্য নয়। অতীতে এ তালিকা নানা কারণে বিতর্কিত হয়েছে। ওয়ান-ইলেভেনের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অনেক কাজের সমালোচনা হতে পারে। তবে তাদের আমলে একটি কাজ সম্পন্ন হয়েছিল খুব ভালোভাবে। সেটি হলো একটি নির্ভরযোগ্য ভোটার তালিকা এবং জাতীয় পরিচয়পত্র প্রণয়ন। এ কৃতিত্বের দাবিদার অবশ্যই তৎকালীন নির্বাচন কমিশন এবং খুব অল্প সময়ে কাজটি সুসম্পন্ন হওয়ার পেছনে যারা মুখ্য ভূমিকা পালন করেছিলেন তারা।

অতীতে এমন খবরও পত্রপত্রিকায় এসেছে যে, মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের একটি বড় অংশ এদেশের ভোটার হিসাবে নিবন্ধিত হয়েছে। ভোটার তালিকায় নাম থাকা উল্লেখযোগ্যসংখ্যক রোহিঙ্গাকে শনাক্তও করা হয়েছিল তখন। ভিন্ন দেশের নাগরিকরা আমাদের দেশে ভোটার হিসাবে নিবন্ধিত হয়ে এদেশের রাজনীতি ও সরকার গঠন প্রক্রিয়ায় ভূমিকা রাখবেন, এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। ভোটার তালিকা থেকে তাদের অপসারণ জরুরি। এ উদ্দেশ্যেও বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করে তালিকা হালনাগাদ করা উচিত।

RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments