নিউ মার্কেট সহিংসতা
রাজধানীর নিউ মার্কেট এলাকায় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের দফায় দফায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় বিএনপি নেতাকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়াও মামলায় বিএনপি’র আরও কয়েকজন স্থানীয় নেতাকর্মীর নাম রয়েছে। গত সোমবার রাতে শুরু হওয়া পরদিন মঙ্গলবার দিনভর সংঘর্ষের ঘটনায় নিউ মার্কেট থানায় পৃষ্ঠা ৮ কলাম ১
৩টি মামলা হয়েছে। এরমধ্যে দুটি মামলার বাদী পুলিশ এবং অপর মামলার বাদী নিহত নাহিদের চাচা।
৩টি মামলার মধ্যে একটিতে ২৪ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। পুলিশের একটি মামলায় নিউমার্কেট এলাকার ব্যবসায়ী ও কর্মচারী ২০০-৩০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। এছাড়াও আসামি করা হয়েছে ঢাকা কলেজের ছয় থেকে সাতশ’ জন অজ্ঞাতনামা শিক্ষার্থীকেও। সংঘর্ষের সময় বিস্ফোরক দ্রব্য ব্যবহার হওয়ায় বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে করা অন্য আরেকটি মামলায় অজ্ঞাতনামা ১৫০-২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।দুইটি মামলায় এজাহারে আসামিদের নাম উল্লেখ করা থাকলেও বাকি দুইটিতে আসামিদের নাম উল্লেখ নেই।
পুলিশ জানায়, পুলিশের কাজে বাধা, পুলিশকে আক্রমণ ও ভাঙচুরের অপরাধে দায়ের করা মামলায় ২৪ জনের নাম উল্লেখ করে আসামি করা হয়েছে। এদের অনেকেই বিএনপির পদধারী এবং সাবেক নেতা বলে জানা গেছে। তবে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, ঢাকা কলেজের যে তিন ছাত্র ওয়েলকাম ও ক্যাপিটাল ফাস্ট ফুডের দোকান কর্মচারীদের মধ্যে ঝগড়াঝাটিতে জড়িয়েছিলেন, তাদের ব্যাপারেও পুলিশ খোঁজখবর নিচ্ছে। প্রয়োজনে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। মামলায় যাদের আসামি করা হয়েছে তারা হলেন- নিউমার্কেট থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি এডভোকেট মকবুল হোসেন, ব্যবসায়ী ও নিউমার্কেট থানা যুবদলের আহ্বায়ক আমির হোসেন আলমগীর, ১৮ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মিজান, দোকান মালিক ও চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলার রায়শ্রীর ইউনিয়নের বিএনপি’র যুগ্ম-আহ্বায়ক জিয়া উদ্দিন টিপু, হাজী জাহাঙ্গীর হোসেন পাটোয়ারী, হাসান জাহাঙ্গীর মিঠু, হারুন হাওলাদার, শাহ আলম শন্টু, শহিদুল ইসলাম শহিদ, জাপানি ফারুক, মিজান বেপারী, আসিফ, রহমত, সুমন, জসিম, বিল্লাল, হারুন, তোহা, মনির, বাচ্চু, জুলহাস, মিঠু, মিন্টু ও বাবুল। নিউমার্কেট থানায় দায়ের হওয়া দুটি মামলার বাদী নিউমার্কেট থানার এসআই মেহেদী হাসান ও পরিদর্শক (তদন্ত) ইয়ামিন কবির।
ওয়েলকাম ও ক্যাপিটাল নামে যে দুটি ফাস্ট ফুড দোকানের কর্মচারীর মধ্যে বিরোধের জেরে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়েছিল সেই দোকান দুটির ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন থেকে বরাদ্দ নিয়েছিলেন মকবুল হোসেন। পরে দোকান দুটি তিনি ভাড়া দেন। মকবুল হোসেন জানিয়েছেন, গত চার মাসের মধ্যে তিনি নিউ মার্কেট এলাকায় যাননি। তাকে কেনো আসামি করা হয়েছে তা তিনি বুঝতে পারছেন না।
এ বিষয়ে পুলিশের নিউমার্কেট অঞ্চলের এডিসি শাহেন শাহ মাহমুদ জানান, ঘটনার পর পুলিশ আশপাশের তথ্য ও সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে এজাহারে আসামিদের নাম উল্লেখ করে বাদী হয়ে মামলা করেছে।
এ বিষয়ে ঢাকা নিউমার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আমিনুল ইসলাম ইসলাম জানান, মকবুল হোসেনের রাজনৈতিক পরিচয় আছে। কিন্তু, তিনি তো তার নামে বরাদ্দ হওয়া দোকান ভাড়া দিয়েছেন। সেই ভাড়া দেয়া দুই দোকানের কর্মচারীদের বিরোধে যদি তিনি আসামি হন, তাহলে তো সমস্যা।
উল্লেখ, সোমবার রাত ১২টায় নিউমার্কেট ও ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত দুজনের মুত্যু হয়েছে।