কুমিল্লার সীমান্তে বাংলাদেশীয় এক মুদি দোকানদার আনোয়ার হোসেন আনু মিয়া (৪৫)কে পিটিয়ে হত্যা করেছে ভারতীয় মাদক ব্যবসায়ীরা। শনিবার (৭ মার্চ) বিকালে সদর উপজেলা সীমান্তের নিশ্চিন্তপুর ৭৮নং পিলার সংলগ্ন হানকিজলার ইউএনসি নগর নামক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত আনোয়ার হোসেন ওই এলাকার মৃত ছেতু মিয়ার পুত্র। এ ঘটনায় বিজিবি-বিএসএফ ও পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। নিহতের লাশ ভারতের সোনামুড়া থানায় নিয়ে যাওয়া যায়। পরে দু’দেশের প্রশাসনিক সমঝোতার মাধ্যমে বাংলাদেশে হস্তান্তর করা হবে বলে জানা গেছে। এ ঘটনার পর থেকেই নিশ্চিন্তপুর সীমান্ত এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতিতে এড়াতে এলাকায় অতিরিক্ত বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।
নিহতের পরিবার ও বিজিবি সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, সীমান্তবর্তী হানকিরজলা এলাকার আনোয়ার হোসেন আনু মিয়া মুদি ও চায়ের দোকান পরিচালনা করতেন। ভারত ও বাংলাদেশে দৈত ভাবে বসবাসকারী ভারতীয় নাগরিক ইউএনসি নগর এলাকার মৃত হাকিম কবিরাজের ছেলে কুখ্যাত মাদক কারবারি কামরুলের কাছে দোকান বকেয়ার ৪৮০টাকা পাওনা ছিলো। শনিবার দুপুরে সীমান্তের ৭৮নং পিলারের কাছে দাড়িয়ে আনু মিয়াকে ৪টি দধির কাপ নিয়ে যেতে বলে। আনু মিয়া দধির কাপ নিয়ে গেলে কামরুল পরে টাকা দেবে বলে জানায়। এ সময় আনু মিয়া ও কামরুলের সাথে দোকান বাকীর টাকা নিয়ে বাকবিতন্ডা শুরু হয়। একপর্যায়ে কামরুল (২৮) ও একই এলাকার অহিদ মিয়ার ছেলে ভারতীয় নাগরিক ফারুক মিয়া (৩০) আনু মিয়াকে এলোপাতাড়ি পেটাতে থাকে। আনু মিয়ার মাথায় সজোরে আঘাত করলে ঘটনাস্থল (ভারত সীমান্তে) তার মৃত্যু হয়। ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় কামরুল ও ফারুক। খবর পেয়ে বিজিবি ও বিএসএফ সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
ইউএনসি নগর এলাকাটি ভারতের সোনামুড়া থানা এলাকায় হওয়ায় সোনামুড়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে সুরতহাল প্রতিবেদন শেষে নিহতের লাশ সোনামুড়া থানায় নিয়ে যায়। ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থল ছুটে যান পাঁচথুবী ইউপি চেয়ারম্যান ইকবাল হোসেন বাহালুল। তিনি বলেন, কামরুল ভারতীয় নাগরিক হলেও তার মা এবং বোন বাংলাদেশ সীমান্তে বসবাস করে বলে শুনেছি। হত্যাকারী কামরুল এলাকায় কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত। এর আগেও মাদক ব্যবসার দ্বন্দের জেরে স্থানীয় বাংলাদেশী এক যুবকের হাত কেটে নিয়ে গেছে বলে জেনেছি। সীমান্তের ওপারের মাদক কারবারিদের এ চক্রটি প্রায়ই এ এলাকার মানুষের ওপর নির্যাতন চালায় বলে স্থানীয়দের অনেকেই অভিযোগ করেছে। এসব মাদক কারবারিদের সাথে ভারতীয় বিএসএফ সদস্যদের শখ্যতা ও তাদের সরাসরি মদদে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। এ বিষয়ে ছত্রখিল ফাঁড়ি ইনচার্জ শাহিন কাদির বলেন- পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। লাশ ভারতে নিয়ে গেছে। দুদেশের সমঝোতার মাধ্যমে হস্তান্তর করা হবে।